আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাহেব-বিবি-গোলামের বাক্স বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫০-এ পা, কিছু না বলা কথা!!!

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ টেলিভিশন ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান টেলিভিশন নামে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছিল। এটি ছিল তখন পাকিস্তানের সরকারি টেলিভিশন। এটি তখন সাদা কালো সম্প্রচার করতো। মূলত এটি পাকিস্তান সরকারের সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করত। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পাকিস্তান টেলিভিশনকে নাম পরিবর্তন করে করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন।

আর তখন থেকেই এই সম্প্রচার মাধ্যমটি সরকারের মুখপাত্র হিসেবে সরকারি খবর প্রচার করে থাকে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত যখনই সরকারে পরিবর্তন এসেছে, যথারীতি সেই নতুন সরকারের প্রচার প্রপাগাণ্ডায় ব্যস্ত হয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন। সংক্ষেপে এটাকে অনেক বিটিভি নামে ডাকে।
১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনকে আক্ষরিক অর্থেই বোঝানো হত বঙ্গবন্ধু টিভি। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সরকার কখন কোথায় কি করতেন, সেই খবর প্রচারই ছিল তখন বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রধান এজেন্ডা।

এরপর ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ টেলিভিশনও রাতারাতি ভোল্ট পাল্টে হয়ে গেল শুরুতে মোশতাক টিভি, তারপর জেনারেল জিয়া টিভি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৮১ সালের ৩০মে পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন মূলত মোশতাক গং এবং জেনারেল জিয়ার নানান কর্মকাণ্ডের প্রপাগাণ্ডা তুলে ধরেছিল। তখন স্বপ্নেও মনে হয়নি এই বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মত একজন অবিসংবাদিত বাঙালি নেতা এই জন্মগ্রহন করেছিলেন। অন্তত বাংলাদেশ টেলিভিশন স্বপ্নেও তখন বঙ্গবন্ধুকে প্রচার করেনি।
তারপর ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ জেনারেল হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা দখল করলেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশন রাতারাতি ভোল্ট পাল্টে হয়ে গেলে জেনারেল এরশাদ টিভি। তখন এটাকে অনেকে বলতেন সাহেবের টেলিভিশন। অবশ্য তখন দর্শকদের জন্য বাড়তি একটা বিনোদন ছিল ফার্স্ট লেডি মিসেস রওশন এরশাদ। তারপর ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে আবার দেশের গান বাজল।

জয় বাংলার বাংলার জয়... পূর্ব দীগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল... আরো কত দেশাত্ববোধক গান!
১৯৯১ সালের ২০ শে মার্চ বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলেন। রাতারাতি বাংলাদেশ টেলিভিশন ভোল্ট পাল্টে হয়ে গেল বেগম জিয়া টিভি। তখন অবশ্য দর্শকদের জন্য বাড়তি বিনোদন ছিল জেনারেল জিয়ার অনেক পুরানো দিনের নানান কর্মসূচি আবার নতুন করে দেখার। বেগম জিয়ার টিভি হিসেবে বিটিভি ১৯৯৬ সালের ৩০শে মার্চ পর্যন্ত বিএনপি'র প্রচার ও প্রপাগাণ্ডায় লিপ্ত ছিল।
এরপর ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলেন।

রাতারাতি বাংলাদেশ টেলিভিশন আবার পুরানা জৌলুস ফিরে পেয়ে বঙ্গবন্ধু'র গুনকীর্তন করা শুরু করলো। পাশাপাশি শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের খবরাখবর প্রচার করতে লাগলেন। সবাই তখন এটাকে বলা শুরু করলো আওয়ামী টিভি। কেউ কেউ রসিকতা করে বলঅ শুরু করলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন আসলে সাহেব-বিবি-গোলামের বাক্স। আওয়ামী টিভি হিসেবে বিটিভি ২০০১ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করলো।


