আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টেক্সটাইলের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী, যারা বিদেশে রিসার্চ বেজড মাস্টার্স এবং পিএইচডি করতে চাও (পর্ব ৩)

মরে যাবার জন্যে বেঁচে আছি, সুন্দর কিছু স্বপ্ন নিয়ে...

গত দুই পর্বে তিনটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সিজিপিএ, ভাষা, থিসিস সম্পর্কে বলেছি। তোমার সিজিপিএ ভাল, মানে আন্ডারগ্রেডের বিভিন্ন বিষয় তুমি ভাল করে পড়েছো, তুমি মনযোগী শিক্ষার্থী। উচ্চতর পড়াশুনার জন্যে প্রাথমিকভাবে সিজিপিএ দিয়েই একাডেমিক জ্ঞান জাহির করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তোমার আইএলটিএস বা টোফেল স্কোর দিয়ে তোমার ইংরেজি ভাষার পারদর্শিতা যাচাই করবে। আবার, অন্য ভাষায় পড়তে চাইলে, সেই ভাষায় দক্ষতা দেখাতে হবে।

যেমন, টেক্সটাইল মেজরের শিক্ষার্থীদের কাছে খুব পরিচিত নাম TU-Dresden, সেখানে তোমাকে জার্মান ভাষার পারদর্শিতা দেখাতে হবে। যারা ড্রেসডেনে যেতে আগ্রহী তাদের উচিত আগেভাগেই ঢাকার Goethe-Institut এ ল্যাংগুয়েজ কোর্স শুরু করা। যেকোন দেশের ভাষাই সেই দেশে সমাদৃত; মনে হয় শুধু বাংলাদেশ ছাড়া। তাইতো, আমরা (Murad Takla) স্টাইলে বাংলা লেখা ছাড়তে পারিনা। থিসিস হলো গবেষণা করার একটা প্রশিক্ষণ।

এই প্রশিক্ষণ ভাল হলে কপি-পেস্ট ছাড়াই নিজেই দিব্যি রিসার্চ প্রপোজাল লিখে ফেলা সম্ভব হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ প্রপোজাল লিখে পাঠাতে হয়। এখন, ধরে নিলাম, তিনটি বিষয়েই তোমার অর্জন ভাল। এবার ভর্তি ও স্কলারশীপের জন্যে আবেদনের পালা। তার আগে আরেকটা বিষয় বলে রাখি, তাহলো, দুই বা তিনজন শিক্ষককে গুরু মানো, যাদের একজন যেন তোমার থিসিস সুপারভাইজর হন।

মাঝে-মধ্যে দেখা করো, সালাম/কালাম দাও, লেখাপড়া এবং লেখাপড়ার বাইরের বিষয়ে পরামর্শ নাও। ব্যাপারটা আখেরে কাজে দিবে। রিকমেন্ডেশন লেটার নিতে হবে না?!!! এবার আসি, স্কলারশীপের খবরগুলো জানার এবং বোঝার উপায় নিয়ে। বিভিন্ন গ্রুপে নিবেদিতপ্রাণ মানুষগুলো প্রতিনিয়ত খবরগুলো জানিয়ে দিচ্ছে। যেমন, Scholarship for Bangladeshi Students এবং Higher Study Abroad।

তাঁদের প্রতি অন্তর থেকে ভালবাসা জানাই। ব্যাপারটা এমন, তুমি মাছ শিকারে বের হয়েছো, তোমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা জানালো কোথায় সহজে বেশি মাছ পাওয়া যাবে এবং কোথায় বড়শি পাওয়া যাবে ইত্যাদি। এখন, মাছ ধরে তোমার হাতে কেউ তুলে দিবে ভাবাটা বোকামী নয়কি? আগে টেক্সটাইলের শিক্ষার্থীদের কাছে স্কলারশীপ বলতে কমনওয়েলথ স্কলারশীপ (যুক্তরাজ্যে পড়ার জন্যে), ডাড স্কলারশীপ (জার্মানি) এবং মনবুশো (জাপান) পরিচিত ছিল। সম্প্রতি (সম্ভবত ২০০৪ এর পরে) টেক্সটাইলের শিক্ষার্থীরা এই গন্ডি থেকে বের হয়ে এসেছে। যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপানের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে, কানাডাতে, ইউরোপের অন্যান্য দেশে (সুইডেন, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স), চীন-কোরিয়াতে এবং অস্ট্রেলিয়াতে যাচ্ছে।

আমার পরামর্শ হলো, যদি তুমি খুব আউটস্টান্ডিং না হও, তোমাকে অমুক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেই হবে, এরকম গোঁ ধরে থেকোনা। প্রথম পর্বে বলেছিলাম, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘাঁটাঘাঁটি করার কথা। ওখানেই ভর্তি ও বৃত্তির তথ্য পাওয়া যাবে, এবং প্রফেসরের রিসার্চ সম্পর্কে জানা যাবে। বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্কলারশীপ অফার করে। খেয়াল করে দেখো, স্কলারশীপগুলো ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টডের জন্যে কিনা।

ক্রাইটেরিয়া এবং রিকয়েরমেন্টস বুঝে নাও। কোন কিছু না বুঝলে কোঅর্ডিনেটরকে ইমেইল করো। একটা ব্যাপার বলে রাখা দরকার, বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় টেক্সটাইল বা রিলেভেন্ট মেজরের জন্যে বিশেষ স্কলারশিপ অফার করে না। সুতরাং, উন্মুক্ত সুযোগের সদব্যাবহার করা উচিত। অনেক দেশেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের আগেই একজন হবু সুপারভাইজর ঠিক করে নিতে হয়।

বিদেশে পড়ার ভূত তোমার মাথায় যখন চেপেছে, তোমাকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল বা কাছাকাছি মেজরের প্রফেসরদের কাজ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা উচিত। কারো কাজ আর তোমার বাসনা মিলে গেলেই যোগাযোগ করো ইমেইল করে। তিনিও হয়তো তোমার মতো কারো জন্যে পথ চেয়ে বসে আছেন। ইমেইল করার সময় খেয়াল রাখো তুমি তাঁর বিরক্তি বাড়িয়ে দিলে কিনা। বাকি কথা আগামী পর্বে।

© বিলাস আহমেদ খাঁন


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।