আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাযহাব অনুসরণ করা ফরয? (দলীল ভিত্তিক ধারাবাহিক --- ৬ষ্ঠ পর্ব)

জালিমের ফাঁসি হোক, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হোক, রাজাকারদের ফাঁসি হোক

শরীয়ত অনুযায়ী মাযহাব পালন করা ফরয কিনা তা এক লাইনে লেখা সম্ভব নয়। দলীল সহ বিস্তারিত লিখা হলে সহজে ‍বুঝা যাবে। তাই অনেকগুলো পর্ব হবে। সবগুলো পর্ব পড়ে মন্তব্য করবেন আশা করি। ৫ম পর্বের পর.................... “মুসাল্লাম” কিতাবে আছে, “যে ব্যক্তি মুজতাহিদ (মতলক্ব) নয় যদিও সে আলিম, তথাপি তার জন্য তাকলীদ অর্থাৎ কোন এক মাযহাবের অনুসরণ করা ফরয ।

” হযরত মুল্লা জিউন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “সাধারণের জন্য আলিমগণকে এবং আলিমদের জন্য মুজতাহিদগণকে অনুসরণ করা ওয়াজিব । ” তিনি আরো বলেন, “চার মাযহাবের কোন একটাকে অনুসরণ করা ওয়াজিব । ” (তাফসীরে আহমদিয়াত) হযরত আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “যারা ইজতিহাদ (মতলক্ব)-এর ক্ষমতা রাখে না, তাদের জন্য কোন একজন ইমামের মাযহাবকে অনুসরণ করা ওয়াজিব । ” (জামউল জাওয়ামে) হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “কোন এক মাযহাবের অনুসরণ করা ওয়াজিব । ” (ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন) এছাড়াও হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি “আল মালুমা” কিতাবে, হযরত জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি “যাজিযুল মাযাহিব” কিতাবে, হযরত আল্লামা বাহরুল উলূম রহমতুল্লাহি আলাইহি “তাহরির” কিতাবে, হযরত আল্লামা ইবনে আব্দুন্ নূর রহমতুল্লাহি আলাইহি “হারী” কিতাবে, হযরত শাহ্ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি “ইকদুল জিদ” ও “ইনছাফ” কিতাবে, “তাফসীরে আযীযী” “সিফরুছ সায়াদাত” কিতাবে, “ফয়জুল হারামাইন” কিতাবে কোন এক মাযহাব অনুসারে চলা ওয়াজিব বলা হয়েছে, অন্যথায় গুণাহ্ হবে ।

ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “কিমিয়ায়ে সায়াদাত” কিতাবে বলেন, কোন এক মাযহাব মান্য না করলে মহাপাপী হবে । অতএব, ফতওয়া হচ্ছে প্রত্যেকের জন্য মাযহাব চতুষ্ঠয়ের যে কোন এক মাযহাবের অনুসরণ করা ফরয-ওয়াজিব । অন্যথায় সে ফাসিক ও গোমরাহ হবে । এ ফতওয়ার উপর ইমাম-মুজতাহিদগণ ইজমা করেছেন । বর্তমান মিডিলিষ্ট তথা মধ্যপ্রাচ্যের কোন কোন এলাকায় বিশেষ করে সৌদি আরবে যারা সালাফী নামে পরিচিত তারাও মাযহাব স্বীকার করেনা ।

বরং মাযহাবের বিরোধিতা করে থাকে । যারা মাযহাব মানেনা বা মাযহাবের বিরোধিতা করে তারা বিভিন্ন নামে পরিচিত । যেমন, ওহাবী, সালাফী, মুহম্মদী, লা-মাযহাবী, আহলে হাদীছ, রফে ইয়াদাইন ইত্যাদি । তারা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের বিপরীত মত-পথ পোষণ ও প্রচার করে । তারা নিজেরাই নিজেদের মধ্য থেকে ইমাম বানিয়ে তার অনুসরণ-অনুকরণ করে ।

তাদের ইমামের আক্বীদা-আমল কুরআন-সুন্নাহর খিলাফ হলেও সেটাকেই তারা অনুসরণ করে থাকে । (নাউযুবিল্লাহ) উল্লেখ্য, যারা মাযহাব মানেনা অর্থাৎ যারা লা-মাযহাবী তারা কয়েক শ্রেনীর- (১) প্রথম শ্রেনী যারা মুশাব্বিহা ফিরক্বার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করে । তারা বিশ্বাস করে, আমাদের মত আল্লাহ্ পাক-এর হাত, পা, চোখ, কান, যবান ইত্যাদি রয়েছে । (২) দ্বিতীয় শ্রেনী যারা বলে, মাযহাব মানা বা গ্রহণ করা শিরক । (৩) তৃতীয় শ্রেণী যারা বলে, মাযহাব মানা বিদয়াত ।

(৪) চতুর্থ শ্রেণী যারা মাযহাবকে হক্ব বা সঠিক বলে জানে । তারা যদিও প্রকাশ্যে নিজেদেরকে মাযহাবের অনুসরণকারী বলে দাবী করেনা প্রকৃতপক্ষে তারা চার মাযহাবের কোন একটি মাযহাব অনুযায়ী আমল করে বা তার অনুসারী । এ চার শ্রেণীর মধ্যে শুধুমাত্র শেষ শ্রেণী ব্যতীত বাকি তিন শ্রেণীই নাহক্ব । তাদের সম্পর্কে ইমাম-মুজতাহিদগণের ফতওয়া হলো- প্রথমতঃ যারা বলে ও বিশ্বাস করে যে, মানুষের মত আল্লাহ্ পাক-এর হাত, পা, নাক, চোখ, মুখ ইত্যাদি রয়েছে তারা মুশাক্বিহা ফিরক্বা তথা কাফিরের অন্তর্ভূক্ত । তাই তাদের সাথে বিবাহ-শাদী, নামায-কালাম, লেন-দেন কোনটিই জায়িয নেই ।

সম্পুর্ণরূপে হারাম। দ্বিতীয়তঃ যারা বলে, মাযহাব মানা বা গ্রহণ করা শিরক । মূলতঃ তারাই মুশরিক । তাদের সাথেও কোন প্রকার সম্পর্ক রাখা জায়িয নেই । তৃতীয়তঃ যারা বলে, মাযহাব মানা বিদয়াত ।

মাযহাবকে বিদয়াত বলার কারণে তারাই বিদয়াতী হিসেবে সাব্যস্ত হবে । তাই তাদের সাথে বিবাহ-শাদী, লেন-দেন, নামায-কালাম ইত্যাদি সবই মাকরূহ । আর চতুর্থতঃ যারা মাযহাবকে হক্ব বলে জানে, তারা হক্ব এবং তাদের সাথে সবকিছু জায়িয । ৫ম পর্ব। ৪র্থ পর্ব।

৩য় পর্ব। ২য় পর্ব। ১ম পর্ব। ---------------------------------------(ইনশাআল্লাহ চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.