আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্পটা এমন

কি আর হবে অঙ্গে ধরে নকল রুপের বায়না.... ও রুপ দেখে চোখ ভোলে গো, মন ভোলানো যায় না

মন যেন আর তৃপ্ত হয় না। পাখির পালকের মতো নিলার নরম হাত দুটি ধরে আর আগের মতো সেই উষ্ণতা টের পাই না। কেমন যেন গুমোট তৈরি হয়ে গেছে ভিতরে। নিলা সেসব টের পায়। বলে- ‘দেখো, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।

আমাকে তুমি ক্ষমা করো। ’ কিন্তু সেই আকাঙ্ক্ষিত দিন আর আসে না। কিছুই যেন আর ঠিক হয় না। দিনের পর দিন একই বিছানায় দুটি নির্জীব কামনা-বাসনাহীন জীবন অসাড় হয়ে পড়ে থাকে। প্রিয়মিলনের উন্মাদনা বিবর্জিত বিছানা যেন জীবনের বিরুদ্ধে একটা নিষ্ঠুর কৌতুক।

আমার পক্ষে কি মেনে নেওয়া সম্ভব? আমি অনেক ভেবেছি। ভেবেছি এমনটা তো হতেই পারে। একজনের প্রতি ভালোবাসা সবসময় একই রকম অটুট থাকবে এমনতো কোন কথা নেই। মানুষ স্বভাবতই স্বপ্নচারী। সে তার মনে স্বপ্নপুরুষ/রমণীর যে ধারণা বহন করে তার সাথে বাস্তব মানুষটির যদি হঠাৎ অমিল দেখা দেয়।

আর তখন যদি অন্য কেউ এসে সেই জায়গা অধিকার করে বসে তবে তো কিছুই বলার থাকে না। ব্যাপারটাতো আমার দিক দিয়েও হতে পারতো। আমি তাই সেদিন নিলাকে কিছুই বলিনি। শুধু চোখের কোণে হাত রেখে অনুভব করেছিলাম আর্দ্রতা। ### -হ্যাঁ, শফিক বল... কি খবর তোর? - এইতো চলছে।

তোর সাথে কিছু কথা ছিলো। জরুরী। বিকেলে সময় হবে? - হ্যাঁ, তুই বিকেলে চলে আয় আমার অফিসে । ফ্রি থাকবো। - না, অফিসে হবে না।

তুই অফিস শেষ করে আমার বাসায় আয়। - আচ্ছা, ঠিক আছে। তাহলে দেখা হচ্ছে সন্ধ্যায়। আমি তখনো কিছু অনুমান করতে পারিনি শফিক আমাকে কি বলবে। শফিক আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম বন্ধু।

সবচেয়ে ভালো বন্ধু। শফিকের মতো একটা বন্ধু থাকলে আর দ্বিতীয় কোন বন্ধুর প্রয়োজন হয় না। আমার খামখেয়ালি নিস্পৃহ স্বভাবের বিপরীতে শফিক অনেকটাই ধীর-স্থির আর সব কাজও করে ভীষণ প্ল্যান-পরিকল্পনা করে। আমার জীবন অনেকটা দুরন্ত আর এলোমেলো প্রকারান্তরে, শফিক শান্ত এবং গোছালো। এতে সুবিধা আমারই ছিলো বেশি।

ক্লাসনোট থেকে শুরু করে সব কোর্সের জিস্টগুলো খুঁজে দেওয়ার এক অলিখিত চুক্তি ছিলো ওর সাথে আমার। আর তাই একাডেমিক পড়াশোনা খুব কম করেও বেশ ভালো রেজাল্ট নিয়ে বের হয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। শীঘ্র চাকরিও পেয়েছি। একটা বড়ো প্রাইভেট ফার্মে। মোটা স্যালারি পাচ্ছি।

