আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারত-আমেরিকার তাবেদার সরকার নয় জনগণের হাতে ক্ষমতা চাই, জনগণের সরকার ও সংবিধান চাই



বাংলাদেশ আজ এক দূর্যোগপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ তা যাঁরা রাজনীতির খোঁজ খবর রাখেন তাঁরা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় কোন দল গদীনসীন হবে তা এখন অনেকাংশে নির্ভর করছে ভারত, আমেরিকাসহ বৈদেশিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ষড়যন্ত্রের ওপর। এজন্য দফায় দফায় মিটিং হচ্ছে গুলশান-বারিধারার কূটনৈতিক পাড়ায়, ভারতের দিল্লিতে আর আমেরিকার ওয়াশিংটনে। আমেরিকার রাষ্ট্রদূত মজিনা আর ভারতের রাষ্ট্রদূত পংকজ শরণের রাজনৈতিক তৎপরতা সকল কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।

অবস্থা এমনই যে, রাষ্ট্রদূত মজিনা ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গিয়ে ভারতের সাউথ ব্লকের আমলাদের সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে আগামীতে কারা সরকার গঠন করবে এই নিয়ে। পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে যে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনাকে ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে। এ কথাও প্রকাশ পেয়েছে যে, ভারত বাংলাদেশে আগামীতেও এমন সরকার গদিনসীন দেখতে চায় যে সরকার হবে ভারতের অনুগত ও পদলেহী। যেন বাংলাদেশ ভারতের কোন অঙ্গরাজ্য! সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকাও আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে এমন সরকারকে গদিনসীন দেখতে চায় যে হবে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে আমেরিকার তল্পিবাহক। নির্বাচন নিয়ে ভারত-আমেরিকার মতবিরোধের খবরও বাংলাদেশ ও ভারতের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ ভারতের আশ্রয় নিয়েছে এবং বিএনপি-জামায়াত আমেরিকার আশ্রয় নিয়েছে। সংগ্রামী দেশবাসী, ভারত সরকার, ভারতের শাসকশ্রেণী, ভারতের একচেটিয়া বৃহৎ পুঁজি অর্থাৎ ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ সে দেশের শ্রমিক-কৃষক আদিবাসীসহ বিভিন্ন জাতির ওপর চরম শোষণ-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৪৭ সালে এ উপমহাদেশ হতে প্রত্যক্ষ বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর ভারতীয় পুঁজি ক্রমশঃ একচেটিয়া পুঁজিতে পরিণত হয়ে সাম্রাজ্যবাদী রূপ ধারণ করেছে। কাশ্মির, দক্ষিণ ভারত, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল, মিজোরাম প্রভৃতি রাজ্যের জনগণ ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের শোষণের কারাগার থেকে মুক্তি চান। ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশধারী এই ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়সহ নিম্নবর্ণের হিন্দু, দলিত, তফসিল জাতিসমূহের দূর্দশাগ্রস্ত অবস্থা চেপে রাখা যাচ্ছে না।

ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ নিজ দেশের জনগণের ওপর যেমন, তেমনি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের ওপর তার একচেটিয়া পুঁজির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় মরিয়া। ২০০৫ সালে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনডোলিজা রাইস ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বলেছিলেন, এখন থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখভাল করবে ভারত। এর বিরুদ্ধে সেদিন ‘স্বাধীন’ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের তৎকালীন বিএনপি নেতৃত্বাধীন খালেদা জিয়ার সরকার কোন প্রতিবাদ জানায়নি। আমেরিকার কাছ থেকে দায়িত্ব পালনের অধিকার পেয়ে ভারত বাংলাদেশে এতটাই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে যে তাতে খোদ আমেরিকারই অসুবিধা হচ্ছে এবং তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বন্ধুগণ, গত ৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকার যেমন লুটেরা সন্ত্রাসী দুর্নীতিবাজ শোষক-শাসক শ্রেণীর শোষণ-লুণ্ঠনে নেতৃত্ব দিয়েছে তেমনি লুণ্ঠন দুর্নীতি নিরাপদ করতে দেশব্যাপী চালিয়েছে বেপরোয়া রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাস।

এই দুর্নীতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হলো শেয়ার মার্কেটের দুর্নীতি, পদ্মাসেতু দুর্নীতি, বিদ্যুৎ খাতে রেন্টাল-কুইক রেন্টালের দুর্নীতি, অস্ত্র ক্রয় দুর্নীতি, ব্যাংক লুটপাট প্রভৃতি। গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপর মালিকদের চরম মজুরী শোষণ নিরাপদ করতে এ সরকার গঠন করেছে শিল্প পুলিশ-শিল্প গোয়েন্দা। গত ৫ বছরে বকেয়া বেতন-ওভার টাইমের টাকা আদায়ের দাবীতে সংগ্রামরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে ১০ জনের বেশি শ্রমিককে। বিরোধী রাজনৈতিক দল, আন্দোলনকারী শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিক, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জনগণ, তেল-গ্যাস রক্ষা আন্দোলন, সভা-সমাবেশ প্রভৃতির ওপর সরকারের পুলিশ চালিয়েছে বর্বরোচিত হামলা। ২০১৩ সালের ৫-৬ মে গভীর রাতে মতিঝিল শাপলা চত্বরে ক্লান্ত ঘুমন্ত নিরস্ত্র ৪০ হাজার নাগরিকের বিরুদ্ধে ১০ হাজারের অধিক পুলিশ-র‍্যাব-বিজিবি সদস্যের অভিযানে দেড় লক্ষাধিক রাউন্ড গোলাবারুদ ব্যবহার করা হয়েছে।

