আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকামুখী যান চলাচল বন্ধ

এর মধ্যে বরিশালসহ দক্ষিণের কয়েকটি জেলা থেকে ঢাকাগামী বিভিন্ন ধরনের পরিবহন বন্ধ রয়েছে।   সকাল থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝিনাইদহ, ঝালকঠী ও চুয়াডাঙ্গার পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে যাত্রী ও মালিক-শ্রমিকরা জানিয়েছেন।

আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে রোববার ‘ঢাকা অভিযাত্রা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে সারা দেশ থেকে জনগণকে ঢাকায় আসার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
অন্যদিকে প্রতিরোধের হুমকি দিয়েছে সরকারি দল।

বরিশাল-ঢাকা বাস চলাচল বন্ধ
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে ঢাকামুখী কোনো বাস ছাড়েনি বলে জানিয়েছেন বরিশাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি আফতাব হোসেন।


তিনি বলেন, “নাশকতার আশঙ্কায় মালিকপক্ষ নিজেরাই বরিশাল থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।
“হরতাল ও অবরোধের নামে বাস ও মানুষ পুড়িয়ে দেয়ায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। ”
রোববারের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আরো সহিংসতা হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের বেশ কয়েকটি টিকিট কাউন্টারের কর্মকর্তারা জানান, সকাল থেকে খুলনা, বাগেরহাট ও পিরোজপুর থেকে তাদের কোনো বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসেনি।
সায়েদাবাদ টার্মিনালের বলেশ্বর পরিবহনের টিকেট বিক্রেতা হিরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে ঢাকা থেকে দুটো ট্রিপ ছাড়া হলেও বাগেরহাট ও পিরোজপুর থেকে কোনো বাস না ছেড়ে আসায় তারাও বাস ছাড়া বন্ধ রেখেছেন।

 
তিনি বলেন, “পুলিশ নিরাপত্তার কথা বলে বাস ছাড়তে দেয়নি। যে কারণে আমরাও ছাড়তে পারছি না। ”
বলেশ্বর পরিবহন লঞ্চ পারাপারের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন করে। সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে প্রথমে যাত্রীদের মাওয়া ঘাটে নেয়া হয়। যাত্রীরা লঞ্চে উঠে পদ্মা পার হয়ে একই পরিবহনের আরেকটি বাসে উঠে গন্তব্য বাগেরহাট, পিরোজপুর, খুলনা যান।

এর পর অন্যপ্রান্ত থেকে আসা গাড়ীর যাত্রীদের নিয়ে ফিরে আসে মাওয়া ঘাটে অপেক্ষমান গাড়িটি।
ফালগুনী পরিবহনের কাউন্টার কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের কোনো গাড়ি খুলনা, বাগেরহাট, রায়েন্দা বা পিরোজপুর থেকে আসছে না। আমরা সকালে ঝুঁকি নিয়ে একটি গাড়ি ছেড়েছি। জানি না ফেরি পাবে কি না। ”
এরপর থেকে পরিবহনের মালিকরা কোনো সিগন্যাল না দিলে আর গাড়ি ছাড়া হবে না বলেও জানান তিনি।


একই বক্তব্য সুন্দরবন পরিবহনের কাউন্টারে থাকা মাসুদ আলমেরও। তিনি বলেন, “কোনো গাড়ি আসতে পারছে না। এখন যদি এখান থেকে সব গাড়ি ছেড়ে দিই তাহলে সব গাড়ি একদিকে চলে যাবে। তখন আমরা সমস্যায় পড়ব। এজন্য আমরা এখান থেকে হিসেব করে গাড়ি ছাড়ছি।


পটুয়াখালী থেকেও ছাড়েনি লঞ্চ-বাস

পটুয়াখালী থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ ও বাস বন্ধ করে দেয়ার খবর মিললেও পুলিশ এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি।
পটুয়াখালী বন্দর ফাঁড়ি পুলিশের এস আই মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, লঞ্চ ঢাকার উদ্যেশে ছেড়ে যাবে কি যাবে না তা তার জানা নেই।
বিকালে বন্দর কর্মকর্তা মো. বদরুল আলমের কার্যালয়ে গিয়ে তার কার্যালয় বন্ধ পাওয়া গেছে। এরপর ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লঞ্চের একাধিক কর্মচারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পুলিশ প্রসাশনের কর্তারা এসে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকার উদ্যেশে লঞ্চ ছাড়তে বারণ করেছেন।


লঞ্চঘাটে অপেক্ষমান যাত্রী ফরিদুল ইসলাম জানান, তিনি সপরিবারে ঢাকা যাওয়ার জন্য ঘাটে এসেছেন কুয়াকাটা থেকে। লঞ্চ না ছাড়ায় তাকে আবার বাড়ি ফিরে যেতে হবে।
ঝিনাইদহ হয়ে বাস বন্ধ
শুক্রবার দুপুর থেকে বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ঢাকার দিকে যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহনের টিকিট কাউন্টারের কর্মচারী বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের  ঢাকাগামী বাস বন্ধ রাখতে বলেছে।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন জানান, পুলিশ কোনো বাসকে ঢাকা বা অন্যস্থানে যেতে বাধা দেয়নি।


