আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেন এই জনভোগান্তি

পরিবহনের অভাবে গতকাল রাজধানীতে হাজার হাজার যাত্রীকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। রাজধানীতে হাতেগোনা দুই-একটি ছাড়া কোনো বাস চলেনি। কর্মস্থলে যেতে সাধারণ নাগরিকদের সিএনজি অথবা রিকশার ওপর ভর করতে হয়েছে। ফলে অন্য সময়ের চেয়ে এ দুটি পরিবহনের ভাড়া ছিল প্রায় দ্বিগুণ। অবরোধ, হরতাল কিংবা ধর্মঘট নয়, গতকাল থেকে শুরু হয়েছে সরকার বা সরকারি দলের অলিখিত অবরোধ। বিরোধী দলের ২৯ ডিসেম্বরের কর্মসূচি ঠেকাতে গত শুক্রবার থেকে সারা দেশের সঙ্গে ঢাকামুখী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বাস, ট্রেন, লঞ্চ কোনোটিই ঢাকায় আসছে না। রাজধানীতেও অদৃশ্য মহলের ইশারায় শতকরা ৯৯ ভাগ বাস ছিল বন্ধ। দুই-একটি টাউন সার্ভিস চললেও তাতে ওঠা ছিল সাধ্যাতীত বিষয়। বলা যায়, বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধের চেয়েও সরকার ও সরকারি দলের অলিখিত অবরোধ ছিল অনেক বেশি সফল। হরতাল-অবরোধ যদি জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের মাধ্যম হতো তবে এদিক থেকে সরকার ও সরকারি দলের কুশীলবরা কৃতিত্ব দাবি করতে পারতেন! সভ্য দুনিয়ায় কোনো সরকার কিংবা সরকারি দল দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে অচল করে দিয়েছে, এমন কোনো নজির নেই। অবশ্য সব সম্ভবের এই দেশে অসম্ভব বলে যে কিছু নেই, তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কিংবা প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগের ঢাকা অবরোধের কর্মসূচি ঠেকাতে একই ধরনের অপকৌশল বেছে নিয়েছিল। এ সরকারের আমলে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঠেকাতেও সরকারের ইশারায় রাজপথে অবরোধ বসে। আজকের বিরোধী দল ঘোষিত কর্মসূচি ঠেকাতেও নেওয়া হয়েছে একই অপকৌশল। প্রতিহিংসাপরায়ণ দুই রাজনৈতিক দলের এই অপকৌশল সম্পর্কে আমাদের বলার কিছু নেই। তবে তারা যেভাবে রাজনীতির নামে জনজীবন অবরুদ্ধ করছেন তা অবশ্যই আপত্তিকর। দেশবাসী কাউকে যা ইচ্ছা তাই করার অধিকার দেয়নি। আমাদের সংবিধানে বিরোধী দলকে ঠেকানোর জন্য পরিবহন ব্যবস্থা অচল করার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। আমরা মনে করি, এই অপতৎপরতা চালিয়ে দেশবাসীর কাছে সরকার নিজেদের ভূমিকা আরও প্রশ্নবিদ্ধ করল। বিরোধী দলকেই শুধু নয়, জনগণকে জব্দ করার যে অপকৌশল বেছে নেওয়া হলো, তা তাদের গণবিচ্ছিন্নতা আরও বৃদ্ধি করল কিনা ভেবে দেখার বিষয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.