আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যারা বিদেশে কাজ করতে আসতে চান তাদেরকে বলছি..............

বাংলাদেশের কিছু এজেন্ট ও তাদের দালালরা মানুষদের কে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে, বিদেশে লোক পাঠান। তাই ১। প্রথমেই চিন্তা করুন আপনার কি কি কাজের যোগ্যতা আছে। ২। কোন কোম্পানীতে কাজে যাচ্ছেন সেটা নিশ্চিত হয়ে নিন।

৩। আপনাকে কি কাজ করতে হবে সেটা নিশ্চিত হয়ে নিন। ৪। বেতন, থাকা ও খাওয়া এ সব বিষয় ভালো ভাবে নিশ্চিত হয়ে নিন। ৫।

দৈনিক কত ঘন্টা কাজ, সাপ্তাহিক ছুটি, বাৎসরিক ছুটি, ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে নিন। যদি আপনার কোন কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তবে আপনার জন্য ভাল, যেমনঃ ইলেক্ট্রেশিয়ান, ড্রাইভার, ওয়েল্ডার, পাইপ ফিটার, ফ্রিজ টেকনিশিয়ান, রিগার, প্লাম্বার, পেইন্টার, রাজমিস্ত্রি, কাঠ মিস্ত্রি, ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে , ব্যাংক, কনস্ট্রাকশন সাইট, বিভিন্ন অফিসে বাংলাদেশী শিক্ষিত লোকদের চাকুরী সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ইংরেজী ও হিন্দি ভাষায় ভাল দক্ষতা থাকতে হবে। কম্পিউটার জানা আবশ্যক।

কেননা এখানে ইন্ডিয়ান ও ফিলিপিনের লোকজন সবচেয়ে বেশি অফিসিয়াল চাকুরী করে। আমি মনে করি আমাদের সরকার যদি ফিলিপিন ও ইন্ডিয়া সরকারের মতো একটু সৎ মানসিকতা নিয়ে আন্তরিক হন তবে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষিত লোকদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারবেন। আর যদি আপনার কোন অভিজ্ঞতা না থাকে তবে আপনি নিশ্চিত রাস্তা ঝাড়ু দেয়া, ময়লা পরিস্কার করা, ক্লিনার, কমন লেবার মানে যখন যে কাজ করতে বলবে সেই কাজ করতে হবে। এখন আপনি চিন্তা করুন আপনার কোন কাজের যোগ্যতা আছে। তবে যাদের আত্মীয় স্বজন বিদেশে ব্যবসা করেন তাদের হয়তো দোকানের কর্মচারী হিসেবে চাকুরী করা সম্ভব হয় সেটা সংখ্যায় খুব কম।

বাংলাদেশ থেকে একজন লোক বিদেশে চাকুরী জন্য সর্বনিম্ন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ/৩ লক্ষ বিশেষ ক্ষেত্রে ৪ লক্ষ টাকা বা তারও বেশি টাকা এজেন্ট অথবা তার দালালদের দিতে হয়। অথচ একজন ফিলিপিনের লোক কে বিদেশে যাওয়ার জন্য সে দেশের এজেন্টকে ৫০০ ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় ৪০ হাজার টাকা। দিতে হয়। ফিলিপিনে কোন দালাল নেই সেখানে সরকারের অনুমোদিত এজেন্টরাই নিয়মতান্ত্রিক ভাবে বিদেশে নিয়োগের ব্যপারে কাজ করে থাকেন। তাদের বেতন ঘন্টায় ২.৫ ডলার থেকে ৬/৭/৮ ডলার পর্যন্ত।

আর আমাদের বাংলাদেশীদের বেতন ঘন্টায় ০.৫০ সেন্ট থেকে ১ ডলার ক্ষেত্র বিশেষ ২/৩ ডলার। এখন চিন্তা করুন ১/২ বৎসরের চুক্তিতে বিদেশে এসে আমাদের কি পরিনতি ভোগ করতে হয়। সর্বশেষ আমার নিজস্ব অভিজ্ঞা থেকে বলছি ঃ আমি আবুধাবী একটি গ্যাস প্রজেক্টে কাজ করছি কোরিয়ান হুন্দাই কোম্পানীতে। আমাদের এখানে মোট ১০ হাজার কর্মী আছে তার মধ্যে প্রায় ৬ হাজার কর্মী বাংলাদেশী অথচ এখানে অফিসে কাজ করে ১ জন্ পেইন্টিইং ইঞ্জিনিয়ার, ২ জন সার্ভেয়ার, ১ জন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, ৪জন্ ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার, ১জন ডকুমেন্ট কন্ট্রলার, ৪ জন কম্পিউটার অপারেটর, কিছু ড্রাইভার, লেবার ফোরম্যান, ৬/৭জন ওয়েল্ডার, বাকী সকলেই কমন লেবার। আমার বসকে যখন বলি আমাদের আসতে ১ লক্ষ ৫০ টাকা লাগছে তখন তারা বলে তোদের দেশের সরকার নেই? এত টাকা লাগে কেন? আমাদের বলতে লজ্জা লাগে যে আমাদের সরকার থেকেও নেই কেননা যে যার মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি নিয়ে ব্যস্ত আমাদের দেখার কেউ নেই।

সবচাইতে দুঃখের বিষয় আমাদের আরব আমীরাতের বাংলাদেশ এম্বাসীর ফোন নম্বর আছে ঠিকই কিন্তু সেখানে ফোন দিলে কেউ রিসিভ করেন না। সর্বশেষ সবাইকে অনুরোধ করবো বিদেশে আসার পূর্বে আপনি ভাল করে জেনে নিন কোথায় যাচ্ছেন, এবং কি কাজ করতে যাচ্ছেন। জনশক্তি কর্মস্থান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও এজেন্ট মালিক / দালালদের অনুরোধ করছি দোহাই আপনাদের একটু চিন্তা করুন আপনারা কি আপনাদের দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করছেন? যদি মনে করেন সৃষ্টিকর্তা বলতে একজন আছেন তবে তিনি কিন্তু সব কিছুর বিচার একদিন করবেন। দুর্ণীতি করে টাকা আয় করতে পারবেন কিন্তু ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে সুখি হতে পারবেন না। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২০ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।