আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছোট গল্প- যুগল ছ্যাকা

নিজেকে খুঁজে বেড়াচ্ছি

কাল থেকে মেয়েটির চেহারা মাথায় সেভ হয়ে গেছে। কোনভাবেই তা ডিলিট করতে পারছে না মামুন। এমন কোন আহামরি মেয়ে তো না। ঘন চুল , শ্যামলা চেহারা, নীল চোখ। হ্যা চোখ দুটি আহামরি বটে।


-নিজে নিজে হাসছিস কেন মামুন?
মামুন চমকে মায়ের দিকে তাকালো।
: না মা এমনিতেই হাসলাম। একটা কথা মনে পড়ল তাই।
বলেই মামুন স্কুলের পথে বের হয়ে গেল। আজ কি মেয়েটাকে দেখবে সে? মেয়েটা মনে হয় তাদের জুনিয়র।

কারণ মেয়েটা যখন মামুনকে ডেকেছিল তখন ভাইয়া ডেকেছিল।
-ভাইয়া আপনাকে হোসাইন স্যার ডেকেছেন। ওই যে স্যার ওখানে।
মেয়েটা মামুনকে ওইদিকে ইশারা করে দেখালেও মামুনের চোখ আটকে রইল তার দিকে। চোখ সরাতে পারল না সে।


এসব ভাবতে ভাবতে অন্যমনস্ক হয়ে হাটছিল মামুন। হঠাত্‍ পিঠে প্রচন্ড জোরে চড় অনুভূত হল তার। আর কেউ না। জাফর। মানুষ মানুষকে দেখলে কেমন আছে হালচাল জিজ্ঞাসা করে।

এই জাফরের বাচ্চা অমানুষিক ভাবে চড় বসিয়ে দেয়। তারপরেও জাফরই তার বেস্ট ফ্রেন্ড। ছোটবেলা থেকে জাফর আর সে সব একসাথে করে। ফেলও করে একই সাবজেক্টে। বাংলায়।


-তুই যখন বিয়ে করবি তখন তোর বউয়ের বাপকেও কি এভাবে সম্বোধন করবি?
: আই থিংক সো ডুড। বলেই এক গাল হাসি দিল জাফর। স্কুলের গেটে ঢোকা মাত্র জুনিয়র ক্লাসের আসিফের সাথে দেখা হয়ে গেল তাদের। তার সাথে কুশল বিনিময় করছিল তারা এমন সময় মেয়েটি আসল।
- থ্যাংকস ফর দ্যি বুক আসিফ।

কাল কোচিংয়ে গেলি না কেন? বইটা কষ্ট করে স্কুলে আনা লাগলো আমার।
: সরি শারমিন। কাল অসুস্হ ছিলাম রে তাই যাই নি।
মেয়েটার নাম তাহলে শারমিন। এত সহজে নামটা জানা হয়ে যাবে ভাবে নি শারমিন।

মনে মনে খুশি লাগল মামুনের।
: দোস্ত এটা মেয়ে নাকি পরী?
জাফরের দিকে ঘুরে তাকাল মামুন। মামুন কিছু একটা বলতে যাবে এমন সময় জাফর বলতে লাগল "আই নিড শারমিন। আই নিড শারমিন" মামুন কি বলবে ভেবে পেল না। ছোটবেলা থেকে জাফরের সাথে সব করে এসেছে সে।

প্রেমটাও একসাথে করবে নাকি! সারা ক্লাস উদাস মুখে বসে রইল মামুন। ছুটির পর সিদ্ধান্ত হল পরদিনই শারমিনকে প্রপোজ করা হবে।
পরদিন টিফিন পিরিয়ডে ক্যান্টিনের সামনে অপেক্ষা করতে লাগল তারা। শারমিনকে দেখে বুক শুকিয়ে গেল জাফরের। হাত জোড় করে মামুনকে সে মিনতি করল শারমিন কে নিয়ে আড়ালে আসতে সে ওখানে অপেক্ষা করবে।

মামুনকে একরকম ঠেলে পাঠালো সে। মামুন কি বলবে মনে মনে ঠিক করল। শারমিনকে ডাকবে। ঠিক সেই সময় সে দেখল কলেজের এক ভাইয়া এসে শারমিনকে হাত ধরে নিয়ে গেল। আড়ালে নিয়ে আইসক্রিম চকলেট খাইয়ে দিতে লাগল।

মামুন আর জাফর মুহুর্তেই ভাস্কর্যে পরিণত হল।

সমুদ্রের বেড়ীবাঁধে পাশাপাশি শুয়ে আছে মামুন আর জাফর। দৃষ্টি আকাশের দিকে। আর গোপন রাখতে না পেরে জাফরকে নিজের প্রেমের কথাটাও জানিয়ে দিল মামুন। কিছুক্ষন চুপ থেকে দুজনই সাগরের দিকে দৌড় দিল হাসতে হাসতে।

ভাগ্যভাল যুগল ছ্যাকা খেয়েছিল তারা। নইলে এত সহজে কি তারা ভুলতে পারত প্রথম ছ্যাকার দুঃখ


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।