আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উইকা (ডাইনিবিদ্যা?)র অ আ ক খ (প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য)

যে মুখ নিয়ত পালায়......। ।


বি দ্রঃ পোস্টে কিছু ছবি আছে। যা অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং অপ্রাপ্তমনস্কদের জন্য নিষিদ্ধ। তাই, খিয়াল কৈরা।



উইকা শব্দটি প্রথম শুনি এক বন্ধুর কাছ থেকে। সে বলল সে উইকা ধর্মের অনুসারী।

আমি তখন এতে কোন আগ্রহ বোধ করি নি।

তারপর কয়েকমাস পরে মেয়েটি জানাল সে মুসলমান হয়েছে। যেহেতু আমি একজন মুসলিম পরিবার এবং সমাজ থেকে তাই আমাকেই জানাল সম্ভবত প্রথম।

আমি তাকে বিভিন্ন জিনিসের ব্যাপারে কিছু সাহায্য করলাম।

তখন একটা পর্যায়ে সে আমাকে জানাল সে ম্যাজিক জানে।
আমি ম্যাজিকে অবিশ্বাসী। ম্যাজিক বলতে হাত সাফাই বুঝতাম। কিন্তু তার কাছ থেকে উইকা, ম্যাজিক, উইচ ইত্যাদি সম্পর্কে জানলাম।

যারা উইকা ধর্মের, মানে উইকান তারা উইচ। উইচ অর্থাৎ ডাইনি সম্পর্কে আমার ধারনা ছিল খুব খারাপ। এরা মানুষের ক্ষতি করে। দেখতে কদাকার। কিন্তু জানলাম এগুলো ঠিক নয়।



সুতরাং আরো সামান্য পড়াশোনার পর উইকানদের কিছু বিষয় নিয়ে এই পোস্ট।


উইকান রেডে



উইকান রা একা একা তাদের আধ্যাতিক অনুশীলন চালাতে পারে অথবা একসাথেও করতে পারে। তাদের একসাথে গ্রুপে আধ্যাতিক অনুশীলনের সাধনা একেক গ্রুপের ক্ষেত্রে একেক রকমের ও হতে পারে। একেক রকমের হলেও তাদের মোরাল একটা স্ট্যান্ড ও আছে। উইকান দের মূল নীতিগুলো এসেছে উইকান রেডে নামের এক কবিতা থেকে।

উইকানদের বিশ্বাস অতি প্রাচীনকাল থেকেই এই কবিতা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চলে আসছে।

পুরো কবিতাটা পড়া যেতে পারে এখান থেকে [লিঙ্ক]

এই কবিতায় উইকানদের একটি গুরুত্বপূর্ন মোরাল ল আছে - “An it harm none, do what ye will.”

তার মানে তাদের যাদুবিদ্যা কারো ক্ষতির কাজে লাগানো যাবে না। আমার প্রাক্তণ উইকান বন্ধুর কাছ থেকে জেনেছি তারা মূলত মানুষের দুঃখ বা কষ্ট দূর করতে এঞ্জেলদের স্মরণ করে। কারো ক্ষতি করার চিন্তা এবং ব্ল্যাক ম্যাজিক এগুলো তাদের জন্য নিষিদ্ধ। তবে কেউ কেউ এগুলোর চর্চা করে।

এই চর্চা তাদের নরকবাসী করার জন্য যথেষ্ট।



উইকানদের যাদুর বৃত্ত



উইকানরা যাদুর বৃত্ত বানায়। দুবার বৃত্ত বানানোর অর্থ একবার গডের জন্য এবং আরেকবার উইকান দেবীর জন্য। তারা বৃত্ত বানিয়ে ভিতরে বসে আত্মাকে ডেকে আনে। বৃত্ত বানানোর আগে জায়গা তাদের পবিত্র জল ছিটিয়ে পরিস্কার করে নিতে হয়।

তারপর মাঝখানে বসে হয় সাধনা। আত্মাকে কিছু অফার করতে হলে সে বস্তু ও নিয়ে যেতে হয়। প্রার্থনা শুরু হয়ে গেলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত বের হওয়া যাবে না। ঘরে বা বাইরে যেকোন জায়গায় করা যায়।

