আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চলে যায় বসন্তের দিন !!!



ভেবে দেখুন এমন একটা সময়ের কথা যখন বাংলাদেশের টাকা নামের আলাদা আর কোন মুদ্রা নেই । কারণ বাংলাদেশে এখন ইন্ডিয়ান রূপী দিয়েই সব কেনা টাকা সেরে ফেলা যায় । আপনার ছেলে কিংবা মেয়েকে বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি স্কুলে হিন্দিও পড়ানো হচ্ছে । কিংবা আপনার বাংলাদেশি পাসপোর্ট করার জন্য ক্লিয়ারেন্স নিতে হচ্ছে ইন্ডিয়ান হাইকমিশন থেকে । ভেবে দেখুন এমন একটা সময়ের কথা যখন বাংলাদেশ জাতিসংঘে কাকে ভোট দেবে, কি বলবে তা ঠিক করা হবে দিল্লি থেকে ।

পত্রিকার দৈনিক জরীপে প্রশ্ন আসবে --অমুক মন্ত্রি বলেছেন আযান দেয়ার জন্য আলাদা মাইকের ব্যবহারের প্রয়োজন নেই এতে শব্দ দুষণ হয় -- আপনি কি মনে করেন ? সেই সময় বাংলাদেশের ক্ষমতার কেন্দ্র প্রধানমন্ত্রী নয় (কারণ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন নেই) বরং ক্ষমতার কেন্দ্র এদেশে ভারতের হাইকমিশনার । তারা একেকজন ইংরেজের ভাইসরয়-এর মতো আসেন এবং আমাদের ভাল-মন্দ দেখাশুনা করেন । তখন আপনি কি করবেন ? কিছুই করবেন না, কারণ ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে, আপনার আর করারও কিছু নেই । তাই সময় থাকতে ভাল ভাবে নিজের চারপাশে তাকিয়ে দেখুন । বোঝার চেষ্টা করুন আসলে কি ঘটছে ।

কোন ভাবে যদি একটা প্রহসনের নির্বাচন করে একটা পুতুল সরকার বাংলাদেশে বসিয়ে দেয়া যায় তারপর ৫-৬ বছর ওপরের দৃশ্যগুলো আর কল্পনা হবে না । আপনি জিবীত অবস্থাতেই দেখে যেতে পারবেন । এই দেশে কোন বিরোধী দল বা ভিন্ন মতের কোন মানুষ থাকবে না । তারা যা বলবে বিনা প্রতিবাদে আপনাকে মেনে নিতে হবে । হাট, বাজার, মাঠে, ঘাটে ওৎ পেতে বসে থাকবে টিকটিকি ।

দেখবে কে বা কারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে । একদিন কাজ থেকে আসার পথে সেই মানুষটি আর বাসায় ফিরবে না । একটা সময় ছিল যখন পঙ্কজ সরনের মতো লোকেরা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন বিষয় নিয়ে কথা বলার সাহস পেত না । কিন্তু আজ তিনি শেখ রেহানা, জয়দের সাথেও বৈঠক করছেন । বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করলে সেই উত্তর দেবারও প্রয়োজন বোধ করছেন না ।

যদিও বাজারে গুঞ্জন ডালাপালা মেলেছে শেখ হাসিনার সরকার রক্ষায় প্রয়োজনে ভারতীয় বাহিনী এদেশে প্রবেশ করতে পারে এ ধরনের একটি ইঙ্গিতই নাকি দেয়া হয়েছে ওই বৈঠকে । পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায় ইতোমধ্যে কয়েকশত কোটি টাকায় এরশাদের সাথে নির্বাচনে অংশগ্রহণের রফা হয়েছে । বিএনএফ নামে একটি ভূইফোড় সংগঠনকে সরকারের নির্দেশনায় আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবদ্ধন দেয়া হয়েছে । এই দলটির মাধ্যমে বিরোধী দলের নেতাদের ভাগিয়ে আনার একটি মিশন দেয়া হয়েছে । প্রতিবেশি দেশটি বাংলাদেশের জনগণের চাওয়ার তোয়াক্কা না করে এর ভেতরই ঘোষণা দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় আনতে সম্ভব সব কিছুই করবে ।

টাকার লোভের সামনে আরও নেতা পাতি নেতা মাথা নত করে এই এক দলীয় নির্বাচনে অংশ নিলে অবাক হবার মতো কিছুই থাকবে না । আজকের বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে দেখুন -- এ কোন স্বদেশ আমাদের । আজকের সংকট আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কিংবা জামাতের নয়, বিষয়টি হলো স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে আমাদের টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন । একটি অর্থবহ নির্বাচনের মাধ্যমে যদি জনগণের প্রকৃত সিদ্ধান্তের প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি সরকার নির্বাচন করা যায় ( সেই দলটি আওয়ামী লীগ, বিএনপি যে কেউ হতে পারে) তবেই একমাত্র এই সংকট থেকে উত্তোরণ সম্ভব হবে । আজ যদি আপনি চুপ থাকেন আপনার চুপ থাকার জন্য আপনার পরবর্তী প্রজন্ম, তার পরবর্তী প্রজন্ম কোনদিন জানবে না একটি স্বাধীণ থেকে শ্বাস নেয়ার কি আনন্দ ।

আহা, আমাদের কি সেই দিনও দেখে যেতে হবে !!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।