আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এসে গেছে ইলেক্ট্রনিক্স ফ্যাশন!



লেডি গাগা বা কেটি পেরি-এখন শুধু তারকাদের পোশাকেই ইলেকট্রনিক্সের তারা ঝিলমিল ছোঁয়া রইবে এমন নয়। নকশাবিদরা সাধারণের জন্যও ইলেকট্রনিক পোশাক তৈরির নকশা করছেন। ইতিমধ্যে বিশ্ববাজারে বেশ কিছু পোশাক পাওয়া যায় যেগুলোর সঙ্গে রয়েছে সেনসর লাগানো। ব্যাটারি সংযুক্ত। এমনকি মাইকোপ্রসেসরও লাগানো থাকে কোনো কোনো পোশাকে।

মুঠোফোন চার্জ করার মতো বিদ্যুত্ উত্পাদন করা, শরীরে জড়ানো পোশাকটাকেই ভিডিও দেখার পর্দা বানানো-ইত্যাদি নানান দরকারি কাজেই হাল ফ্যাশনে যুক্ত হয়েছে ইলেকট্রনিক্স পোশাক-পরিচ্ছদ। লেড টপস জার্মানির বেসরকারি কোম্পানি ফ্রাঙ্কেন অ্যান্ড ব্রানস। এই কোম্পানির ফ্যাশন ব্র্যান্ড মুন বার্লিন। এই ব্র্যান্ডের লেড টপস এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যে ব্যাটারি লাগানো রয়েছে এই টপসের সঙ্গে তা সাড়ে ৮ ঘন্টা চার্জ থাকে।

যখন কোনো মেয়ে টপসটা পড়ে হাঁটাহাঁটি করবে, তখন লেড বাল্ব জলে উঠবে। দিনে বেলায় মনে হবে তারা ঝিলমিল আকাশ! চাইলে অন-অব সুইচ ব্যবহার করে ইচ্ছে মতো বাল্বগুলো জ্বালানো বা নেভানো যায়। ইয়ার ফোন মুঠোফোনে কারো সঙ্গে আলাপ কালে কিংবা গান শুনতে যে ইয়ার ফোন ব্যবহার করা হয় তা তো ইলেকট্রনিক্সেরই যন্ত্র। নতুন সংযোজনা হচ্ছে, চাইলে গান কিংবা কথা রেকর্ড করে রাখার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে এই যন্ত্রের। পায়ে পায়ে বিদ্যুত্ বিজ্ঞানী থেলস।

বলা যায়, তিনি বিজ্ঞানের মনু। বিদ্যুতের আবিষ্কারক প্রাচীন গ্রিসের এই পণ্ডিত। তবে বিদ্যুেক আধুনিক চেহারায় নতুন করে আবিষ্কার করেন মাইকেল ফ্যারাডে। তত্কালীন রানী এলিজাবেথ এই বিজ্ঞানীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘বিদ্যুতের কী দরকার?’ জবাবে ফ্যারাডে বললেন, ‘নতুন যে শিশুটি পৃথিবীতে জন্ম নিল তারইবা কী দরকার!’ সরকারের এক কর্মকর্তা ব্যঙ্গ করে জানতে চাইলেন, ‘তা এতে আমাদের কী লাভ?’ ফ্যারাডে বলেছিলেন, ‘কেন, ট্যাক্স বসাতে পারবেন!’ এখন আমরা জানি, বিদ্যুতের কী দরকার আর কী লাভ। এখন তো যত চাহিদা, সে তুলনায় ভাণ্ডারে বিদ্যুতের প্রচুর ঘাটতি।

