আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেউ বলে এটা বিদআত, কেউ বলে ঐটা বিদআত? আসলে কোন টা বিদআত??

بسم الله الرحمن الرحيم -الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على خاتم الأنبياء والمرسلين، وعلى آله وصحبه أجمعين، وعلى من تبعهم بإحسان إلى يوم الدين

কেউ বলে এটা বিদআত, কেউ বলে ঐটা বিদআত? আসলে কোন টা বিদআত?? সাধারন মুসলমান কোনদিকে যাবে মানে পালন করবে?

আসুন আমরা জেনে নিই বিদআত কি??

ইসলামি পরিভাষায় বিদআত হল আল্লাহ‌র দ্বীনের মধ্যে নতুন করে যার প্রচলন করা হয়েছে এবং এর পক্ষে শরীয়তের কোন সাধারণ কিংবা সুনির্দিষ্ট দলীল নেই।
দলীল বলতে আল কুর’আন এবং সহিহ হাদিস বুঝায়।

বিদআত পাপের তালিকায় অনেক বড় পাপ, শিরকের পরেই এর স্থান। এর কারণ বিদআত করা মানে আল্লাহকে খুশি করতে এমন কিছু করা যা রসুলুল্লাহ (সাঃ) করেননি অথবা করতে বলেননি।

সহজভাবে বললে, ইসলামে নব্য কোন কিছুর আবিস্কারই হল বিদ’আত।




যে আমলটি বা আকীদা কুরআন ও সহীহ হাদিসের দলিল দ্বারা প্রমানিত নয় সেটা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। আর রাসুল (সাঃ) বিদ’আতের কোন লিস্ট করে দিয়ে যান নাই যে লোকেরা লিস্ট দেখে দেখে বলবে যে অমুক অমুক আমলগুলো বিদ’আত। কাজেই কেউ যদি বলে, অমুক আমলটি করা যে বিদ’আত সেটার দলিল দেন, এটা নিছক সেই ব্যক্তির মূর্খতা বা অজ্ঞতা।


“তোমরা (দ্বীনের) নব প্রচলিত বিষয়সমূহ থেকে সতর্ক থাক। কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয় বিদআ‘ত এবং প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা”।

সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৯৯১ ও সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৭৬ তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান ও সহীহ বলেছেন।



“নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহ্‌র কিতাব এবং সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদের আদর্শ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল (দ্বীনের মধ্যে) নব উদ্ভাবিত বিষয়। আর নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫৩৫ ও সুনান আন-নাসায়ী, হাদীস নং ১৫৬০, হাদীসের শব্দ চয়ন নাসায়ী থেকে

শয়তান খুব খুশি হয় কেউ যদি বিদ’আত করে।

কারন, কেউ যদি ভুলবশত কোন গুনাহের কাজ করে ফেলে তবে তার মধ্যে একসময় পাপবোধ কাজ করে এবং পরে সে হয়তো তউবা করে আল্লাহপাকের কাছে মাফ চেয়ে নিতে পারে। কিন্তু বিদ’আত করার সময় কোন মানুষ ভাবে যে সে একটা ভাল আমল করছে। কাজেই বিদ’আতের জন্য সেই ব্যক্তির তউবা করার কোন সম্ভাবনা থাকে না। এই জন্যই শয়তান খুব খুশি হয়। আর বিদ’আতের পরিনাম জাহান্নাম।

কাজেই বিদ’আতের ব্যাপারে সবাই সাবধান হন।

বিদআত থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের যা করতে হবে তা হল সুন্নাত সম্পর্কে জানা। কোন কাজ রসুলুল্লাহ(সাঃ) কিভাবে করতেন সেটা কুর’আন এবং সহিহ সুন্নাহের দলীল থেকে আমাদের জেনে নিতে হবে। এ অভ্যাস জীবনের প্রত্যেক স্তরের প্রয়োগ করতে হবে। নামায কিভাবে পড়ব এটা যেমন রসুলের(সাঃ) এর সহিহ হাদিস থেকে শিখে নিব ঠিক তেমনি মানুষ মারা গেলে কি করতে হবে তাও আল্লাহর রসুল(সাঃ) থেকেই শিখতে হবে।