২০০১ সালের ১০ অক্টোবর আবার বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলেন। রাতারাতি বাংলাদেশ টেলিভিশন আওয়ামী খোলস থেকে বেড়িয়ে এটি হয়ে গেল জাতীয়তাবাদী টেলিভিশন। এটি তখন আবার বিএনপি'র মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করলো। আর সেই যাত্রায় নতুন বিনোদন হিসেবে যোগ হল জেনারেল জিয়ার পুরানা স্মৃতিচারণের পাশাপাশি জিয়াপুত্র প্রিন্স তারেক জিয়ার খবর প্রচার। এটা চালু থাকলো ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত।


এরপর আবার ছন্দপতন। ক্ষমতায় তখন সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দিন সরকার। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ টেলিভিশন নতুন দায়িত্ব পেল ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনদের খবর প্রচারের। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার বিজয়ী হল। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলেন।

এবার বিটিভি আবার পুরানা জৌলুস ফিরে পেল। এবার বঙ্গবন্ধু'র অনেক অপ্রকাশিত ভাষণের কপি, অনেক দুর্লভ মুক্তিযুদ্ধের ছবি, আর যথারীতি আওয়ামী লীগের প্রপাগাণ্ডা প্রচার করে বাজী মাত করতে লাগল।
আজ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন ৫০ বছরে পা রাখলো। ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশন ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান প্রচার করবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন সব সময় সরকারের দালালি করলেও মাঝে মাঝে কিছু ভালো অনুষ্ঠান প্রচার করেছে।

চলুন, সেই অনুষ্ঠানগুলো একটু স্মরণ করি।
বাংলাদেশ টেলিভিশনে 'আইন আদালত' নামে একটি অনুষ্ঠান প্রচারিত হত। এই অনুষ্ঠানটি অনেকের কাছেই ভালো লাগতো। তখন অন্য কোনো টেলিভিশন চ্যানেল না থাকায় সবাইকে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ টেলীভিশন যা প্রচার করে তাই দেখতে হত। সেই সীমাবদ্ধতার বাইরে 'আইন আদালত' অনুষ্ঠানটি দর্শক প্রিয়তা পেয়েছিল।


বাংলাদেশ টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান সম্ভবত 'যদি কিছু মনে না করেন'। বিশিষ্ট টেলিভিশন উপস্থাপক ফজলে লোহানী সাহেব এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করতেন। সত্তর দশকের শেষের দিক থেকে আশির দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত (১৯৭৭ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত) 'যদি কিছু মনে না করেন' এই অনুষ্ঠানটি ছিল বিটিভি'র সবচেয় জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। ১৯৮৫ সালের ৩০ অক্টোবর ফজলে লোহানী সাহেব মারা গেলে এই অনুষ্ঠানটি'র অনুকরণে কয়েকটি পর্ব হয়েছিল বটে। কিন্তু দর্শক প্রিয়তা পায়নি বলে পরে এটি সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।


এরপর জনপ্রিয় উপস্থাপক হানিফ সংকেত শুরু করেন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান 'ইত্যাদি'। 'ইত্যাদি' বাংলাদেশ টেলিভিশনের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রচারিত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। এটি প্রায় ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়ে আসছে। যদিও 'ইত্যাদি' ধীরে ধীরে তার জৌলুস হরিয়ে ফেলেছে বলেই অনেক দর্শক মনে করেন। তবুও ২৫ বছর ধরে এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি যে বিটিভিতে সম্প্রচারিত হচ্ছে সেটিই একটি চমক বটে।


এরপর বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক হুমায়ূন আহমেদ রচিত 'বহুব্রীহি'। বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব নওয়াজিশ আলী খান ছিলেন 'বহুব্রীহি' নাটকের প্রযোজক। 'বহুব্রীহি' ধারাবাহিক নাটক বিপুল জনপ্রিয়তা পেলে নওয়াজিশ আলী খান আবার শুরু করেন আরেকটি ধারাবাহিক রম্য নাটক 'সেইসব দিন রাত্রী'। এই নাটকের রচয়িতাও জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ।
এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনে আবার জনপ্রিয়তা পায় শহীদুল্লাহ কায়সারের বিখ্যাত কালজয়ী উপন্যাস 'সংশপ্তক' অবলম্বনে নির্মিত ধারাবাহিক 'সংশপ্তক'।