তিনি জানান, ঝিনাইদহ থেকে কোনো বাস সরাসরি ঢাকা যায় না। মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর থেকে আসা বাস ঝিনাইদহ থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকা যায়। যাত্রা স্থল থেকে বাস না এলে তার কিছু করণীয় নেই।
ঝালকাঠী থেকে লঞ্চ-বাস বন্ধ
ঝালকাঠী থেকে ঢাকা রুটের লঞ্চ ও বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার বিকাল থেকে জেলা বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি।


ঝালকাঠী হানিফ কাউন্টার ইনচার্জ কামাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মালিক পক্ষের নির্দেশে তারা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে।

প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় ঝালকাঠী ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে নিয়মিত লঞ্চ ছেড়ে গেলেও শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় কোনো যাত্রী ছাড়াই ঘাটে বাঁধা নির্ধারিত সুন্দরবন-২ নামের লঞ্চটি বরিশালের ঘাটের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।
সুন্দরবন-২ লঞ্চের ঝালকাঠী কাউন্টার ইনচার্জ মো. হানিফ বলেন, নাশকতার আশংকাসহ বিভিন্ন কারণে মালিকপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের লঞ্চ যাত্রা বন্ধ রাখা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী কোচ বন্ধ
চুয়াডাঙ্গা থেকেও ঢাকাগামী সব ধরনের যাত্রীবাহী কোচের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, প্রশাসন নিষেধ করায় গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

অবশ্য জেলা প্রশাসন তা স্বীকার করেনি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকাগামী কোচ চলাচল বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক ও পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম জানান, পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে গাড়ি চলাচল কিংবা বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তারপরও ঢাকাগামী কোচ চলাচল বন্ধ রেখেছেন সংশ্লিষ্ট মালিকরা।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. রশীদুল হাসান জানান, “আমাদের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

মালিকপক্ষ কেন গাড়ি চালাচ্ছেন না তা বলতে পারব না। ”
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন জানান, ঢাকাগামী গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। যাত্রী সংকটে লোকসানের ভয়েও মালিকপক্ষ গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে পারে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ক্রীড়া প্রতিবেদক আব্দুল মমিন জানান, তিনি ঢাকায় আসার জন্য পূর্বাশা পরিবহনের দুপুর দেড়টার টিকিট নিয়েছিলেন। কিন্তু সাড়ে ১১টার দিকে তাকে কাউন্টার থেকে ফোন করে গাড়ি ছাড়বে না বলে জানানো হয়।

  
রংপুরে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট

বিরোধী জোটের অবরোধ ও হরতালে শ্রমিক নিহত, যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রংপুর বিভাগের আট জেলায় ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
ফেডারেশনের বিভাগীয় কমিটির ডাকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ধর্মঘট চলবে রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ফেডারেশনের কার্যালয়ে জরুরি সভায় এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধে ৫০ জন পরিবহন শ্রমিক নিহত, বিপুল সংখ্যক যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।


তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘট চলাকালে আট জেলা থেকে দূরপাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস, কোচ, প্রাইভেট কার, জিপ ঢাকায় চলাচল করবে না।
তবে দূরপাল্লার পণ্যবাহী ট্রাক ও অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকবে।
এদিকে রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের তত্ত্বাবধায়ক মোজাম্মেল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঢাকাগামী আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস চলাচল করবে কিনা সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বাগেরহাটেও পরিবহন ধর্মঘট
বিরোধী জোটের অবরোধে বাস ভাংচুর এবং শ্রমিকদের মারধর মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছে জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন।
শুক্রবার ভোর থেকে তারা এই ধর্মঘট শুরু করে।

ফলে ভোর থেকে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।
আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে আসামিদের ধরা না হলে বাগেরহাট জেলার ১৬টি অভ্যন্তরীণ রুটেও যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে বলে মটর শ্রমিক ইউনিয়ন হুমকি দিয়েছে।
জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তালুকদার বলেন, ১৮ দলীয় জোটের টানা অবরোধে জামায়াত-শিবিরের পিকেটাররা বাগেরহাটে অন্তত ৫০টি গাড়ি ভাংচুর এবং বেশ কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করে। এসব ঘটনায় বাগেরহাটের বিভিন্ন থানায় ৪-৫টি মামলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোনো আসামি গ্রেপ্তার করেনি।


বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্লা এই প্রতিবেদককে বলেন, শুক্রবার ভোর থেকে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো পরিবহন ছেড়ে যায়নি। অবরোধের সময় এসব রুটের যে গাড়ি ভাংচুর হয়েছে সেইসব মামলার আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে ১০ বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।