বিদআতের বৈশিষ্ট্য:-

* বিদআতকে বিদআত হিসেবে চেনার জন্য সুনির্দিষ্ট কোন দলীল পাওয়া যায় না; তবে তা নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে মূলনীতিগত ‘আম ও সাধারণ দলীল পাওয়া যায়।

* বিদআত সবসময়ই শরীয়তের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও মাকাসিদ এর বিপরীত ও বিরোধী অবস্থানে থাকে। আর এ বিষয়টিই বিদআত নিকৃষ্ট ও বাতিল হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। এ জন্যই হাদীসে বিদআতকে ভ্রষ্টতা বলে অভিহিত করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদআত এমন সব কার্যাবলী সম্পাদনের মাধ্যমে হয়ে থাকে যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম ও সাহাবাদের যুগে প্রচলিত ছিল না।



কেউ যদি সত্যটা জানার পরেও গ্রহণ না করে গোমরাহীতে লিপ্ত হয় তাহলে কি বা করার আছে? যার যার কাজের হিসাব তার নিজেকেই দিতে হবে। সাবধান করার দায়িত্ব বলে সাবধান করছি। সত্য সরল পথ গ্রহণ করলে নিজেরই উপকার হবে আর জানার পরও সত্যটা গ্রহণ না করলে সেদিন (বিচার দিবসে) কাউকে দোষ দিয়ে পার পাওয়া যাবে না।

আমাদেরকে বুঝতে হবে সিরাতাল মুস্তাকিম একটাই, আর সেটা হল রসুলুল্লাহ (সাঃ) এবং তার সাহাবাদের পথ। এ ছাড়া অন্য যে পথেই মানুষ যাবে সে পথ যত সুন্দর মনে হোক না কেন বা যত কষ্টের হোক না কেন সেটা আল্লাহ থেকে শুধু দূরেই নিয়ে যাবে।



রাসুল (সাঃ) এর বিদায় হজ্জের ভাষণের সামান্য কিছু অংশ উল্লেখ করছি – ”হে লোক সকল! আমার পর আর কোনো নবী নেই, আর তোমাদের পর কোনো উম্মতও নেই। আমি তোমাদের কাছে দু’টো জিনিস রেখে যাচ্ছি। যত দিন তোমরা এ দু’টোকে আঁকড়ে থাকবে, তত দিন তোমরা গুমরাহ হবে না। সে দু’টো হলো আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাত। তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি থেকে বিরত থাকবে।

কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা দীনের ব্যাপারে এই বাড়াবাড়ির দরুন ধ্বংস হয়েছে। ”



রাসুল (সাঃ) এর বিদায় হজ্জের ভাষণের পর কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হলোঃ ”আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। ” [আল-মায়িদাহঃ ৩]

আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বেই দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণতা লাভ করেছে যার প্রমান উপরে উল্লেখিত কুরআনের আয়াত।

কাজেই দ্বীন ইসলামে নতুন কোন সৃষ্টির কোন সুযোগ নেই। রাসুল (সাঃ) বলে গেছেন কুর’আন ও রাসুলের (সাঃ) সুন্নাহ আঁকড়ে ধরতে।

আল্লাহ আমাদের বিদআত থেকে বেঁচে রসুলের(সাঃ) সুন্নাত মেনে চলার মানসিকতা ও সামর্থ্য দিন। আমিন।


তাবলীগ বিদআত কি না?


বিশ্ব ইজতেমার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস । । কিছু প্রশ্নের উত্তর।




ঈদে মিলাদুন্নাবৗ সাঃ পালন করা বেদআত


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।