আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইমন; আলসেমী অনেক হল, এবার উঠুন

যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়। একটা দুঃস্বপ্নের মধ্যে রয়েছি; সেই সকাল থেকে শুরু হয়েছে আর ঘণ কালো মেঘের মত জমতে জমতে অসাড় করে দিচ্ছে। একটা নতুন আবিষ্কৃত বিষ যেন; কষ্ট দেয় কিন্তু সম্পূর্ণ মেরে ফেলে না। বেঁচে থাকার মধু আর বিষটুকু শুধু মনে করিয়ে দেয় হাড়ে মজ্জায়।

নতুন করে শীত নামল যেন এই শহরে এই কমিউনিটিতে এই ব্লগোস্ফিয়ারে। কেমন আছেন ইমন? আমাদের সমন্বিত কান্না কি আপনার কাছে পৌছে যাচ্ছে ? মনে আছে আমাদের প্রথম যোগাযোগের কথা? প্রথমপাতা জুড়ে ইমন আর ইমন; ২০০৮ এর শেষ দিকটা? আপনাকে খুঁচিয়ে দেয়া পোষ্ট, "ইমন আপনি কিন্তু ফ্লাডিং করছেন"। আপনি স্বতস্ফূর্ত উল্লাসে এসে বললেন শরৎ, " কি করে এই বহমানতাকে আটকে রাখি?" এরপর বাকীটা ইতিহাস। মৌলিক লেখার সেই স্বতস্ফূর্ততাকে রুখবে কে? সুস্থ ধারার ব্লগিং এর ইতিহাসটা আপনার মত ব্লগার কেবল সম্মৃদ্ধই করে গেলেন। আমি আমরা মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকলাম।

ইমন আমি বাধ্য হয়েছিলাম আপনাকে এই কবিতাটা উৎসর্গ করতে, মনে পড়ে? নগরের ভেতর শেকড় শহর নিরন্তর ক্ষরণে ভেসে যাচ্ছে রাজপথ আমাদের প্রতিদিনকার সোমরসে অথচ তুমি বলবে বিস্তৃত আলোর মত ছড়িয়ে যাচ্ছে মানবতা আর কবিতার দূর্দান্ত চিত্রকল্প সিনেমেটিক শটের পর শট খাট! খাট! প্রায়শই ঈশ্বর ছাপিয়ে মানবীয় দুরুহতা যত মানবীয় বীররস হাত বাড়ানো পথ এদিকে বন্ধ্যা নগরে সবুজ ফলাতে ছুটে আসছে শেকড়েরা সব বৃক্ষগুলোকে উপড়ে ফেলে আরেকটি নতুন শেকড় শহর আলোকজ্জ্বল নগরেরই ভেতরে কি দারুন! নাগরিক নৈশভোজ পা.....ন তৃপ্ত ভোগজাত ঢেকুর দামী পাড়ার দামী সুগন্ধি দামী বুদবুদ আর প্রতিটি এ্যামনেশিয়া আক্রান্ত সকাল জানান দিচ্ছে বেঁচে আছ তুমি তোমার ভুলে যাওয়া অতীত দাঁতের ফাঁক থেকে উঠে আসছে ব্রাশের সাথে সাথে আর ক্ষয়ে দিচ্ছে ব্রিসল ব্র্যান্ডেড নন-ব্র্যান্ডেড দাঁত কিংবা ব্রাশের হাতল আকাশের উঠানে সূর্যোদয়, চড়ুইয়ের টাটকা রক্ত যেন ছটফটে আর ভয়ংকর লাল কার্নিশ গলে ছলকে উঠছে! ছলকে উঠছে! তোমার প্রাত:কালীন আয়নার ভেতর আর তোমাকে সগর্বে জানান দিচ্ছে এই যে তাকানো; এই যে তাকিয়ে তাকিয়ে ভুলে যাওয়া এই যে আয়নায় ভেতর শেকড়ের উচ্ছাস আসলে ইতিহাসের মতন এক নৃসংশ রাজপথ এখানেও টিকে থাকতে হয় এখানের স্মৃতি তালিকায় নাম ওঠাতে করতে হয় সমুদ্র মন্থন মনে পড়ে ইমন? আমি বাধ্য হয়েছিলাম লিখতে, "ইমন আপনার সৃষ্টিশীল ব্লগিং অব্যহত থাকুক। আশা করি ইমেজ সংকটের সহজ রাস্তায় হাঁটা দেননি। তবুও নিরুতসাহিত হতে পারেন ভেবে পূর্বের পোষ্ট ড্রাফ্ট করে দিলাম। পরিণত যোগাযোগের রাস্তাও সম্ভবত শুরু হল । আপনার গতিশীল এবং সৃষ্টিশীল পোষ্টের অপেক্ষায় আছি।

ভালো থাকুন। " আপনি আমার সকল আশংকাকে মিথ্যে প্রমাণ করে জন্ম দিয়ে গেছেন মৌলিক ব্লগিং। সাহিত্য, ইতিহাস, অনুসন্ধান আত্ম-কথনের অভূতপূর্ব সৃষ্টিশীলতায়। ব্লগিং এর "ক্যাচাল" বিনোদনের স্থুল পথটাকে অবলিলায় অস্বীকার করে। মৌলিক সৃষ্টিশীলতার পরিসরকে নানান রং এ রাঙিয়ে।

ইমন আপনি এভাবে যেতে পারেন না। আপনাকে হারিয়ে সহযাত্রীকে হারালাম। সমচেতনার মানুষকে হারালাম। সৃষ্টিশীল ব্লগিংকে হারালাম। এটা জাস্ট হতে পারে না।

আপনি কি এখনো বলবেন? "ইমন জুবায়ের বলেছেন: ভালো লাগল। ধন্যবাদ। " এতটা স্বার্থপর নির্মোহ হবেন? আপনাকে হারিয়ে আমি নির্মোহ নই ইমন, দুঃখিত! কিন্তু এতটা নির্মোহ আমি সত্যিই নই। দেখুন বাংলা ব্লগাররা, আপনার পাঠকরা কাঁদছে, বন্ধুরা কাঁদছে, কৌশিক কাঁদছে, তাহসান কাঁদছে, তূর্য্য কাঁদছে, সুনীল কাঁদছে, রেজোয়ানা কাঁদছে, দূর্যো কাঁদছে। আপনার পরিচিত কে আছে যার চোখে অশ্রু নেই? ব্লগের প্রথম পাতা জুড়ে রয়েছেন কেবলই আপনি।

নির্বাচিত পাতায় রয়েছেন কেবলই আপনি। অনেক হল; ইমন আমাকে আরো খোঁচাতে উৎসাহ দেবেন না, এবার আমি কিন্তু সত্যি সত্যিই আপনাকে রাগিয়ে দেব। সেটা যে আমি করতে পারি তা আপনি জানেন। অনেক আলসেমী হল, এবার উঠুন। জাস্ট গেট আপ! ২০১৩ মাত্র শুরু হল; অনেক লেখা লিখতে হবে আপনাকে।

ধারাবাহিকভাবে লিখে যেতে হবে। সামনের শুক্রবারে মসজিদে যেয়ে আপনাকে ছুঁয়ে আসতে চাইনা ইমন। সৃষ্টিশীল ব্লগিংকে এগিয়ে নিতে হবে ইমন। ইমনকে আজিমপুরে কবরে শোয়ানোর সাহস আমার হয়নি। সহ ব্লগারকে ছুঁয়ে এসেছি মাত্র।

ইমন দুঃখিত; আপনাকে বিদায় জানাতে পারবোনা আমি কোনদিনও। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।