নিলাকে নিয়ে বেশ স্বচ্ছল স্বাভাবিক আনন্দেই কাটছে দিনকাল। ### -আয় বোস। কফি চলবে? -হ্যাঁ, দে। আর বল দেখি কেন এতো জরুরী তলব? - হুম, বলছি। নিলার সাথে কি তোর কিছু হয়েছে? - কিছু মানে কি? - মানে এই ঝগড়া-টগড়া আর কি? -কই? নাহ... এমন কিছু না।

সব তো ঠিকই আছে। কিন্তু তারপরই শফিক যা বললো তার জন্য সত্যিই আমি প্রস্তুত ছিলাম না। অফিস থেকে ফেরার পথে শফিক দেখেছে নিলাকে অন্য একজনের সঙ্গে। এক রিকশায়। বেশ ঘনিষ্ঠভাবেই বসা।

যেমনটা বসে থাকলে চোখে পড়ে অনেকটা সেরকম। সেটা আজকে নয় এখান থেকে সপ্তাহ দুই আগে। কিন্তু আজকে আবারও দেখেছে একসঙ্গে। শাহবাগের মোড়ে। তাই জরুরী তলব।

জরুরী বৈঠক। আমি নিজেকে সামলে নিলাম যদিও মনের মধ্যে বজ্রপাতের শব্দ টের পাচ্ছি। চোখটাও হঠাৎ ভিজে উঠতে চাইছে। এখনো কিছুই নিশ্চিত নই তবুও অশুভ আশংকাগুলো উঁকি দিয়ে যাচ্ছে মনের মধ্যে। বললাম- ‘কে হতে পারে বলে তোর মনে হয়?’ ‘মনে হলো ওর অফিসেই একদিন দেখেছি ছেলেটাকে’ শফিক বললো ‘এখনই কিছু একটা ভেবে নিশ না, আগে ব্যাপারটা ঠিকভাবে জেনে নে।

দরকার হলে নিলাকে ফ্রাংকলি জিজ্ঞেস কর। ’ -হুম, সেটাই করবো। ### ড্রাইভারকে বলে দিয়েছি বাড়ি চলে যেতে। আমার কিছুক্ষণ দেরি হবে। শফিকের বাসা থেকে বের হয়ে দেখলাম বেশ রাত হয়েছে।

বিভূতিভূষণ লেনের ফুটপাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে আমার ক্লান্ত বিধ্বস্ত পা দুটি। কেমন অসহায় লাগছে নিজেকে। বাড়ি ফিরতে আর ইচ্ছে করছে না। কারণ নিলাকে আজ থেকে অচেনা মনে হবে। ওর শরীর ছেনে মন আর তৃপ্ত হবে না।

নিজেকে অপরাধী মনে হবে। সেইসাথে নিলাকেও মনে হবে নিপুণ অভিনেত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নিলা আমার সাথেই পড়তো। ক্লাসমেট। তবে কথা হতো না।

একদিন অডিটরিয়ামে ‘স্বপ্নকথন’ মঞ্চনাটকের একটা শো’তে আমরা পাশাপাশি বসা। -এই তুমি রঞ্জু না? -হ্যাঁ। - আমি নিলা। কেমন আছো? -ভালো। বেশ খানিকক্ষণ নীরবে কাটলো।

আসলে কথা বলার কিছু পাচ্ছিলাম না আমি। নিজেকে কেমন অপ্রস্তুত লাগছিলো। নিলাও বেশ চুপচাপ। তারপর হঠাৎ, -আচ্ছা, একটা কথা জিজ্ঞেস করি কিছু মনে করবে না তো? -না, বলো কি কথা। -তুমি কি মঞ্চনাটক করা ছেঁড়েই দিলে? -তুমি আমার নাটক দেখেছো নাকি? - হ্যাঁ, এইতো সেবার ‘অস্ফুট প্রণয়’ করলে, সেটা দেখেছি।