এই বৃত্ত তৈরীর স্টেপ বাই স্টেপ বর্ননায় যাচ্ছি না।

পোস্ট বড় হয়ে যাবে। তবে ছবি দিচ্ছি। আশা করি বোঝা যাচ্ছে। কারণ একটি ছবি = এক হাজার শব্দ।

ম্যাজিক বৃত্ত তৈরী-























ছায়াপুস্তক




যারা উইকান তাদের নিজস্ব একটি বই থাকে।

এতে তারা তাদের যাদুরাজ্যে ভ্রমন সংক্রান্ত বিষয়াদি লিখে রাখে। প্রথমে সাধারনত তারা অন্যদের কাছ থেকে তথ্যাদি নেয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাদের বইটি হয় একান্তই তাদের নিজস্ব যাদুবিত্তান্ত। তাদের হার্বাল হিলিং, পরিবারের ইতিহাস, তারা যা কিছু শিখতে পারে, এবং আত্মরক্ষার কৌশল লেখা থাকে।




আর্থ রিলিজিয়ন



উইকানদের সাধারণত দুই গড – এক মূল গড, দুই উইকান দেবী।

কিন্তু অনেক উইকান অনেক দেব দেবীতে বিশ্বাস করে। কিন্তু তাদের মধ্যে যে জিনিসটা এক তা হল তারা সবাই মনে করে দেব দেবীরা পৃথিবীর ই প্রতিচ্ছায়া। তারা মনে করে পৃথিবী সব ম্যাজিকের উৎস। দেব দেবীদের সংখ্যার ব্যাপারে তাদের মতভেদ আছে। তবে দেব দেবীর লিঙ্গ সংখ্যার সমতায় তারা বিশ্বাস করে।

উইকান ধর্ম দেব এবং দেবী উভয় কে সমান সংখ্যায় একটা ব্যালেন্সে রাখে কারণ তারা উভয়কেই সম্মান করে।

উইকানরা মানে তারা মৃত্যুর পর চলে যাবে সামারল্যান্ডে । সেখানে যতদিন ইচ্ছা থাকা যায়। তারা পূনর্জন্মে বিশ্বাস করে। মনে করে সবকিছু চক্রে আবদ্ধ।

মৃত ব্যক্তি পুনরায় ফিরে আসবে তার যাদু ভ্রমণ শেষ করতে।



ব্ল্যাক ম্যাজিক



উইকা হচ্ছে নিও প্যাগান রিলিজিয়ন। তাই এর মরালিটি অল্ড প্যাগান রিলিজিয়ন , যেগুলো খ্রিস্টান ধর্মের জনপ্রিয়তার সাথে শুকিয়ে গিয়েছিল তাদের মধ্য থেকে আগত। সাধারণত ডাইনি বা ডাইনি বিদ্যা শুনলে মনে হয় এরা শয়তানের উপাসক বা কালো যাদু অনুশীলন করে। কিন্তু বেশিরভাগ উইচ ব্ল্যাক ম্যাজিক কে নেগেটিভ ম্যাজিক হিসেবে দেখে।



কোন কোন ক্ষেত্রে তারা ব্ল্যাক ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারে তবে এটি প্রায় নিষিদ্ধ । ব্ল্যাক ম্যাজিক বিষয়ে তাদের মত হল তাড়াতাড়ি এর ভাল ফল দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত তা খারাপ ফল বয়ে নিয়ে আসে।



ওয়ারলক এবং উইচ



উইকান রা তাদের পুরুষ এবং স্ত্রী উভয়কেই উইচ বলে। উইচের পুরুষ শব্দ ওয়ারলক বললে পুরুষ উইকান রাগ করতে পারে কারণ এটি অপমান জনক শব্দ। যার অর্থ তাদের জন্য শপথ ভঙ্গকারী।



এটা বলা হত তাদের যারা ঈশ্বরের সাথে করা শপথ ভঙ্গ করে উইচক্রাফট এর সাধনা করেছিল।

কিন্তু উইচ শব্দটি তাদের জন্য খারাপ না। একটা কথা আছে, এভ্রি উইকান ইজ এ উইচ, বাট এভ্রি উইচ ইজ নট এ উইকান


