আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুই ব্যারিস্টার জনপ্রতিনিধি কাহিনী

আমাদের বঙ্গ ভাণ্ডারে বিবিধ রতনের যে অভাব নেই, সে কথা বহুদিন আগেই কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত জানিয়ে গেছেন তার মৃত্যুর মাত্র সাত বছর আগে। [চতুর্দশপদী কবিতাবলী ১৮৬৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল, সেই কাব্যগ্রন্থের একটি কবিতা 'বঙ্গভাষা'] কবির জন্ম ২৫ জানুয়ারি ১৮২৪, আমাদের যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে। কবির মৃত্যু হয়েছিল ১৮৭৩ সালে। সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে। ইতোমধ্যে স্বধর্ম ত্যাগ করে ইংরেজি বাংলা শিল্প-সাহিত্য সাধনার মাঝখানে ইংল্যান্ডের গ্রেজ ইন থেকে ব্যারিস্টারি পাস করেও সফল ব্যারিস্টার হতে না পারলেও তিনি যে বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ একজন সফল কবি, সে বিষয়ে কারও কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই, অন্তত আমরা যারা সাহিত্যের আশপাশে ঘোরাফেরা করি।

একজন কবির, নাট্যকারের সফলতা ওইখানেই।

পৃথিবীতে কত হাজার লক্ষ ব্যারিস্টার এসেছেন, গেছেন, সেই ব্যারিস্টারদের নাম-ঠিকানা ধূলিময় পৃথিবী থেকে অনেক আগে নিশ্চিহ্ন হলেও আমাদের বাংলাদেশে গুটিকয়েক ব্যারিস্টার এখনো বেঁচে বর্তে আছেন। সেই গুটিকয়েকের ভেতর থেকে দুজন নিজ জন্মভূমিতে সংসদ সদস্য হতে না পেরে মাননীয় বিরোধী দলের নেত্রীর ছেড়ে দেওয়া বগুড়ার গাবতলী আসনে গিয়ে বৃহত্তর নোয়াখালীর একজন ব্যারিস্টার ডা. মোস্তফা আলম নান্নুর নৌকা মার্কার বিপরীতে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছিলেন বিপুল ভোটে। বগুড়ার গাবতলী শাজাহানপুরের ধানের শীষের তরুণ কর্মীরা আদাজল খেয়ে নির্বাচনী তরী পার করিয়ে দিয়েছিলেন, যেন ব্যারিস্টার সাহেব এই একই বৈতরণীতে উঠে সোজা লুইক্যানের বানানো শেরেবাংলা নগরের শীতমাখা ঘরে গিয়ে বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে গাবতলী, শাজাহানপুরবাসীর সুখ-দুঃখের কথা বলতে পারেন। সেই উদ্দেশ্যেই ধানের শীষের তরুণরা আদাজল খেয়ে নেমেছিলেন ব্যারিস্টার সাহেবের বৈতরণী পার করাতে।

বৈতরণী পার হওয়ার পরে বগুড়া অভিমুখী নাকি হননি, মৃদু হাসির সেই ব্যারিস্টার সাহেব।

অপরদিকে বগুড়া সদর-৬ আসনে নৌকা মার্কার পক্ষ থেকে স্থানীয় সভাপতি মমতাজউদ্দিন আহমেদও চেয়েছিলেন সংসদ সদস্য হতে। তাকিয়ে ছিলেন শেরেবাংলানগরের সুরম্য ভবনের দিকে। কিন্তু বিধিবাম। বগুড়ার সদরের ৬ আসনে স্থানীয় ধানের শীষের অনেক নেতাই উৎসাহী ছিলেন লুই ক্যানের সুরম্য ভবনে প্রবেশাধিকার পেতে।

স্থানীয়দের প্রতি বিধিবাম হলেও বিধি সদয় হলেন বৃহত্তর রংপুর থেকে উড়ে আসা, শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, সব ঋতুতেই স্যুটেড বুটেড আরেকজন ব্যারিস্টারের প্রতি।