তারপর করলে ‘রাইফেল’। সেটাও দেখলাম। তুমি তো খুব চমৎকার অভিনয় করছিলে। হঠাৎ ছেড়ে দিলে কেন বলো তো? আমি সেদিন কিছু না বলে শুধু একটু মুচকি হেসেছিলাম। কেন যে ছেঁড়ে দিলাম তা কি আমি নিজেই জানি যে অন্যজনকে বলবো।

মাঝে মাঝেই এমন হয়। আমার সবকিছু ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করে। চলমান জীবনে অংশগ্রহণহীন দর্শক হয়ে থাকতেই যেন বেশি সুখ পাই আমি। আজ এই ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সেসব কথা মনে পড়ছে। আর মনে হচ্ছে আমি বোধহয় কোনকিছুই শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে জানি না কিংবা স্বীকার করা ভালো যে, পারি না।

অথবা উল্টোটাও হতে পারে- কোনকিছুই আমাকে শক্ত বাধনে বাঁধতে পারে না। তাই হয়তো মঞ্চনাটক ছেঁড়ে দিয়েছিলাম, ছেঁড়ে দিয়েছিলাম ডিবেট ক্লাব, ছেড়েছিলাম ক্রিকেট ব্যাডমিন্টন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষদিকে এসে বন্ধুদের আড্ডাও তো প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। তখন বন্ধু বলতে থাকলো শুধু শফিক। আর মনটা দিয়ে বসেছিলাম নিলাকে।

নিলাকে ছাড়তে পারিনি। সেই সেদিনের পর থেকে নিলার সাথে প্রায়ই আলাপ হতো। এক গভীর টান অনুভব করতাম ওর প্রতি। তবে ‘ভালোবাসি’ বলার মতো মনের জোর অবশ্যই আমার ছিলো না পাছে প্রত্যাখ্যান করে বসে নিলা। যদি বন্ধুত্বটাও নষ্ট হয়ে যায়।

মেয়েদের মনের গতিপ্রকৃতি সম্বন্ধে আমি নিতান্তই আনাড়ী। খুব উৎকণ্ঠায় যাচ্ছিল দিন। হঠাৎ একদিন নিলা নিজেই বলে বসলো আমাকে ভালোবাসে ও। আমি বিমূঢ় হয়ে কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সময় যেন থেমে গিয়েছিলো সেদিন।

বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে কিছুদিনের মধ্যেই চাকরি পেলাম। চাকরি পাওয়ার পর আর নিলাকে কাছে টানার পথে তেমন বাঁধাই রইলো না। তারপর আমাদের বিবাহিত জীবন এইতো দু’বছর হতে চললো। নিলাও একটা এনজিও’তে জয়েন করেছে মাস চারেক হলো। এর আগে একটা অ্যাডফার্মে ছিলো বছরখানেক।

সংসার জীবন ভালোই কাটছে আমাদের। সারাদিন দু’জনেই অফিসে ব্যস্ত থাকি। সন্ধ্যায় ফিরে এসে নিলার ঠোঁট ছুঁয়ে ভুলে যায় সারাদিনের সব ক্লান্তি-অবসাদ। নিলার কোলে মাথা রাখলে মনে হয় জীবনে আর বোধহয় কিছুই পাওয়ার নেই। জীবন কানায় কানায় পূর্ণ।

এখন মনে হচ্ছে নিলাকে বোধ হয় ছেঁড়েই দিতে হবে। মুক্ত করে দিতে হবে। নিলা কি আমার সাথে সুখী নয়? কই কোনদিন তো বলেনি ও? তাহলে ? ### হাঁটতে হাঁটতে সেদিন কখন যে বাড়ির সামনে চলে এসেছিলাম কে জানে। ঘরে ঢুকতেই দেখি নিলা। ড্রয়িং রুমে বসা।