পেন্টাকল




উইকানদের প্রতীক। এটি একটি স্টার।

যার পাঁচ অংশ উইকানদের পাঁচ বস্তু নির্দেশ করে – বাতাস, আগুন, পৃথিবী, পানি এবং আত্মা।

এখানে শয়তানবাদীদের (স্যাটানিস্ট) সাথে উইকানদের এই প্রতীকের মিল পাওয়া যায়। স্যাটানিস্টদের প্রতীক একই হওয়ায় উইকানদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছিল। ১৯ শতকে আমেরিকায় শয়তানবাদীদের চার্চ চার্চ অব সাটান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় তাই তারা স্টারের সাথে একটি ছাগলের মাথা লাগিয়ে দেয়। স্টারে ছাগুর মাথা দেখলে বুঝতে হবে এরা স্যাটানিস্ট ( আর ব্লগে ছাগু দেখলে বুঝতে হবে পাকিস্তানিস্ট)।






উইকান প্রথা



উইকা হচ্ছে উর্বরতার ধর্ম। তাই এখানে জন্মের অভ্যররথনা মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝির মত নিরব ও বিষন্ন না। আশীর্বাদ হিসেবে পরিগণিত হয়। নতুন শিশুকে পৃথিবীতে আগমন জানানোর উৎসবের নাম উইকানিং। শিশুর রাশি অনুসারে পূর্ন চন্দ্রের কালে শিশুর উইকান পিতা মাতাকে এই উৎসব করার নির্দেশ দেয়া আছে।

এখানেও বৃত্ত করে, মোমবাতি জ্বালিয়ে , শিশুর নাম দাম রাশি লিখে তারা বিভিন্ন জিনিস করে থাকে।

উইকানদের এই শিশু নিয়ে উৎসব শিশুটিকে পবিত্র করার জন্যে না, যা বিভিন্ন ধর্মে করা হয়। এই উৎসব হচ্ছে শিশুটিকে আশীর্বাদের জন্য । বিভিন্ন উইকানদের রীতি ভিন্ন হলেও মুল থিম এক এবং তা হল শিশুকে নতুন পৃথিবীতে স্বাগত জানানো।



হ্যান্ডফাস্টিং হচ্ছে উইকান বিবাহ।

এরা বিয়ের ক্ষেত্রে যে মন্ত্র মানে তা হচ্ছে, or a year and a day, or as long as love shall stay.”

মানে ভদ্রলোক ও ভদ্রমহিলা যদি ট্রায়াল বিবাহের পর চালিয়ে যেতে রাজি থাকেন তাহলে দ্বিতীয়বার হ্যান্ডফাস্টিং করেন। দ্বিতীয় হ্যান্ডফাস্টিং এ সাধারন বিয়ের শর্তের মত শর্তাদি থাকে।

উইকান ডিভোর্স হচ্ছে হ্যান্ডপার্টিং। বিবাহ বিচ্ছেদের পর তারা বন্ধু হিসেবে থাকতে হয় এবং ইচ্ছে করলে আবার মিলিত হতে পারে।



স্কাইক্ল্যাড প্র্যাকটিস




স্কাইক্ল্যাড অর্থ পরিপূর্ণ নগ্নতা।

এটি শুনলে আশ্চর্যজনক মনে হলে রোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকে এধরনের নগ্ন উপাসনা চলে আসছে। উইকানদের কথা হল তারা নগ্ন হয় ঈশ্বরের কাছে যেতে, যৌনতার কারণে নয়। উইকা যেহেতু উর্বরতার ধর্ম তাই এই নগ্ন উপাসনাকে একটু বেশি ফোকাস করা হয়। খুব কমই শোনা যায় এই উপাসনায় সেক্স করা হয়। বেশিরভাগ উইকানরা এই নগ্ন উপাসনা করে না।

তাই যারা করে তারা উইকানদের কাছে প্রচুর সম্মান পায়।



রেফারেন্সঃ
পোস্টে যুক্ত করা আছে।




সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।