তিনি হাজার রকমের আশ্বাস দিলেও বিগত কয়েক বছরে ওই দুই আসনে তাদের পদধূলি না পড়লেও সংসদ ভবনের আসনে বসতে ভুল করেননি। তাই বঙ্গ ভাণ্ডারের ওই দুই রতনের প্রতি প্রচণ্ড অভিমান-ক্ষোভ ওই দুই আসনের তরুণ-বৃদ্ধ প্রত্যেকের, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জানালেন আমাকে। বগুড়া শহরের বিখ্যাত সেই সাতমাথার মোড়ের পূর্বদিকের প্রধান পোস্টাপিসের দেয়াল ঘেঁষে 'নিকুঞ্জ' চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে শুনলাম ভালো তো নয়ই, মন্দ মন্দ কথা এবং ওই দুই ব্যারিস্টারকে নাকি আগামীতে বগুড়ায় প্রবেশ করতে দেবে না, ধানের শীষের তরুণরা।

তরুণদের কথা শুনে কষ্ট হলো, কেননা এই তরুণরা ওই দুটি ৬ এবং ৭ আসনে জিতিয়েছিল, অন্য জেলার লোকদের সুন্দর কিছু পাওয়ার আশায়।

কিন্তু আশায় আখের গুড়ের বদলে নোয়াখালীর রামগতির চরের এবং রংপুরের যমুনা/ব্রহ্মপুত্র চরের বালি ফেলে দিয়েছেন ওই উড়ন্ত দুই পাখি। তরুণদের ক্ষোভের আরও কারণ শুনলাম সংসদে দাঁড়িয়ে বা বসে একজন নাকি স্যুটের টাই ঠিক করতে করতে এবং আরেকজন মৃদু-মন্দ হেসেই সময় পার করেন।

ইতিপূর্বে অনেকবার বগুড়ায় যেতে হয়েছে। যখন বিসিকে চাকরি করতাম। তার আগে ১৯৬৪ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে গিয়েছিলাম কয়েকজন স্কুল সহপাঠীসহ।

আমাদের স্কুলশিক্ষক অপূর্বকৃষ্ণ গোস্বামীসহ, উভয় সম্প্রদায়ের ১৫-২০ জন। আর সেই আমি গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে বগুড়ায় গিয়েছিলাম ১২ আশ্বি্বন, ১৪২০, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ শুক্রবার। বগুড়ার লেখক চক্রের ২৫ বছর জন্মোৎসবে। সারা দেশ থেকে কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, ছড়াকার থেকে নবীন এবং প্রবীণরা এমনকি মহিলা কবিদের উপস্থিতিতে লেখকচক্রের আয়োজকরা আনন্দের সঙ্গে অভ্যর্থনা জানিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি, সুখাবার এবং সুখনিদ্রার আয়োজন ছিল ঈর্ষণীয়। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান হলো উডবার্ন হলে।

১৯৮৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ৩০ ভাদ্র ১৩৯৫ জন্ম হয়েছিল বগুড়া লেখক চক্রের। অপরদিকে ২৮ আগস্ট, রবিবার থেকে সমগ্র বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়েছিল। লেখক চক্রের গুরুর প্রথমদিকের প্রতিষ্ঠাতাদের ভেতর কবি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, সভাপতি শেখ ফিরোজ আহমদ, শিবলী মোকতাদির পিয়াল এবং পলাশ খন্দকারসহ অনেকেই এখনো আছেন লেখক চক্রের সঙ্গে। ইতোমধ্যে গতায়ু হয়েছেন আমার সহপাঠী কবি শাহনুর খানসহ অনেকেই। আবার যুক্ত হয়েছেন অনেক কবি-শিল্পী-সাহিত্যিক।