এই অভিযানে নিহত-আহতদের প্রকৃত সংখ্যা সরকার গোপন রেখেছে। বিরোধী রাজনীতিকদের গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা, আটক অবস্থায় নির্যাতন এ দেশে আজ স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এই লুটেরা সন্ত্রাসী দুর্নীতিবাজ সরকারকে রক্ষায় ভারত আজ মরিয়া হয়ে উঠেছে কেন? এর উত্তর পাওয়া যাবে এই সরকারের বিগত ৫ বছরের কর্মকান্ডের মধ্যে। ভারতের সাথে এ সরকার একাধিক গোপন চুক্তি করেছে যা ‘হাসিনা-মনমোহন চুক্তি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। জাতীয় সংসদে এই চুক্তি যাতে উত্থাপন করতে না হয় সেজন্য সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে পরিবর্তন এনেছে।

এই হাসিনা-মনমোহন চুক্তির বলে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর এবং আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে মালামাল নিয়ে যাওয়ার যে ব্যবস্থা হয়েছে তার মধ্যে এমন কোনো শর্ত নেই যে, ভারত সামরিক সরঞ্জাম বহন করবে না। ট্রানজিটের নামে সরকার ভারতকে কার্যতঃ করিডোর দিয়েছে। এই সরকার বিডিআর-কে বিলুপ্ত করেছে। ভারতের স্বার্থে সন্ত্রাস দমনের নামে আঞ্চলিক টাস্ক ফোর্স গঠন করে দেশে সাম্রাজ্যবাদী ভারতের সামরিক উপস্থিতির সুযোগ করে দিয়েছে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় মন্ত্রীরা ভারতের হয়ে সাফাই গেয়েছেন।

সাফাই গেয়েছেন আন্তর্জাতিক নদী বরাকের টিপাইমুখে ভারত কর্তৃক এক তরফা বাঁধ নির্মাণে। ভারত এখন বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবন ধ্বংস করে কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। সমুদ্রের দুটি তেল-গ্যাস ব্লক ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া হাসিনা সরকার সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার সাথে নানা গোপন সামরিক চুক্তি সম্পাদন করে দেশে আমেরিকান সৈন্যদের বিনা পাসপোর্ট, বিনা ভিসায় আগমনের ব্যবস্থা করেছে। চট্টগ্রামে মার্কিন নৌঘাঁটি নির্মাণ ও চট্টগ্রাম বন্দরে মার্কিন রণতরী ৭ম নৌবহর নোঙড়ে সম্মতি দিয়েছে।

যৌথ মহড়ার নামে বাংলাদেশে মার্কিন সৈন্যদের উপস্থিতি এই অঞ্চলের নিরাপত্তা বিপন্ন করে তুলেছে। শতভাগ রপ্তানির সুযোগ রেখে সমুদ্রের দুটি তেল-গ্যাস ব্লক মার্কিন কোম্পানি কনকো ফিলিপসের হাতে তুলে দিয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হাসিনা সরকারের এই সাম্রারাজ্যবাদের পদলেহী ভূমিকা বাংলাদেশে সাম্রাজ্যবাদী ভারত-আমেরিকার খোলাখুলি হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসতে সাম্রাজ্যবাদী ভারত-আমেরিকার পদলেহনে উন্মুখ। আগামীতে গদিনসীন হলে এরাও অতীতের মতো সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পদলেহন করবে।

হাসিনা সরকারের দেশবিরোধী, জনগণের সার্বভৌমত্ব বিনাশী নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে। এরা সকলেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। কারণ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সহায়তা ছাড়া লুটেরা সন্ত্রাসী দুর্নীতিবাজ শোষক-শাসক শ্রেণীর কোনো সরকারের পক্ষে নিজ দেশের শ্রমিক-কৃষক নিপীড়িত জাতি ও জনগণের ওপর শোষণ-নির্যাতন চালিয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা সম্ভব নয়। হাসিনা সরকার সভা-সমাবেশ মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেশে এক অঘোষিত জরুরী অবস্থা জারী রেখেছে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে এক পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।

