জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের পর জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা গতকাল রাত থেকে আজ বিকাল পর্যন্ত বগুড়া সওজ অফিসে, আকিজ গ্রুপে অগ্নিসংযোগ, মহাসড়ক অবরোধ, ককটেল বিস্ফোরণ, সরকারি বেসরকারি অফিসে ককটেল হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
জানা যায়, আজ বেলা ১২টায় বগুড়ায় শহরের চারমাথায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ত্বত্ত্বাবধায়ক প্রকেৌশলীর কার্যালয়ে ককটেল হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। অগ্নিসংযোগে সওজের সরঞ্জাম বিভাগের ৪টি গাড়ী ও সড়ক বিভাগের দুটি গাড়ী ভস্মিভুত হয়। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছিলে তাদের লড়্গ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে। ধাওয়া পাল্টার এক পর্যায়ে র্যাব ও বিজিবি পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেছে।
বগুড়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ত্বত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন প্রামানিক জানান, সড়ক বিভাগের একটি প্যাজারো জীপ, একটি ট্রাক ও অফিস কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল হামলা করা হয়েছে। একসময় হামলাকারিরা সরঞ্জাম বিভাগের আরো ৩টি গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে। ধারানা করা হচ্ছে এতে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বেলা ১২টার সময় বগুড়া শহরের তিনমাথা তেলিপুকুরের কাছে আকিজ গ্রুপের ডিপো অফিসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
দুর্বৃত্তদের আগুনে কোম্পানীর ৯টি বড় কার্ভাড ভ্যান, ৪টি প্রাইভেট কার, ৯টি মটর সাইকেল, ১৭টি বেবী টেক্সী, ৩২টি রিক্সা ভ্যান, অফিসের আসবাব পত্র, গোডাউনের মালপত্র পুড়ে ভস্মিভুত হয়েছে।
আকিজ গ্রুপের ডিপো ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম জানান, দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে তাদের প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
গতকাল রাতে বগুড়া ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের শেরপুর উপজেলার মহিপুর থেকে মোকামতলা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে, রেল লাইনে গাছ ফেলে, স্লিপার তুলে, বিদ্যুতের পোল, মহাসড়ক কেটে ফেলে অবরোধ করে রাখে। থেমে থেমে বিস্ফোরণ করা হয়েছে ককটেলের। রাতে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের মহাস্থানের মাঝিপাড়া নামক স্থানে প্রায় ৫০ ফুট রাসত্মা কেটে তুলে ফেলে দেয়।
বগুড়া রেলওয়ে ষ্টেশনের পূর্বে সাবগ্রামের কাছে রেল লাইনের প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গাছ কেটে ফেলে রেখে অবরোধ করা হয়েছে। সকালে বগুড়ার কাহালু উপজেলার কানড়া গ্রামের পশ্চিম পাশের রেল সড়কের বেশ কিছু স্লিপার তুলে ফেলে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও রেল বিভাগের কর্মীরা সেখানে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এছাড়া বগুড়ার শাজাহানপুরে আজ দুপুর ২টায় ২টি মাল বোঝাই ট্রাকে আগুন দেয় অবরোধ সৃষ্টিকারিরা। এসময় কমপক্ষে ৫/৬টি গাড়ীর গস্নাস ভাংচুর করে।
আজ বিকেল ৪টায় মোকামতলার পাকুরতলা নামকস্থান মহাসড়কে ফেলে রাখা গাছের গুঁড়ি সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে গেলে পুলিশের সাথে শিবির কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষ শুরু হয়।
জামায়াত-শিবির কর্মীরা ১টি কোচ, ১টি পিক-আপ, ১টি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও ভাংচুর করেছে আরো ১০টি যানবাহন। এসময় পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বগুড়া নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাসত্মার পাশের বড় বড় গাছ কেটে ফেলে যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
এরপর ওই রাতে দূর্বৃত্তরা দামগাড়া এলাকায় একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয়। মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
এদিকে আজ বাদজুম্মা বগুড়া শহরের করনেশন স্কুল মাঠে জেলা জামায়াত, ছাত্রশিবিরসহ ১৮দলীয় জোট জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার গায়েবানা জানাযা করে।
বগুড়ার সহকারি পুলিশ সুপার গাজীউর রহমান জানান, মহাসড়কের কিছু কিছু এলাকার বেরিকেড সরে নেওয়া হয়েছে। সড়ক মহাসড়কে গাছকেটে ও বিদু্যতের পোল ফেলে অবরোধ কারিদের ধাওয়া করা হয়েছে।
শহর ও শহরতলীতে নাশকতা চষ্টোকারিদের রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।