কবি ইসলাম রফিক বগুড়া লেখক চক্রের সভাপতি, অপরদিকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন আমির খসরু সেলিম। সদস্য সংখ্যার ভেতরে আছেন জয়ন্ত দেব, কালের কণ্ঠের বগুড়া প্রতিনিধি জি.এম রউফ, ওই পত্রিকারই প্রধান চিত্রগ্রাহক ঠাণ্ডা আজাদ, দৈনিক করতোয়ার সহ-সম্পাদক সাংবাদিক প্রদীপ শংকর ভট্টাচার্য। প্রদীপ মোহন্ত, মোশারফ হোসেন, গণেশ দাশ, জয়ন্ত দেব, সনদ দত্তসহ অনেক তরুণ-তরুণী। যারা শিল্প-সাহিত্যকেই প্রাণে ধারণ করেছে, সব কলুষতা থেকে নিজেদের দূরে রেখে। সেই ২৫ বছরের জন্মোৎসবে গিয়েছিলাম বগুড়ায়।

তবে শহরে না গিয়ে বাস থেকে না নেমে পড়েছিলাম বনানী নামের একটি মহল্লায়। ইতিপূর্বে লক্ষ্য করলাম বাসে বসে বসেই সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ চান্দাইকোনো থেকে শুরু করে জোড়পুর হয়ে জেলার প্রবেশমুখের রাস্তার দুই পাশে বিরোধী দলের নেত্রীর বিশাল, বিশাল ডিজিটাল বিলবোর্ড চোখে পড়ল, চোখে পড়ল ত্বদীয় পুত্রের ছবি। যারা ওই সব ডিজিটাল ব্যানার বানিয়েছেন তারা নিজেদের বিশালাকৃতির ছবি দিতেও ভুল করেননি। আমার ভালো লাগল, মাননীয় বিরোধী দলের নেত্রীর রংবেরঙের শিফন শাড়ি, রোদ ঢাকবার চশমা এবং হাস্যোজ্জ্বল মুখ। বনানী থেকে সাতমাথার রাস্তায় এবং পোস্টাপিসের পশ্চিম দিকের সাতমাথার রাস্তার চতুর্দিকেই মা, পুত্র এবং ধানের শীষের প্রবল ডিজিটাল ব্যানার।

অপরদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুটি মাত্র ডিজিটাল ব্যানার টানানো হয়েছিল, ত্বদীয় পুত্র এবং নৌকার এক মাঝির। দুঃখের বিষয় ওই ব্যানার দুটি অতি উৎসাহী ধানের শীষের সমর্থকরা ছিঁড়ে ফেলেছে, কেটে ফেলেছে। ব্যানারের মাঝখান দিয়ে ছেঁড়া। অসহিষ্ণুদের দোষ নেই। কেননা তারা এখনো জানে না গণতন্ত্র কী।

সহনশীলতা শব্দটির মমার্থ। যেহেতু শহরের বাইরের দক্ষিণদিকের বনানী মহল্লায় নেমেছিলেম এবং ওই এলাকারই এক রিকশাচালক আবদুল বারেকের রিকশায় চেপে, বারেক পরিবারের সদস্য সংখ্যা, প্রতিদিন আয়-উপার্জন জেনে নিচ্ছিলাম। সন্দেহচ্ছলে বাহককে জিজ্ঞাসা করলাম, এবারের নির্বাচনে আশপাশের বগুড়া থেকে নৌকায় এবং ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে যারা ভোটে দাঁড়াবেন তাদের মধ্যে জিতবেন কে। বাহক জানালেন, আগামী নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ নেবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। নিলেও কে জিতবে কে হারবে সেটা আমার বিষয় নয়।