এ কাজ তারা করেছে এজন্য যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেন তারা ক্ষমতায় পুনরায় ফিরে আসতে পারে। কেননা গত ৫ বছরে সরকারের দুর্নীতি, লুণ্ঠন, সন্ত্রাস, দুঃশাসন দেশবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে এ সরকারের পক্ষে পুনরায় ‘নিরপেক্ষ’ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরে আসা সম্ভব নয়। সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিধান বাতিল করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন ‘সর্বদলীয় সরকার’ গঠন করে তার অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করছে। ক্ষমতা কুক্ষিগত ও চিরস্থায়ী করতে হাসিনা সরকারের এই তৎপরতা দেশবাসীর কাছে আজ উন্মোচিত হয়ে পড়েছে। হাসিনা সরকার তাই দেশময় বিরোধী রাজনৈতিক দল, শাসক-শোষক শ্রেণী বিরোধী শ্রমিক-কৃষক, ছাত্র, পেশাজীবী, ক্ষুদ্র জাতিসমূহের আন্দোলন দমনে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাস-নির্যাতন চালাচ্ছে।

অন্যদিকে শোষক-শাসক শ্রেণীর অপর বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে হরতালের নামে দেশময় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। জনমনে আতঙ্ক ও চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। সংগ্রামী দেশবাসী, আগের দিনে আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবর রাখার দরকার হতো না। কিন্তু আজকের দিনে বিশ্বের কোথায় কী ঘটছে তা জানা থাকা দরকার। আমাদের দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি আজ দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে, বিভিন্ন দেশের জনগণের সাথে নানা সূত্রে সম্পর্কিত।

দেশে দেশে পুঁজিবাদী শোষণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে, সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনগণ লড়াই করছেন। আমাদের দেশেও এই লড়াই চলছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী প্রভৃতি হলো বড়লোক শোষক-শাসক শ্রেণীর রাজনৈতিক দল। গত ৪২ বছর ধরে এরাই জনগণকে শোষণ-শাসন করে এসেছে; আমেরিকা, ভারত, সৌদি আরব প্রভৃতি বৈদেশিক শক্তির সেবা করে এসেছে। এছাড়া রয়েছে ধর্মের নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তথাকথিত বামপন্থী-কমিউনিস্ট নামে দল, এরা বড়লোক শোষক-শাসকশ্রেণীর রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করে চলেছে।

এরা সকলেই বাংলাদেশের বিদ্যমান শোষণ নির্যাতন বৈষম্যের শাসন কাঠামোকে টিকিয়ে রাখতে তৎপর। এই কাঠামো আজ সংকটের মুখে, ভাঙনের মুখে। সংস্কারের মাধ্যমে এই অবস্থার মৌলিক কোন পরিবর্তন সম্ভব নয়; ১৬ কোটি শ্রমিক-কৃষকসহ নিপীড়িত জাতি ও জনগণের মুক্তি সম্ভব নয়। বন্ধুগণ, জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়ার, জনগণের সার্বভৌমত্ব খর্ব করার কোনো আইন ও সংবিধান জনগণ মানতে বাধ্য নন। সাভারের রানা প্লাজা ভবন ধস ও তাজরীনে আগুনে পুড়ে হাজার হাজার শ্রমিককে হত্যা শ্রমজীবী মানুষের ঘুম ভেঙ্গে দিয়েছে।

শ্রমিক-কৃষকের ঘুম ভাঙাকে শোষক-শাসকশ্রেণী ভয় পায়, নানা কালাকানুন করে তারা তাই জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে। কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করতে না দিয়ে শ্রমিকদের গোলাম বানিয়ে রাখতে চায়। বাজার দরের সাথে, জীবন ধারনের ব্যয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে এদেশে শ্রমিকদের মজুরী নির্ধারিত হয় না, নির্ধারিত হয় শোষক-শাসক মালিকশ্রেণীর সর্বোচ্চ মুনাফা বহাল রাখার স্বার্থে। এই শোষক-শাসকরা মনে করে শ্রমিকদের যে মজুরি তারা দেবে তাই-ই শ্রমিকদের মেনে নিতে হবে! তারা মনে করে উৎপাদনে ব্যবহৃত শ্রমশক্তির মূল্য নির্ধারণে শ্রমিকশ্রেণীর কোনো বক্তব্য থাকতে পারে না!! এই মজুরি দাসত্বের সমাজ আমরা চাই না। যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা এই শোষণ-নির্যাতনকে টিকিয়ে রেখেছে এবং জনগণের সার্বভৌমত্বকে কেড়ে নিয়েছে, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সেই পুঁজিবাদী শোষণ-শাসন ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করার সংগ্রাম করছে।

এই সংগ্রামে জয়ী হতে, জনগণের সার্বভৌমত্ব কেড়ে নেয়া লুটেরা সন্ত্রাসী দুর্নীতিবাজ শাসক-শোষক শ্রেণী ও সাম্রাজ্যবাদকে উচ্ছেদ করতে দরকার দেশজুড়ে জনগণের ঐক্য, সংগঠন ও সংগ্রাম। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল মনে করে প্রচলিত সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে কোনো ক্ষমতা আসবে না। জনগণের হাতে ক্ষমতা আনার পথ হচ্ছে জাতীয় মুক্তির ১৮ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে গণআন্দোলনের পথ, গণসংগ্রামের পথ। এই পথ ধরেই শ্রমিক-কৃষক নিপীড়িত জাতিসমূহের দেশজোড়া গণরাজনৈতিক অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে জনগণের সরকার, সংবিধান ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।