আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসঙ্গ-নীতিহীন রাজনীতি

জীবনকে উপভোগ করতে চাই জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে

রাজনীতির নিগুঢ় অর্থ বড়ই ব্যপক। রাজনীতি একটি দেশকে গতিময়তা দান করে। রাজনৈতিক কর্মকান্ড দেশের উন্ন্য়ন ও সমৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। যদি সে রাজনীতি হয় সুস্থ ও সুন্দর ধারার রাজনীতি। আমাদের দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেখে আমরা দিনদিন রাজনীতির প্রতি রীতিমত ভীতিশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছি।

এই যদি হয় রাজনীতি তাহলে মানুষ এই রাজনীতি নিশ্চয়ই কামনা করেন না। এদেশ স্বাধীন হওয়ার পিছনে ও ছিলো দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস। স্বাধীন রাষ্ট্র জম্ম নেওয়ার পর আমাদের সকলের চিন্তা টা নিবেদিত হওয়ার কথা এদেশের কল্যানে-রাজনীতিটাও হওয়া উচিত গণমুখী ও সাধারণ জনগণের কল্যানে। কিন্তু সেই চিন্তা চেতনা থেকে আমরা দূরে সরে গিয়ে আমরা রাজনীতি নামক এক অপ রাজনীতির কবলে পড়ে হতাশায় নিমজ্জ্তি হয়ে পড়ছি এবং অতল সমুদ্রের গহীনে হাবু ডুবু খাচ্ছি। বড় দুই দলের কাছে আজ সব সাধারণ মানুষ জিম্মি।

যে রাজনীতি জনগণের জান মালের নিরাপত্তা দেবে সেই রাজনীতির কাছে আজ সাধারণ জনগণের জানমালের কোন নিরাপত্তা নাই। সকল রাজনৈতিক দলের অভিলাষ হচ্ছে ক্ষমতার মসনদ। সব দল জনগণের দোহাই দেন কথায় কথায়। সরকার বলে , জনগণ বিরোধী দলের দাবী প্রত্যাখান করেছে আর বিরোধী দল বলে জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে তাদের কর্মসূচীকে সফল করেছে। কিন্তু জনগণ আদৌ দিচ্ছে কি দিচ্ছে না এই বিচারের মাফকাঠিতো কারো হাতে নেই।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যে জনগণের দোহাই দেয় হচ্ছে সব সময় সেই জনগণই আগুনে পুড়ে মরছে, সাধারণ জনগণের গাড়ি ভাংচুর হচ্ছে, সাধারণ জনগণই নাজেহাল হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই সাধারণরই নির্যাতিত হন- আবার সকলে তাদের দোহাই দিয়ে ক্ষমতার মসনদ পেতে চান। আর ক্ষমতার পিঠে চড়া ’অসাধারণ’রা তো চিরকালই ”অসাধারণ’। তাদের কে কখনও সাধারণের পর্যায়ে নামতে হয় না । বাসে, ,সি এন জি তে চড়তে হয় না কিংবা রিক্সাতে চড়তে হয় না।

সুতারাং পিকেটারদের ধাওয়া খাওয়ার ্ও ভয় নেই , আগুনে পুড়ে মরার ও ভয় নেই। তাদের জন্যতো আবার আকাশ পথ খোলা অছে । সড়ক পথ ,নৌপথ ,রেল পথ অবরোধ হয় কিন্তু আকাশ পথতো অবরোধ হয় না। কারণ ঐ পথ দিয়ে প্রতিদিন সাধারণরা চলাফেরা করেন না। ওগুলো তো অসাধারণের পথ।

’অসাধারণ’ বলেই কথা। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা একবার ক্ষমতার স্বাদ পেরেই ,অসাধারন ’হয়ে উঠেন। আমরা সাধারণরা চিরকালই এই অপ রাজনীতির যাঁতাকলে পিষ্ট হতে থাকবো। এই সাধারণের ভোটেই তারা আবার ক্ষমতায় যান। গিয়ে আবার যে যায় লংকায় সেই আবার রাবণ ।

আমরা সাধারণের আবার বারোটা। রাজনীতির এ হিংসা হানা হানি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। রাজনীতিতে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়াটা অত্যন্ত জরুরী। বিশ্বের মডেল গণতন্ত্রের দেশ গুলোর দিকে তাকালেই কিছুই কি আমাদের চোখে পড়ে না ? রাজনীতি সেই দেশ গুলোকে কোথায় নিয়ে গেছে , আর আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ? সমাজে পরিবারে বড়দের দায়িত্ব যেমন বেশী তেমনি একটি রাস্ট্রেও বড় দলগুলোর দায়িত্ব ও বেশী। হিংসার রাজনীতি থেকে আমার বেরিয়ে আসতে না পারলে আমাদের সুন্দর আগামী সুদূর পরাহত।

নতুন প্রজম্মদের আমাদের রাজনীতিকরা কি দেখাচ্ছেন ? শিক্ষকতা ও রাজনীতিতে আসতে হয় নাকি সবচেয়ে মেধাবীদের । কিন্তু আমাদের দেশে দেখুন রাজনীতিতে ও শিক্ষকতার প্রতি মেধাবীদের এক ধরণের চরম অনীহা । মেধাশূণ্য হয়ে পড়ছে এসব ক্ষেত্র। সব ক্ষেত্রে যেন দুর্বৃত্তায়নের প্রতিযোগিতা। আমরা ড:মনমোহন সিং কিংবা ড: মহাথির মোহাম্ম্দ এর মত প্রাজ্ঞ পন্ডিত ব্যাক্তিদের রাজনীতিতে দেখি না ।

ইতিহাসের কিংবদন্তী সদ্য প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলার জীবন দর্শনও আমাদের কি কোন শিক্ষা দেয় না ? দীর্ঘ সাতাশ বছর জেলে থেকে তিনি মাত্র পাচঁবছর তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু তাঁর আকাশ ছোয়াঁ জনপ্রিয়তায় একটু ও ভাটা পড়ে নি। রাজনীতিতে মতাদর্শে পার্থক্য থাকবে,প্রতিযোগিতা থাকেবে। কিন্তু সে প্রতিযোগিতা হবে সত্য ও সুন্দরের পক্ষে গঠনমূলক। আমাদের রাজনীতিকদের কাছে আমরা সাধারণেরা এ প্রত্যাশাটুকু করা কি খুব অন্যায় হবে?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।