বিশিষ্ট নাট্যকার আবদুল্লাহ মামুন এটি নাট্যরূপ দিয়েছিলেন।
এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠান জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছিল। 'সময়ের কথা'। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদের শিক্ষক সৈয়দ মুনীর খসরু ছিলেন 'সময়ের কথা' টকশো'র সঞ্চালক। আর এটি নির্দশনা করেছিলেন আবদুর নূর তুষার।


১৯৮৩ সালে বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য 'আমার দেশ' নামে একটি অনুষ্ঠান প্রচার শুরু হয়। যেটি'র যৌথভাবে সঞ্চালক ছিলেন রেজাউল করিম সিদ্দিকী ও শাইখ সিরাজ। ১৯৮৫ সালে 'আমার দেশ' অনুষ্ঠানের প্রডিউচার আলিমুজ্জামান এই অনুষ্ঠানের নাম বদল করে করলেন 'মাটি ও মানুষ'। আর তখন থেকে এটি'র সঞ্চালক হলেন শাইখ সিরাজ। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সাইখ সিরাজ 'মাটি ও মানুষ' অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তখণ দেওয়ান সিরাজ 'মাটি ও মানুষ' অনুষ্ঠানে কখনো কখনো কো অ্যাঙ্কর হিসেবে কাজ করেছেন।
বিটিভি'র আরেকটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হল শিশুদের শিক্ষামূলক অনুষ্ঠঅন 'সিসিমপুর'। ইউএসএইড-এর অর্থায়নে এই অনুষ্ঠানটি ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ বছরের জন্য ৩৬টি এপিসোড নির্মাণ ও প্রচার করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল প্রথম দুই বছরে ৪০ লাখ শিশুকে প্রথম দুই বছরের মধ্যে এই শিক্ষামূলক কার্যক্রমের আওতায় আনা।
বিটিভি'র আরেকটি অনুষ্ঠান জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছিল।

'নতুন কুড়ি'। এটি ছিল জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিভা অন্বেষণ মূলক অনুষ্ঠান। কিন্তু ধীরে ধীরে এই অনুষ্ঠানটি দর্শকপ্রিয়তা হারাতে থাকে। এছাড়া 'আজ রবিবার' অনুষ্ঠানটি কিছুটা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কিন্তু সেটিও ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে।

বিটিভিতে আরেকটি অনুষ্ঠান মোটামুটি দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। 'বিটিভি জাতীয় বিতর্ক'। কিন্তু ধীরে ধীরে এটিও জনপ্রিয়তা আর ধরে রাখতে পারেনি।
বিটিভি'র আরেকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ছিল 'কোথাও কেউ নেই'। হুমায়ূন আহমেদ রচিত ও বরকত উল্লাহ নির্দেশিত 'কোথাও কেউ নেই' নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র 'বাকের ভাই' খুব দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল।

বাকের ভাই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন আসাদুজ্জামান নূর।
বিটিভিতে শিশুদের জন্য আরেকটি অনুষ্ঠান নির্মিত হয়েছিল 'মীনা'। এটি মূলত রূপকথার আদলে নির্মিত একটি শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান। এটিও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এছাড়া বিটিভিতে 'নক্ষত্রের রাত' নামে আরেকটি অনুষ্ঠান জনপ্রিয়তার ঝিলিক দেখিয়েছিল।


১৯৮০ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন সাদা কালো যুগ থেকে রঙিন যুগে প্রবেশ করে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের এর প্রধান সম্প্রচার কেন্দ্র ঢাকা শহরের রামপুরা এলাকায় অবস্থিত। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলী এলাকায় বিটিভি'র একটি স্থানীয় সম্প্রচার কেন্দ্র রয়েছে। ২০০৪ সালে বিটিভি বিশ্বব্যাপী সম্প্রচারের জন্য 'বিটিভি ওয়ার্ল্ড' নামে উপগ্রহভিত্তিক চ্যানেল স্থাপন করে। এছাড়া নব্বই দশকের মাঝামাঝি বিটিভি বিবিসি ও সিএনএন-এর বিশেষ বিশেষ খবর দিয়ে একটি অনুষ্ঠান শুরু করে।

