আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী লীগ সরকারের দেয়া নির্বাচনী অঙ্গীকার বেশিরভাগই.....

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। উদুর পিন্ডি বুদুর ঘাড়ে। বা A bad works man always quarrel with his tools. যাই বলুননা কেন নিজের কাজের দায় বা ওয়াদা কিন্ত থেকেই যায়। অন্যের উপর দোষ দিয়ে বা অজুহাতে পার পওয়ার চেষ্টা হাস্যকর। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার আগে নির্বাচনী অঙ্গীকারে বড় বড় ওয়াদা করেছিল জানা আছে সবার।

কিন্তু চার বছরে কি করল আওয়ামী লীগ সরকার? কাকে দোষ দিয়ে বা অজুহাত দিয়ে পার পেতে চান? নাকি কাজের কাজ কিছু করেছেন? জামায়াত-বিএনপির ধ্বংসাত্মক রাজনীতির মধ্য দিয়ে সরকার চার বছর পার করেছে। এই চার বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের দেয়া নির্বাচনী অঙ্গীকার বেশিরভাগ বাস্তবায়নও করে গেছে। বাকি অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের শেষ বছরে পা দিয়েছে সরকার। বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অর্জন দেশে-বিদেশে প্রশংসা পেয়েছে। দিন বদলের অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এসে সরকার সব সময় জনগণের পাশেই রয়েছে।

একটি সংস্থার রিপোর্টে দেখা গেছে, দেশে সুশাসন, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা, অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সমাজের সব জায়গায় কমবেশি দিন বদলের ছোঁয়া লেগেছে। জাতির সবচেয়ে বড় কলঙ্ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার এবং তার রায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। শুরু হয়েছে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ।

ইতোমধ্যে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে কিছু দাগী যুদ্ধাপরাধীকে। তাদের বিচার কাজ অনেকটাই শেষের পথে। শেষ হয়েছে বিডিআর বিদ্রোহের বিভাগীয় বিচার কাজ। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী অন্যান্য গুরুতর অপরাধীর বিচার কাজেও অগ্রগতি রয়েছে।

বিভিন্ন স্থানে নানা দুর্যোগে সরকারের গৃহীত তাৎক্ষণিক ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। সাহসিকতা ও গভীর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ সরকার সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে দুর্যোগ মোকাবেলায়। সম্প্রতি মর্মান্তিক গার্মেন্টস্ অগ্নিকা-ে নিহতের পরিবারকে নগদ ৬ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত ও আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। সরকার তার মেয়াদকালে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে।

জাতীয় সংসদকে আরও কার্যকরী এবং সংসদীয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রশাসনের নানাস্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে আরও সুসংহত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করা হয়েছে। যেকোন সরকারের তুলনায় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। বেড়েছে জাতীয় প্রবৃদ্ধি, কমেছে মুদ্রাস্ফীতি।

জিডিপি প্রবৃদ্ধির গড় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ১১ দশমিক ৫৯ থেকে কমে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ হয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি ১৩ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আর্থিক মন্দা থাকার পরেও বাংলাদেশের রেমিটেন্স প্রবৃদ্ধি বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সাত দিনে রেমিটেন্স এসেছে ৩০ কোটি ডলার।

এর আগে অক্টোবর মাসে ১৪৫ কোটি ডলারের রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স দেশে আসে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১২ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রয়েছে। চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নবেম্বর) ৬১২ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ শতাংশ বেশি। দেশের রফতানি বাণিজ্যকে উৎসাহ দেয়ার পাশাপাশি রফতানি বাড়ানোর লক্ষ্যে চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের রফতানি খাতে নগদ সহায়তা ও ভর্তুকি ঘোষণা করেছে সরকার।

বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করা। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রার ধারাবাহিক সাফল্যে বিশ্বব্যাংকের ‘বিশ্ব উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০১৩’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের তালিকায় চীন, ব্রাজিল, সিঙ্গাপুর ও তুরস্কের পরেই বাংলাদেশের স্থান রয়েছে। বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার প্রেক্ষাপটেও ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশে জাতীয় বাজেটে এক লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ করা হয়। রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৫টি পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে নগদ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে ইউরোপের ২৭টি দেশসহ প্রায় ৩৭টি দেশে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে।

