আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘরে বসে মরতে চাইনি

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অনেক নারী শিল্পী অংশ নিয়েছেন। আমিও ছিলাম তাদের মধ্যে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে সংগ্রামী তেজোদ্দীপ্ত সংগীত পরিবেশন করে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস জোগানোর চেষ্টা করেছি। ২৬ মার্চ পাক বাহিনী দেশজুড়ে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে ঘরে বসে মরতে চাইনি। তাই সুযোগ বুঝে ১৬ এপ্রিল বাড়ি থেকে পালিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম।

কুমিল্লা হয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা হই। বাসে, ট্রেনে, গাড়িতে পাক সেনারা অনুসন্ধান চালাচ্ছে। ধরা পড়ার ভয়ে বোরকা পরে নিই। পথে দুবার পাক সেনাদের সম্মুখেও পড়েছিলাম। কিন্তু রক্ষা পেয়ে গেছি।

কলকাতায় পেঁৗছে বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার সঙ্গে কাজ শুরু করি। প্রথমে মাত্র ১৭ জন কাজ শুরু করলেও এর সদস্য বেড়ে শেষে দাঁড়িয়েছিল ১১৭ জনে। আমরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ভাঙা ট্রাকে করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে গান করতাম। দিনের পর দিন নিজেদের নাওয়া, খাওয়া, পোশাক-আশাক কিংবা ঘুমানোর কোনো ঠিক ছিল না। এমনকি একবার টানা ১০-১২ দিন শাক-ভাত খেয়ে কাটাতে হয়েছে।

'রূপান্তরের গান' শিরোনামে সাজানো হয়েছিল মুক্তি ও সংগ্রামী চেতনার গানগুলো। ভারত এবং বাংলাদেশের নানা প্রান্তে এসব গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করতাম মুক্তিযুদ্ধে কাজে লাগানোর জন্য। এসব টাকা দিয়ে ওষুধপত্র, কাপড়-কম্বল, হাঁড়ি-পাতিলসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনে মুক্তিযোদ্ধাদের শিবিরে এবং শরণার্থীদের মাঝে সরবরাহ করতাম। এভাবে কেটেছে যুদ্ধের দিনগুলো। তারপর এলো আমাদের বহু কাঙ্ক্ষিত বিজয়।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।