ভোটের দিন সারা দিন ভোট দেওয়ার লাইনে গিয়ে পরিবারসহ সময় কাটাতে হবে। ওই দিন কোনো আয়-উপার্জন হবে না, তাই যে পক্ষ বেশি টাকা দেবেন সে পক্ষকেই ভোট দেব, বাহকের বয়স ৬০-৬২ হবে, তিনি ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন, কিছু দিন আগেই তো এক ব্যারিস্টার সাহেবকে ভোট দিলাম। তিনি নাকি পাসও করলেন শুনলাম, পাস করার পর সেই এমপি সাহেব বগুড়ার মাটিতে পা রাখেননি। তাতে আমার কোনো ক্ষতিও নেই, লাভও নেই। লাভ হয়েছিল ভোটের দিন, পেয়েছিলাম বেশ কিছু।

আগামীর পথপ্রদর্শক যারা থাকবেন এবং এখন যেসব চক্রী আছেন, তাদের উদ্দেশে (বগুড়া-১ আসন, সারিয়াকান্দি সোনাতলা) আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. আবদুল মান্নান, বগুড়া লেখক চক্রের কর্মকাণ্ডে খুশি হয়ে ৫০ হাজার টাকা প্রদানের অঙ্গীকার করলেন, গত বছর তার নিজ এলাকা সারিয়াকান্দিতে তিনি আমাদের নিয়ে গিয়ে বিশাল কয়েকটি নৌকায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন যমুনা নদীতে। গত বছরেও সংসদ সদস্য ৫০ হাজার টাকার অনুদান দিয়েছিলেন, এবারও দিলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বগুড়ার বিখ্যাত উডবার্ন হলে।

চক্রীরা জানালেন, আগামীকাল আমরা দেখতে যাব, ভাসুবিহার। কিংবদন্তির পুণ্ড্রনগরে যেমন আছে মহাস্থানগড়, তেমনি আছে ওই নগরের শিবগঞ্জে ভাসুবিহার। ভাসুবিহার নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ যথেষ্ট কর্ম করেছে।

স্থানীয়ভাবে ভাসুবিহার নরপতির ধাপ নামে পরিচিত। ১৯৭৩-৭৪ সালে এখানে উৎখনন কর্ম শুরু করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এবং পরবর্তী দুই মৌসুমে কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকে। ভাসুবিহারে দুটি মধ্যমাকৃতির সঙ্গরাম ও একটি মন্দিরের স্থাপত্যিক কাঠামোসহ প্রচুর প্রত্নবস্তু উন্মোচিত হয়। একটি ছোট সঙ্গের আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪৯ মি. ও পূর্ব-পশ্চিমে ৪৬ মি. এর চার বাহুতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বসবাসের জন্য ২৬টি কক্ষ এবং কক্ষগুলোর সামনে চারকোনা ঘোরানো বারান্দা এবং পূর্ববাহুর কেন্দ্রস্থলে প্রবেশপথ রয়েছে। বৃহৎ এই বিহারটির ভূমি পরিকল্পনা ও স্থাপত্য কৌশল প্রথমটির অনুরূপ এবং একই সঙ্গে এর পূর্ব ও পশ্চিমে ৪৬ মি. উত্তর-দক্ষিণে ৪৯ মি.।

এর চারপাশে/বাহুতে ৩০টি বৌদ্ধভিক্ষু কক্ষ এবং দক্ষিণ বাহুর কেন্দ্রস্থলে প্রবেশ পথ।

বিহারের অদূরে উত্তরমুখী মন্দিরটির আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৩৮ মি., পুবে-পশ্চিমে ২৭ মি.। মন্দিরের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে একটি বর্গাকার মণ্ডপ। এর চারদিকেই রয়েছে ধাপে ধাপে উপরে যাওয়ার জন্য দৃষ্টিনন্দন, উন্নত প্রদক্ষিণ পথ। উৎখননে প্রস্থ ৮০০ প্রত্নবস্তুর মধ্যে ব্রোঞ্চের ক্ষুদ্রাকৃতির কিছু মূর্তি।