উদ্বিগ্ন চোখ। আমাকে দেখে দৌঁড়ে এলো। -‘কি ব্যাপার? এতো রাত করলে যে? কোথায় ছিলে? ফোন বন্ধ করে রেখেছো কেন?’ আমার কাছে সবকিছুই এখন অভিনয় মনে হচ্ছে। নিলার এই রাত জেগে অপেক্ষায় থাকাটা একটা অভিনয়। এই যে উদ্বিগ্ন একজোড়া চোখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমার উত্তরের অপেক্ষায়_ তাও যেন একটা অভিনয়।

আর সবচেয়ে বড়ো অভিনয় আমার জন্য এখনো না খেয়ে বসে থাকা। -‘ফ্রেশ হয় খেতে এসো, আমি টেবিলে ভাত দিচ্ছি। ’ -‘তুমি খেয়ে নাও, আমি শফিকের বাসা থেকে খেয়েই এসেছি। ’ নিলা অবাক বিস্ময়ে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। এমন কখনও হয় না।

এই দু’বছরের মধ্যে এই কথা সে আজকেই প্রথম শুনলো। আমি যেখানেই যাই যতো দেরিই করি। রাতের খাবার আমরা একসাথে খাই। কতদিন এমন হয়েছে অফিস থেকে বাসায় ফিরতেই রাত ১২টা। অফিসের পিয়ন এসে রাতের রুমে খাবার দিয়ে গেলেও আমি খাইনি।

কারণ আমি জানি নিলাও অফিস থেকে ফিরে না খেয়ে আমার জন্যই বসে আছে। এই যান্ত্রিক সময়ে এমনই অর্থহীন অথচ ভীষণভাবে প্রয়োজনীয় এমন ভালোবাসার অভাব ছিলোনা আমাদের। কিন্তু আজ এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটতে যাচ্ছে। নিলার চোখ তাই ছলছল করছে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না, আমার কাছে সবকিছুই যেন অভিনয় মনে হচ্ছে।

নিলা কি অন্য কাউকে ভালোবাসতে শুরু করেছে? মনের মধ্যে শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, নিলা কি এতোদিন আমার সাথে অভিনয় করে গেছে? ভালো থাকার অভিনয়? সুখী হওয়ার অভিনয়? আচ্ছা, ওকে সরাসরি জিজ্ঞেস করলে কেমন হয়? জিজ্ঞেস করি যে ছেলেটার সাথে রিকশা করে ঘুরে বেড়ায় এখানে ওখানে সে কে হয় নিলার? ### নিলা ক’দিন আগেই বলছিলো চাকরিটা ছেড়ে দেবে। মানে এনজিও’র এই চাকরিটা যেটা চারমাস আগে নিয়েছে। এর আগে এবিসি অ্যাডফার্মে বছরখানেক কাজ করছে। কিন্তু শেষের দিকে কাজের চাপ বোধহয় বেড়ে গিয়েছিল। বাসায় ফিরতে প্রায়ই রাত হচ্ছিল ওর।

আমি অবশ্য এই নিয়ে ওকে কিছুই বলিনি। একদিন পাশাপাশি শুয়ে আছি। হঠাৎ বুকের ওপর মাথা রেখে নিলা বললো- - রঞ্জু শুনছো। চাকরিটা ছেড়ে দেব ভাবছি। - কেন? - আর ভালো লাগছে না।

- ছেড়ে দাও তাহলে। -কিন্তু কেন ভালো লাগছে না জানতে চাইলে না? -জানি তো। -কি জানো? -এই যে সন্ধ্যায় আমি অফিস থেকে ফিরে এসে দেখি শুন্য ঘর। তুমি নেই। আমার কথা ভেবেই হয়তো...আমার কিন্তু কোন সমস্যা হচ্ছে না।

আর তাছাড়া চাকরি ছেড়ে দিয়ে একা একা সারাদিন কিবা করবে? তুমি বোর হয়ে যাবে তখন। নিলা সেদিন আর কিছুই বলেনি। পরদিন রাতে বললো- ‘রঞ্জু, চাকরিটা ছেড়ে দিলাম আজ। ’ নিলা আমাকে এমনই ভালোবাসে। আমি ওর ভালোবাসায় কোনদিন তো কোন খাঁদ খুঁজে পাইনি।

