আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চুরি নয় প্রেম করতে গিয়েছিলাম

দুর্গম পথ যাবো পেরিয়ে রঙ্গিন এক স্বপ্ন বুকে......।

আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় একটা অংশ হচ্ছে হাইস্কুল জীবন। হাইস্কুলে পড়ার সময় স্কুল হোষ্টেলে থাকতাম। তখন হোষ্টেল সুপাররা একের পর এক নিয়ম কানুন বেঁধে দিতেন আর আমরাও পাল্লা দিয়ে তা অমান্য করতাম। স্যাররা সবসময় বলতেন না বলে কখনো ক্যাম্পাসের বাহিরে যাওয়া যাবেনা আর আমাদের প্রধান কাজই ছিল স্যারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পুরো শহর চষে বেড়ানো।

অবশ্য সবই চলত স্যারদের আড়াল করে ধরা পড়লে রক্ষা হতনা। এরমধ্যে আমার কিছু বন্ধু আবার আশেপাশে প্রেমিকাও জুটিয়ে ফেলেছে। আমার রুমমেট বন্ধু ফরহাদ ছিল তাদেরই একজন। তাদের প্রেম ছিল আরেক দুঃসাধ্য ব্যাপার একে তো হোষ্টেলে মোবাইল নিষিদ্ধ তাই গোপনে মোবাইল চালাইলেও কথা বলা তেমন সহজ ছিলনা তাছাড়া ফরহাদকে বের হতে হত স্যারের চোখ এড়িয়ে আর ওর প্রেমিকা সাবিনাকে মায়ের চোখ এড়িযে। এই দুটো যেদিন একসঙ্গে হতো সেদিনই ওরা একটু দেখা করার সুযোগ পেত।

যা ক্বচিত্‍ দু একদিন সম্ভব হত। তাই ও সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকত কিভাবে একটু দেখা করবে তার জানপাখির সাথে। রমজান মাসের ঘটনা একদিন সেহরী খেয়ে পেটে হাত বুলাতে বুলাতে রুমে যাচ্ছি হঠাত্‍ ফরহাদ হাত ধরে টান দিল
-কি?
:আমার সাথে একটু আয় না
-কই যাবি?
:সাবিনাদের বাড়ি
আঁতকে উঠলাম
-শালা মাথা খারাপ হইছে এই রাত্রে যাইবা প্রেম করতে?
:আরে আয় তো এখন স্যার রা নামাজ পইড়া ঘুমাইব ওর আম্মুও ঘুমাইবা
-আর এই ফাঁকে তুমি প্রেম করবা। ভাবলাম নাহ বুদ্ধি খারাপ না সবাই ঘুমাইব ওরা দুজন প্রেম করবে আর আমি অভাগা দূরে থাইকা পাহারা দিমু।
বললাম চল
চারদিক চেয়ে আস্তে করে বের হয়ে গেলাম দুজনে স্কুল থেকে কিছুদূর হেঁটে একটা নীচু বিলের মতো জায়গায় বাউন্ডারি করা ওদের বাড়ী আমি আর ফরহাদ গিয়ে দাঁড়ালাম চারদিক তখনও অন্ধকার তবে ধীরে ধীরে একটু একটু ফর্সা হতে শুরু করেছে ওদের ঘর থেকে টুকটাক কথাবার্তার আওয়াজ শুনা যাচ্ছে ফরহাদরে বললাম
-কল দে
:ব্যালেন্স নাই
-ধ্যাত্তেরি
ওর রুমের সামনে গিয়ে দেখি জানালা খোলা আর ও অন্যদিকে তাকিয়ে বসে আছে জানালায় দুইটা টোকা দিয়ে ডাকলাম
-সাবিনা এই সাবিনা
আমার ডাকে অস্বাভাবিক কিছু ছিল নাকি অন্ধকারে আমাদের চিনতে না পেরে ভয় পেয়েছে জানি না মেয়ে দেখি আঁতকে উঠে চোখ মুখ বন্ধ করে "চোর" "চোর" বলে চিত্‍কার শুরু করল।

আমি প্রথমে হতভম্ব হয়ে ওকে থামাতে চাইলাম ফরহাদ হাত ধরে টান দিতেই হুশ হল আর পড়িমরি করে দিলাম দৌড়। ও ঠিকমত বাউন্ডারী পার হলেও আমি পিঁছলিয়ে আছাড় খেলাম কলের গোড়ায় বুকটা বোধ করি ভেঙ্গেই গেল কিন্তু তখন কি আর এসব দেখার সময় আছে দৌড়ে স্কুলের কাছে এসে তবে থামলাম। এতক্ষনে বুকের ব্যাথাটা টের পেলাম বুক চেপে হাঁপাচ্ছি আর ফরহাদকে বকছি শালা ভাবছস আজ কি কেলেঙ্কারীই টা না হত ওর মা দেখলে, স্কুলে অভিযোগ করলে আর মুখ দেখাতে পারতাম না। আর যেই মহিলা বাপরে বাপ অভিযোগ না করে কি ছাড়তো। এ সময় ওর মোবইলে সাবিনার ফোন বললাম দেখি কি বলে লাউডস্পীকার দে।


হেলো
হাঁ বলো
"জানো একটু আগে আমাদের বাসায় চোর আসছিল হি হি তবে উচিত্‍ শিক্ষা পাইছে একদম জুতা টুতা রাইখা পালাইছে একটা তো আবার কলের গোড়ায় আছাড়ও খাইছে হি হি হি" দুজনে
পায়ের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলাম যে একজনের পায়েও জুতা নাই।
বললাম "ফোন কাট শালা বেচে গেছিস তোর প্রতি মেয়ের খেয়াল কম। নাইলে বলত এর মধ্যে একজোড়া জুতা না ঠিক তোমার জুতার মত হি হি হি !"

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.