আর তাই সবার চোখ বিদ্যুত্ বিজ্ঞানের দিকে, বিদ্যুত্ আবিষ্কারের নতুন নতুন পথের পানে। মিলেছে সন্ধানও। বিমানবন্দরে বিমান উড্ডয়ন-অবতরণের সময় বিকট শব্দ আর ফুটবল মাঠে দর্শকদের সমস্বরে চিত্কার থেকে বিদ্যুত্ তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে। আরও বিস্ময়কর, মানুষের শরীর থেকেই বিদ্যুত্ তৈরির বিভিন্ন উপায়ও সন্ধান করেছেন বিজ্ঞানীরা। আমরা যা-ই করি, তা বিদ্যুত্ উত্পন্ন করে।

নিশ্বাসে নিদেনপক্ষে ১ ওয়াট করে, হাঁটার সময় প্রতিপদে ৭০ ওয়াট! এজন্য দরকার এক ধরনের ক্রিস্টাল। রবারে মোড়ানো এই ক্রিস্টাল শরীরে সংযুক্ত করতে হবে। যখনই ক্রিস্টালটি বাঁকবে তখনই তা বিশেষ এক প্রক্রিয়ায় বিদ্যুত্ উত্পাদন করবে। বিশেষ এই প্রক্রিয়ার আবিষ্কারক প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল ম্যাক আলপাইন। এই পদ্ধতিতে পায়ের জুতার সঙ্গে ডিভাইসটি সংযুক্ত করে দিলে হাঁটার সময় তৈরি হবে বিদ্যুত্।

১২ ঘণ্টা হাঁটলে যন্ত্রে যে বিদ্যুত্ সঞ্চিত হবে তা দিয়ে এক ঘণ্টার জন্য মোবাইল ফোন চার্জ করা সম্ভব। ইলেকট্রনিক্স চোখ চোখের ক্ষমতা কমে গেলে চিকিত্সক পরামর্শ দেন চোখে লেন্স মানে চশমা পড়তে। এছাড়া রয়েছে রোদ চশমা। ক্রিকেটাররা খেলার সময় নানা রঙের রোদ চশমা পরে থাকেন। এতে করে ফিল্ডিং করার সময় প্রখর আলোয় চোখ ঝলসে বা তিরতিরিয়ে যায় না।

তবে শুধু দরকারেই নয়, ফ্যাশন হিসেবেও চশমা ব্যবহূত হয়। এখন অবশ্য ফ্রেম ছাড়াই চোখের সঙ্গে লেন্স এঁটে দেওয়ার ফ্যাশন শুরু হয়েছে। এসব লেন্স হয় বহুরঙা। বিদ্যুত্ উত্পন্নকারী টি-শার্ট ফ্যাশন ও আভিজাত্যের বাহক পোশাকের রয়েছে বিভিন্ন প্রকারভেদ। কিন্তু প্রযুক্তির এ যুগে সাধারণ পোশাকে আর পোষাচ্ছে না।

আর তাই উদ্ভাবকরা তৈরি করেছেন এমন এক পোশাক, যা কিনা আর দশটা সাধারণ পোশাকের মতো নয়। ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি নিরোধক এ পোশাকে থাকছে ক্ষুদ্রতর প্রযুক্তি সমৃদ্ধ জৈব রাসায়নিক গুণাগুণ ও উত্তম তাপ পরিবহনের ব্যবস্থা। এর ফলে পোশাকটি মানবদেহকে শীতল রাখবে ও অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করবে। পাশাপাশি পোশাকটি নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখবে এমনকি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুত্ তৈরি করবে। এই বিদ্যুত্ দিয়ে ছোটখাট বৈদ্যুতিক প্রয়োজন মেটানো যাবে।

যারা ফ্যাশন সচেতন তাদের ভ্রূ কুঁচকানোর কিছুই নেই; কারণ পোশাকটি তৈরি হয়েছে হাল ফ্যাশনের সঙ্গে মিল রেখে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণ হচ্ছে, সাদা রঙের এরকম পোশাকের পেছনের দিকটা ব্যবহার করা যাবে ভিডিও দেখার পর্দা হিসেবে! আরো মজার মজার খবর পড়তে এখানে ভিজিট করুন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।