পোড়ামাটির তৈজসপত্র এবং পোড়ামাটিরই সিল, খুব গুরুত্বপূর্ণ সেই সময়ের। এ ছাড়া সংগৃহীত হয়েছে মূল্যবান পাথরের গুটিকা, লোহার পেরেক, মাটির প্রদীপ, অঙ্কিত ইট, দৈনন্দিন ব্যবহার্য দ্রব্যাদিসহ প্রচুর পরিমাণে মৃন্ময় পাত্রের টুকরা।

এসব প্রত্নবস্তু থেকে ১০/১১ শতকের শিল্পকর্মের এবং বাসুবিহারের বৌদ্ধ সংস্কৃতির জীবনযাত্রার একটি পরিচয় পেলাম। সেই সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ শনিবার। দুপুরের আহারের পর ওই শিবগঞ্জ উপজেলার এক বয়সী মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে দেখা হলো।

তিনি সগর্বে পরিচয় দিলেন আমি মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের এই গ্রামেই ৩০ এর দর্শকে স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম বীর প্রফুল্ল চাকীর বাড়ি। প্রফুল্ল বাবু ব্রিটিশদের হাতে ধরা না দিয়ে সায়ানাইড পানে আত্দাহুতি দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন মাস্টারদা সূর্যসেনের অনুসারী। চলুন আপনাকে নিয়ে যাই।

গিয়ে দেখি নারদ নদের পাশেই বাঁধানো তার বেদিটি। বেদিতে শ্বেতপাথরে কি লেখা আছে উদ্ধার করা সম্ভব হলো না। সহযাত্রী তরুণ কবি মোবারক হোসেন শাহজাদপুরীকে বললাম, দেশ-মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করেছিলেন, আন্দোলনে ফাঁসি, দীপান্তর, জেল-জুলুম হয়েছিল, তারা সবাই শহীদ। তারপরেও শহীদ প্রফুল্ল চাকীর জন্ম-মৃত্যুর তারিখ আমরা কেউই উদ্ধার করতে পারলাম না। কবি আমিনুল ইসলাম।

গল্পকার রফিকুর রশীদ। ঔপন্যাসিক সাজাহান সাকীদারসহ আরও অনেকেই গিয়েছিলাম শহীদ চাকীকে শ্রদ্ধা জানাতে। ফেরার পথে দৈনিক কালের কণ্ঠের বগুড়া প্রতিনিধি জিএম রউফকে জিজ্ঞাসা করলাম, বগুড়ার আয়তন, লোকসংখ্যা এবং শহরের ভেতরে ওয়ার্ড কতগুলো আছে। তিনি জানালেন, পৌরসভার ভেতরে ২১টি ওয়ার্ড, লোকসংখ্যা আনুমানিক চার লাখ ৭৬ হাজার এবং শহরটির আয়তন বর্তমানে ৭০ বর্গ কি.মি. এবং সমগ্র উত্তরবঙ্গের ভেতরে শিল্প-কারখানায় সমৃদ্ধ আমাদের বগুড়া। তিনি আরও জানালেন, এই শিবগঞ্জেই চাঁদের ভেতরে মানুষের শ্মশ্রুমণ্ডিত মুখ দেখা গিয়েছিল।

পুড়েছিল হিন্দু মুসলিমের বাড়িঘর। লজ্জায় মাথা হেঁট হলো, বাসুবিহারের উন্মুক্ত মাঠ। বট পাকুড়ের গাছ। সেই মাঠে সাইকেল চালিয়েছিলাম। ঢাকা থেকে আগত কবি শাহানা সিরাজী, সেই ২৮ তারিখের শনিবারে ভাসুবিহারের মাঠে রবি ঠাকুরের গান শুনিয়েছিলেন।

স্বদেশ পর্বের। আমি ভয় করব না, ভয় করব না- তরী খানি বাইতে গেলে পরে ও আমার দেশের মাটি গাইলেন। সমবেত গাইলাম এই বঙ্গ ভাণ্ডারের বিবিধ রতনেরা।

লেখক : কবি।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।