আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কে এই লেন্দুপ দর্জি?



গতকাল বেগম জিয়া পুলিশদের লেন্দুপ দর্জি দর্জি এর ইতিহাস পড়তে বলেন। এর আগে আমি এই ভদ্র লোকের (লেন্দুপ দর্জি) নাম শুনি নাই। তাই বেশ কৌতুহলি হলাম। এবং যখন যানলাম নিজেকে ধিক্কার দিলাম। আমি যে কিছুই জানি না তা আরও একবার উপলদ্ধি করলাম।

যাই হোক আমার মনে হয় আমাদের সাবারই লেন্দুপ দর্জি সম্পর্কে জানা উচিত।

এই ভদ্র লোক ১৯০৪ সালের ১১ই অক্টবর সিকিমের পালইয়ং এ জন্ম গ্রহন করেন। ইনি সিকিম ন্যাসনাল কংগ্রেস এর প্রতিস্ঠাতা। হিমালয়ের পাদদেশে সবুজে ভরা অনিন্দ্য সুন্দর একটি দেশ সিকিম। ৭০৯৬ কিলোমিটার আয়তনের এই স্থানটি পুরো ইতিহাস জুড়েই ছিলো স্বাধীন একটি দেশ।

১৮৮৮ সালে তিব্বত দখলের জন্য বৃটিশরা দখল করে। কিন্তু মাত্র ৪ বছর পরেই আবার স্বাধীনতা ফিরে পায় সিকিমবাসি। ১৯৪৭ সালে ইংরেজরা ভারত ছেরে চলে গেলে স্বাধীনতা অথবা ভারত প্রশ্নে সিকেমে গণভোট হয় এবং সিকিমের জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেয়। তবে 'র' বসে থাকে না।

১৯৭০ সালে ভারতের নীলনকশায় লেন্দুপ দর্জির সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে।

রাজপ্রাসাদের সামনে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে ইন্দিরাগান্ধী সরকার রাজার নিরাপত্তায় সৈন্য পাঠায়। রাজা গৃহবন্দী হন। বিএস দাশ নামের একজনকে ভারত সরকার সিকিমের প্রধান প্রশাসক নিয়োগ করে। ভারতের তাঁবেদার লেন্দুপ দর্জির নেতৃত্বাধীন সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস (এসএনসি) ১৯৭৪ সালে পাতানো নির্বাচনে সংসদের ৩২ আসনের মধ্যে ৩১টি বিজয়ী হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে গণতন্ত্রের সংগ্রাম চলছে, চলবে এই শ্লোগান দিয়ে দর্জির নেতৃত্বে ২৭ মার্চ ১৯৭৫ রাজতন্ত্র বিসর্জন দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।

রাজা কে সেইদিনই ভারতীয় সেনারা গ্রেফতার করে এবং ভারতীয় সেনারা সিকিমে ঘাঁটি গেড়ে বসে। ৬ এপ্রিল ১৯৭৫ এই দিন তাবেদার লেন্দুপ ভারতের সাথে মিশে যাওয়া প্রশ্নে ১টি গনভোটের আয়োজন করে এবং সিকিমবাসী ভারতের সাথে মিলে যেতে চায় বলে বলে রায় দিয়েছে এটা প্রচার করে। এবং ১৬ মে চুরান্ত ভাবে সিকিম হাজার বছরের স্বাধীনতা বিকিয়ে ভারতের রাজ্য হয়ে যায়।

এভাবেই একটি স্বধীন দেশের অপমৃত্যু ঘটে। সবকিছু হয় 'র'এর ষরযন্তে।

। ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক সুধীর শর্মা তার Pain Of Loosing Nation বইয়ে লিখেছেন, "আমাকে লেন্দুপ দর্জি নিজে বলেছেন যে,বছরেস তিন - চার বার আমার সাথে "র" এর লোক দেখা করতো এবং দেশে অশান্তি,অরাজকতা ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে বলতো। কাজ হাসিলের পর পরই ভারত এই শয়তানটাকে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। জীবনের পড়ন্ত বেলায় (২০০৪ সালে) নেপালের একটি সাপ্তাহিকের সাথে কথা (বাণীবদ্ধকৃত) বলতে গিয়ে আত্ম অপরাধ স্বীকার করে দর্জি বলেন, সিকিমকে ভারতভুক্ত করার জন্য আমি সবকিছুই করেছি। কিন্তু কার্যসিদ্ধির পর ভারত আমাকে ভুলে গিয়েছে, আমাকে উপেক্ষা করেছে।

তিনি বলেন, আগে আমাকে লালগালিচা অভ্যর্থনা দেয়া হতো, এখন দ্বিতীয় সারির রাজনীতিকের সাথে সাক্ষাৎ করতে আমাকে চাইলে কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়। ২০০৭ সালের ২৮ জুলাই, দীর্ঘ দিন লিভার রোগের যন্তনা সহ্য করার পর লেন্দুপ সাহেব পশ্চিম বঙ্গের কালিম্পং এ মারা যায়। মারা যাওয়ার সময় লেন্দুপ সাহেব ছিলেন একেবারে নিঃসঙ্গ, নিঃস ও স্বেচ্ছানির্বাসিত।
সবারই মনে হয় লেন্দুপ সাহেবকে নিয়ে একটু ভাবা উচিত,কোন নব্য লেন্দুপের পাল্লায় পরার আগেই!!!!
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।