বিটিভি মূলত টেলিভিশন লাইসেন্স ফি দিয়েই এর অর্থায়ন করে। এছাড়া সরকারি টেলিভিশন হওয়ায় এটি সরকারের অনুদানও পায়।
১৯৮৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশন ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান পালন করে। তখন ভারত থেকে বিশিষ্ট শিল্পীদের নিমন্ত্রণ করে আনা হয়। রামপুরার প্রধান সড়কের উপর বিশাল প‌্যান্ডেল করে লাইভ অনুষ্ঠান করা হয়েছিল।

দুর্ভাগ্য হোক আর সৌভাগ্য হোক, সেই সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের আমি একজন দর্শক ছিলাম। বিএমএ লং কোর্সে পাঁচদিন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে কাটানোর পর ২৪ শে ডিসেম্বর বিকাল বেলা আমি সেনাবাহিনীর অফিসার গ্রেডে চান্স না পেয়ে ব্যর্থ মনোরথে গুলশানের শাহজাদপুর খালার বাসায় সন্ধ্যায় গিয়ে হাজির হলাম। মন খারাপ ভালো করার জন্য রুমী ভাইয়া আর আমি আমেরিকান দূতাবাসের সামনের মাঠে রাত এগারোটা পর্যন্ত গপ্পো করে আর জীবনের নানান কাহিনী ভাগাভাগি করে কাটালাম। রাতে আমার ভালো ঘুম হল না। সকালে রুমি ভাইয়ার চাচাতো ভাই স্বপন ভাই আসলেন।

স্বপন ভাই সারাদিন আমাকে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলেন। তখনো আমার মন ভালো হয় না। তারপর ১৯৮৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আমরা গেলাম বিটিভি'র রামপুরার সেই লাইভ অনুষ্ঠানে। ভারতীয় বিশিষ্ট শিল্পীদের গান সামনে বসে শুনে মন ভালো করে সেদিন বাসায় ফিরেছিলাম। সকালে মহানগর উর্মি -তে চট্টগ্রাম যাবার জন্য একটা ফার্স্ট ক্লাস টিকিট কাটলাম।

সেই প্রথম ফার্স্ট ক্লাসে ট্রেনে চলা আমার। আর সেই ফার্স্ট ক্লাস ট্রেনে চলার টাকা পেয়েছিলাম বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে। বাসা থেকে ক্যান্টনমেন্টে যাওয়া এবং ক্যান্টনমেন্ট থেকে বাসায় ফেরার ফার্স্ট ক্লাস সুযোগ সুবিধা'র ভাড়ার টাকা সেনাবাহিনী দেয় আইএসএসবি করতে যাওয়া ক্যাডেটদের। আমিও সেই টাকায় চট্টগ্রাম পৌঁছেছিলাম। বিটিভি'র ২৫ বছর পূর্তি সেই অনুষ্ঠানটি সত্যিই বেশ চমৎকার হয়েছিল।

এছাড়া বিটিভি নিয়ে বলার মত তেমন আর কিছু নেই আমার কাছে। সত্যি বলতে কি রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাটি সব সময় দলীয় কিছু অযোগ্য লোকের চাটুকারীতা আর তোষামোদী ছাড়া দু'একটি আদে (যা হয়তো আমি উল্লেখ করেছি) আর তেমন কোনো ভালো অনুষ্ঠান বানাতে পারেনি। কেবল সরকারে যারা থাকে তাদের নানান প্রপাগাণ্ডা প্রচার করাই যেনো বিটিভি'র প্রধান ধর্ম।
মানসম্পন্ন কোনো অনুষ্ঠান নির্মাণে বিটিভি একটু মনযোগী হলেই তা করা সম্ভব। কিন্তু অযোগ্য লোক দিয়ে তো আর ভালো অনুষ্ঠান বানানো সম্ভব নয়।

সব কিছু নষ্টদের অধিকারে গেছে বাংলাদেশে। সেখান থেকে বিটিভি বাদ যাবে কোন দুঃখে!!!



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।