রফতানি আয় বৃদ্ধি হয়েছে শতকরা ১১। এতে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার যুগে বাংলাদেশ সবল অর্থনীতি নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বাড়ছে এবং ২০৫০ সাল নাগাদ প্রবৃদ্ধি পশ্চিমের উন্নত দেশগুলোকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। উন্নয়নের গতিধারায় নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ঢাকাকে দুটি সিটি করপোরেশনে বিভক্ত, রংপুরকে বিভাগ ও সিটি করপোরেশনসহ, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের প্রাণভোমরা কৃষি আর কৃষকের মাঝে নিহিত রয়েছে।

২০১২-১৩ অর্থবছরে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের বরাদ্দকৃত ব্যয় প্রাক্বলন করা হয়েছে বাজেট ব্যয়ের প্রায় ৫০ দশমিক ৮২ শতাংশ, যা জিডিপির ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২২ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ২০১৫ সালে জিডিপির ৩ শতাংশ ব্যয় করার কথা রয়েছে। ঘরে ফেরা কর্মসূচী, একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রায়ণ প্রকল্প ইত্যাদি সুনির্দিষ্ট প্রকল্প ও কর্মসূচী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

দারিদ্র্যের হার কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ। গত অর্থবছরের মতো ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৫ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বিদেশী বন্ধুদের সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে সর্বোচ্চ পদক স্বাধীনতা সম্মাননা দেয় সরকার। এই সরকার দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সমুদ্রসীমা অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে আইনী লড়াই শেষে অর্জন করে।

বাংলাদেশের মূল ভূখ-ের প্রায় সমপরিমাণ ১ লাখ ১১ হাজার বর্গ কিলোমিটার সমুদ্রবক্ষের ওপর সার্বভৌমত্ব অর্জন করে যা বাংলাদেশের জন্য একটি অভূতপূর্ব সাফল্য। সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর নিরলস পরিশ্রমের ফলে ৩৫৯৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫১টি বিদ্যুত কেন্দ্র বাণিজ্যিকভাবে চালু করেছে। এ বছর সর্বোচ্চ ৬৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ৮৩১৫ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় প্রায় ২৪ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।

শিক্ষা জাতির মেরুদ-। সরকার শিক্ষার গুরুত্ব বুঝে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন এবং সংস্কার কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এই দরিদ্র দেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করতে গরিব ও মেধাবী ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে ৯৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ শিশুকে বিদ্যালয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ৪৮ শতাংশ থেকে কমে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। এছাড়াও ২০১৮ সালে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বছরের শুরুতেই মাধ্যমিক পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। ২০১২ সালে ২৩ কোটি পাঠ্যপুস্তুক বিতরণ করা হয়-২০১৩ সালের ১ জানুয়ারিতে নতুন পাঠক্রম (কারিকুলাম) অনুযায়ী লিখিত প্রায় ২৭ কোটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সময়মতো বই বিতরণ করায় এখন জানুয়ারি থেকেই ক্লাস শুরু হচ্ছে।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সকল পাঠ্যপুস্তক নিয়ে ই-বুক হিসাবেও চালু করা হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নির্ধারিত বছর ২০১৫ সাল। কিন্তু বাংলাদেশ তার অনেক আগেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ছেলে ও মেয়েদের সংখ্যাসমতা অর্জন করেছে। উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। শিক্ষায় ছেলেমেয়েদের সমতা অর্জন এখন সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আদর্শ (মডেল) দেশ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

এছাড়াও বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের জন্য ইতোমধ্যে বেশকিছু নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। আরও ৬টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কাজ চলছে। সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারী খাতে শিক্ষা বিস্তারে সরকার ২০১২ সালে ১৬টি নতুন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে। চালু হয়েছে চিকিৎসা শিক্ষার জন্য নতুন কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ। বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস ও স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।

