আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দিল্লি-ওয়াশিংটন বিরোধ তুঙ্গে

ওয়াশিংটনের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নয়া দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নিরাপত্তা চৌকি তুলে নেয়াসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়ে ভারত বুঝিয়েছে, দেবযানী কাণ্ডে তারা কতটা ক্ষুব্ধ হয়েছে।
ভিসার আবেদনে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়ে গ্রেপ্তারের পর তাকে হেনস্তার ঘটনাটি প্রকাশ পেলে ক্ষুব্ধ হয় ভারত সরকার।
ভারতের সরকারি সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মঙ্গলবার দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বাইরে থেকে নিরাপত্তা ব্যারিকেড তুলে নেয় পুলিশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের জন্য বিমান বন্দরের পাস বাতিল এবং যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের জন্য আমদানি ছাড়পত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।
দেবযানীর ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সফররত একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা রাহুল গান্ধী ও বিরোধী দলের নেতা নরেন্দ্র মোদি।

 
কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একধরনের দ্বন্দ্বের খবর প্রকাশ পায়। তবে এবার কূটনীতিক হেনস্তার পর সব পদক্ষেপই প্রকাশ্য।
ভারতের গণমাধ্যমের খবর, ওই কূটনীতিককে বিবস্ত্র করে তার দেহে তল্লাশি চালানোর পর তাকে মাদক চোরাচালানী ও যৌনকর্মীদের সঙ্গে কারাকক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল।
ভারতের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ‘বর্বর আচরণ’ বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ভারতীয় কূটনীতিককে গ্রেপ্তারে নিউ ইয়র্ক পুলিশ ‘সাধারণ কার্যক্রম’ অনুসরণ করেছে মাত্র।


কিন্তু ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী দেবযানীকে ‘কূটনৈতিক সুবিধা’ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত।
পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র কনস্যুলেটের সব কর্মকর্তাদের পরিচয়পত্র অবিলম্বে জমা দেয়ার নির্দেশসহ তাদের ও তাদের পরিবারের গৃহকর্মীরাসহ সব বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর।
এছাড়া দূতাবাসের বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা নিয়মিত কর দেন কি না, তা দেখতে ভিসাসহ তাদের বেতন ও ব্যাংক হিসাব সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য চেয়েছে ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েলকে ডেকে পাল্টা কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানিয়ে দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমের খবর।
সরকারের বাইরে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারাও যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘আচরণের’ প্রতিবাদস্বরূপ ভারত সফররত যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাৎ দেননি।


মঙ্গলবার সকালে রাহুল গান্ধী ও মোদির সঙ্গে ওই প্রতিনিধি দলের আলাদা বৈঠকের কর্মসূচি ছিল। কিন্তু তারা তা বাতিল করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দেও তাদের সঙ্গে দেখা করেননি।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশীদ।
তার বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলেছে, “এটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য…।

কার্যকর উপায়ে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে তার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য যা যা করণীয় তাই করা হবে। ”
দেবযানীকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার প্রতিবাদে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন ও লোকসভার স্পিকার মীরা কুমারও যুক্তরাষ্ট্রর কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক বর্জন করেন।

ঘটনার বিষয়ে দেবযানীর সঙ্গে এনডিটিভির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বলে বেসরকারি টেলিভিশনটির খবরে বলা হয়।
নিউ ইয়র্কের ভারতীয় কনসুলেটের ডেপুটি কন্সাল জেনারেল দেবযানীর বিরুদ্ধে ভিসা আবেদনে ভারতীয় গৃহকর্মীর বিষয়ে ভুয়া তথ্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মেয়েকে স্কুলে নামিয়ে দেয়ার সময় রাস্তা থেকেই দেবযানীকে গ্রেপ্তার করে প্রকাশ্যে তাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয়া হয়।

পরে আড়াই লাখ ডলার জামিনে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
দুই কন্যা সন্তানের জননী ৩৯ বছর বয়সী দেবযানী কন্স্যুলেটের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও নারী বিষয়ক কনসাল জেনারেল।
দেবযানীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৫ বছরের কারাবাস।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।