অ্যাডফার্মের চাকরিটা ছাড়ার মাস দুয়েকের মধ্যেই এনজিও’র চাকরিটা পেয়েছে নিলা। দশটা-পাঁচটা অফিস। কাজের চাপও তেমন নেই। অফিস থেকে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় আমাকে ফোন দেয়। কখনো কখনো বাইরে খেয়ে একসাথে বাসায় ফিরি।

সবকিছু তো ঠিকঠাকই চলছিলো। এর মধ্যে হঠাৎ কোন আগন্তক এলো নিলার জীবনে? আর কেনই বা এই চাকরিটাও ছাড়তে চাইছে ও? ### ছেলেটার নাম রোহন রিজভী। নিলার কলিগ। শফিক খোঁজ নিয়ে আজই আমাকে জানালো । আর বললো এ ব্যাপারে সরাসরি নিলাকেই যেন আমি জিজ্ঞেস করি।

আমিও তাই ভাবছি। সন্দেহের অবসান হওয়া দরকার। সন্দেহ ভালোবাসাকে গ্রাস করে ফেলে। শূন্যতা তৈরি করে। নিলা যদি আমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে নিয়ে সুখী হতে চায় তবে আমি অবশ্যই সেখানে বাধ সাধবো না।

জোর করে আর যাই পাওয়া যাক ভালোবাসা যে পাওয়া যায় না সে জ্ঞানটা এতোদিনে আমার হয়ে গেছে। রাতে নিলাকে বলেই ফেললাম কথাটা। ‘রোহনের সাথে তোমার পরিচয় কতদিনের? তোমাদের মধ্যে সম্পর্ক কি? তুমি কি ওকে ভালোবাসো?’ নিলার চাঁদমুখে যেন অমাবস্যা নেমে এলো। খুব অপ্রস্তুত হয়ে গেছে। আমি আবার বললাম- ‘আমাকে সব খুলে বলতে পারো।

সেটাই ভালো হবে। ’ ফাঁদে আটকা পড়া হরিণের মতো নিলার চোখ ভীষণরকম করুণ দেখাচ্ছে । কোনো কথা বলছে না। বললাম-‘তুমি যদি ওকে ভালোবাসো তাহলে আমার কিছুই বলার নেই। আমি তোমাকে জোর করে বেঁধে রাখতে চাই না।

আমি তেমনটা নই। তুমি সবসময়ই মুক্ত। ’ ### সেদিন নিলা কোন কথাই বলেনি শুধু নীরবে কেঁদেছে। কান্না আমারও ভীষণ পাচ্ছিল কিন্তু আমি কাদিনি। পুরুষ মানুষের কাঁদলে চলে না।

আঘাত যতো গুরুতরই হোক না কেন, চোখে পানি আসতে নেই। আমি ভীষণ অবাক হলাম পরদিন নিলা এসে যখন বললো যে ও চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে। বললো আমি যেন ওকে ক্ষমা করি। বললো, আমাকে ভীষণ ভালোবাসে ও। আমি রোহনের কথা আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি কোনদিন।

পরে শফিক জানিয়েছিলো রোহন নিলাকে ভালোবাসতো। কলেজ জীবনে নিলার সাথে সম্পর্ক ছিলো রোহনের। কি জানি, তাই হয়তো পুরনো স্মৃতি এসে পীড়া দিচ্ছিলো নিলাকে। ক্ষণিকের জন্য হয়তো রোহনের সাথে আবার সেই কলেজের দিনগুলোতে ফিরে যেতে মন চাইছিলো ওর। কিন্তু যায়নি।

যেতে পারেনি। কারণ নিলা যে আমাকে ভালোবাসে। ঠিক যেমন আমিও আর কখনো রিতার কাছে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবি না। কারণ আমিও নিলাকে অসম্ভব ভালোবাসি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।