আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এরশাদ ‘ছুটে গেলে’ জরুরি অবস্থা?

কাল সরকারের সারা দিন কেটেছে এরশাদকে নিয়ে। বর্তমান তফসিলে প্রধান বিরোধী দলের নির্বাচনে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। এখন এরশাদের জাতীয় পার্টিও হাতছাড়া হলে সরকার একা হয়ে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে সরকার ও সরকারি দলের ভেতরে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

সরকারের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র বলছে, সরকারের সামনে এখন দুটি পথ—এক, যেকোনো উপায়ে এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী সাঁকো পার হওয়া।

দুই, এটা ব্যর্থ হলে জরুরি অবস্থা জারি করা। বিষয়টি স্পষ্ট হবে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর সফর এবং ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় শেষ হলে যেকোনো একটি পথে এগোবে সরকার। তার আগে এরশাদকে নিয়ে টানাহেঁচড়া চলতেই থাকবে। তারানকো আজ শুক্রবার ঢাকায় আসছেন, ১০ ডিসেম্বর চলে যাবেন।

যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, জাতীয় পার্টির অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা এখনো নিশ্চিত নয়। এ জন্য ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে সরকার নির্বাচনের পথেই হাঁটছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলে সব মিলিয়ে ৭০টিরও বেশি আসনে ভোট গ্রহণের প্রয়োজনই হবে না। সে ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের মতো নির্বাচন গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে।

তবে এরশাদকে পেতে সরকার এখনো আশাবাদী, চেষ্টাও করছে সাধ্যমতো।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে এরশাদের এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত। তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন, মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে দেনদরবার করেছেন। এখন তাঁর এই ‘ইউটার্ন’ অনভিপ্রেত ও অন্তর্ঘাতমূলক।

জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনকালীন সরকারে রাখার বিষয়টি এককভাবে দেখভাল করছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই।

দলীয় ফোরামেও তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন না। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগের আগ্রহ দেখালেও প্রধানমন্ত্রী তাতে সায় দেননি। কাল প্রায় সারা দিনই তিনি এরশাদ ও তাঁর দলের মন্ত্রীদের সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন। মাঝে একবার তরিকত ফেডারেশনকে কিছু সময় দিয়েছেন।

রাজনৈতিক অঙ্গনে এরশাদ নিয়ে এত আলোচনা হলেও গত বুধবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ প্রসঙ্গে কোনো কথাই হয়নি।

কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে এরশাদ প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি। কমিটির সদস্যরাও এ বিষয়ে চুপ ছিলেন। কাল বৃহস্পতিবারও জাতীয় পার্টির পাঁচ মন্ত্রী-উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দলের কোনো নেতাকে রাখেননি।

মাঠপর্যায়ে আন্দোলনে অভিজ্ঞ সরকারদলীয় একাধিক নেতা মনে করছেন, সরকারের এই এলোমেলো অবস্থার মধ্যেও বিরোধী দল আন্দোলন জোরদার করতে পারছে না। রাজধানীতে একটি মিছিল-সমাবেশ করার মতো নেতা-কর্মী তাদের নেই।

তবে বিরোধী দলের টানা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সহিংস ঘটনাগুলো জনমনে যথেষ্ট ভয় ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যেও নির্বাচন করতে পারলে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মনে করছেন নেতারা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, নিয়মিত ধরপাকড় অব্যাহত রাখলেও বড় ধরনের অভিযান শুরু হবে সপ্তাহখানেক পর। নির্বাচন করতে চাইলেও নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আবার নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে দিলেও জরুরি অবস্থায় মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী।

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।