আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক বছরে স্বর্ণের দাম কমেছে ১৩ বার

আন্তর্জাতিক বাজারে অব্যাহত দরপতনের কারণে চলতি বছরে এ পর্যন্ত দেশে ১৩ বার স্বর্ণের দাম কমেছে। অন্যদিকে এ সময়ে স্বর্ণের দাম বেড়েছে তিনবার। গত বছর স্বর্ণের দাম বেড়েছিল নয়বার এবং কমেছিল ছয়বার। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সংস্থাটি আরও জানায়, গত বছর ঊধর্্বমুখী থাকলেও এ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ক্রমে কমেছে।

তবে শুধু আন্তর্জাতিক বাজারই স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি বা কমার জন্য দায়ী নয়, দেশের রাজনৈতিক কারণকেই দায়ী করছেন বাজুস সদস্যরা। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্তর্জাতিক বাজারে অব্যাহত দরপতনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে গত শুক্রবার এক মাসের ব্যবধানেই আবার কমে স্বর্ণের দাম। নতুন এ দর নির্ধারণ করেছে বাজুস। এর ফলে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম কমে ১ হাজার ৪৫৭ টাকা। নতুন দর অনুযায়ী ২২ ক্যারেট (ক্যাডমিয়াম) প্রতি ভরি স্বর্ণ ৪৮ হাজার ৪০৫ টাকার পরিবর্তে ৪৬ হাজার ৯৪৮ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪৬ হাজার ২৪৮ টাকার পরিবর্তে ৪৪ হাজার ৮৪৮ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৩৯ হাজার ৬৫৮ টাকার পরিবর্তে ৩৮ হাজার ৪৩২ ও সনাতনী স্বর্ণ ২৭ হাজার ৪১০ টাকার পরিবর্তে ২৬ হাজার ২৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে স্বর্ণের দাম কমার পাশাপাশি এবার রুপার দামও কমেছে। প্রতি ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকার পরিবর্তে নতুন দরে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২২৫ টাকায়। এ ব্যাপারে বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার কারণেই স্থানীয় বাজারে দাম কমানো হয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণত আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, ডলার ও টাকার মূল্যমান এবং স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের চাহিদা ইত্যাদি বিষয় আমলে নিয়ে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানো হয়। সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর এ সময় দেশে বিয়ের মৌসুম থাকে।

কিন্তু আসন্ন নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এবার অনেকেই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে বিয়ে পিছিয়ে নিয়েছেন। এতে স্বর্ণের চাহিদা কমে যাওয়ায় স্বর্ণের দামও কমানো হয়েছে। এ ছাড়া স্বর্ণের দাম কমার জন্য দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তারা। বাজুস সূত্রে জানা যায়, গত বছর ঊধর্্বমুখী থাকলেও এ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ক্রমে কমছে। একই ওজনের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যে দামে কেনেন তার চেয়েও কম দামে বিক্রি করেন।

এতে স্বর্ণের দাম কমলে ব্যবসায়ীরা তাদের মূলধন হারান। বিশ্ববাজারে হংকং, দুবাই, নিউইয়র্ক, লন্ডন, জুরিখ সর্বত্র প্রায় একই রকম দাম থাকলেও দেশে দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে দুবাইয়ের মূল্যকে মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে বাজুস। এ বছর জানুয়ারি-এপ্রিলে তিনবার, মে-জুনে তিনবার, সেপ্টেম্বর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মিলিয়ে মোট ১৩ বার স্বর্ণের দাম কমানো হয়। অন্যদিকে ২০১২ সালের এপ্রিলে একবার ও আগস্টে দুবার স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পায়। বিশ্ববাজারে কয়েক মাস ধরেই স্বর্ণের দামে নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

গত ১৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্সের (২.৬৬ ভরি) দাম কমে ৪০ ডলার। এরপর আবার কিছুটা ঊধর্্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত প্রতি আউন্স বিক্রি হয় ১ হাজার ২০৬ ডলারে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ায় মার্কিন ডলারের মান বেড়ে গেছে। ডলার ও ইকুইটির দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা এদিকেই ঝুঁকছেন।

এতে অর্থ জোগাতে তারা মজুদে থাকা স্বর্ণ বিক্রি করে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) প্রণোদনা কমিয়ে দিতে পারে। এ আশঙ্কায় বিনিয়োগ চাহিদা কমে যাওয়ায় দাম কমেছে। তবে সামনে সোনার বাজার আবারও চাঙ্গা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের ঠিক কী পরিমাণ স্বর্ণ বাইরে থেকে আমদানি করা হচ্ছে তা জানা নেই।

আমদানিকৃত স্বর্ণের বাইরে বংশপরম্পরায় ব্যবহৃত স্বর্ণ ভেঙে এবং দেশের বাইরের ১ কোটির বেশি প্রবাসীর দেশে আনা স্বর্ণের মাধ্যমে স্বর্ণের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, বাইরে থেকে স্বর্ণ আমদানি না করে যদি দেশে মজুদ থাকা স্বর্ণ অপ্রচলিত পণ্য হিসেবে রপ্তানি করার ক্ষেত্র তৈরি করা হয় তবে ভবিষ্যতে এ দেশেও স্বর্ণশিল্প গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।