সরকার আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে বাড়িয়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। সমৃদ্ধি অর্জন করতে হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ বেশ দরকারী। যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে ঢাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দর থেকে শুরু করে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, গোলাপবাগ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত যাবে। এছাড়া দুটো লিংক মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে তেজগাঁও হয়ে এবং পলাশী থেকে মগবাজার রেলক্রসিং হয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে।

গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার, কুড়িল ফ্লাইওভার এবং মিরপুর থেকে বনানী পর্যন্ত ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। রাজধানী ঢাকায় যানজট নিরসনে মেট্রোরেল বাস্তবায়ন প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে ৫৩০টি নতুন বাস আমদানি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গে তিস্তা সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে দু’টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ এবং একটি ৩১০-৩০০ ও দুটি ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ সংযোজন করা হয়েছে।

বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে এবং সেই লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলাফল, প্রায় ১০ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও তথ্য সেবা নিচ্ছে এবং প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট সেবা নিচ্ছে। ২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের ৪৫৮২টি ইউনিয়নে তথ্য ও সেবাকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। টেলিকমিনিকিউশন খাতে তৃতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্ক থ্রিজি চালু হয়েছে, এখন মোবাইল ফোনেই টেলিভিশন দেখা যাচ্ছে। আগামী বছর ফোর-জি চালু করার কথা চিন্তা করা হচ্ছে।

দেশে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন এবং তথ্য কমিশন গঠন করেছেন। ফলে মিডিয়া এখন পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে। ইতোমধ্যে ১৬টি নতুন টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ১৪টি কমিউনিটি রেডিও এবং ৮টি এফএম রেডিও খোলার অনুমতিও দেয়া হয়েছে। ‘সংসদ বাংলাদেশ’ নামে স্বতন্ত্র টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে সংসদ অধিবেশন জন সাধারণের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।

সরকার দারিদ্র্য নিরসনে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সামাজিক নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন খাতে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ফলে দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে সঠিক জনসংখ্যা এবং সম্পদের তথ্য জানা অত্যন্ত জরুরী। এই সরকার তার মেয়াদকালে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করে পঞ্চম আদম শুমারি ও গৃহগণনার কাজ। রাজধানী ঢাকার সৌন্দর্য বর্ধন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে হাতিরঝিল প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে যা জানুয়ারিতেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে।

সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে একটি আধুনিক সেনাবাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ নামে একটি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য চীনের তৈরি অত্যাধুনিক ১৩টি এমবিটি-২০০০ ট্যাংক, তিনটি সামরিক উদ্ধারযান বিডব্লিউ-৬৫৪ ও তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্তকরণ রাডার স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ২০১৯ সাল নাগাদ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণে নৌবাহিনীতে দুটি অফসোর ভ্যাসেল ও দু’টি হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে ভেসেল যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে প্রথমবারের মতো আকাশে নিক্ষেপনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কক্সবাজারে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিমানঘাঁটি ও রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

শিশু মৃত্যু হার হ্রাস কল্পে ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকার অর্জন করে এমডিজি এওয়ার্ড। মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের বিরল সম্মাননা ‘সাউথ সাউথ’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। বিশ্বের শীর্ষ জনমত জরিপ প্রতিষ্ঠান গ্যালাপের এক জরিপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মকা-ের প্রতি ৭৭ শতাংশ বাংলাদেশীর সমর্থন রয়েছে। আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন গবেষক ২২টি গণতান্ত্রিক দেশের ওপর গবেষণা চালিয়ে বিশ্বের চার নারী নেত্রীকে আয়রন লেডি (লৌহমানবী) হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম।

এছাড়াও ৭০০ কোটি মানুষের এই বিশ্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শান্তির মডেল জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল সম্মাননা। সরকার তার মেয়াদের ৪ বছর অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে পার করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদলের নানামুখী দেশী ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে দেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সরকার। উন্নয়নের এই গতিধারায় বাংলাদেশ অচিরেই সোনার বাংলায় পরিণত হবে।

যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই সোনার বাংলার কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.