আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আগে বিদেশিদের এত লম্ফঝম্ফ ছিল না

বাংলাদেশ নিয়ে এত কথা বিদেশিরা আগে কখনো বলেনি। অনেকে বলেন, ২০০৬ সালে বিদেশি কূটনীতিকরা আমাদের রাজনীতির সঙ্গে অনেক বেশি যুক্ত ছিলেন। সেদিনও তো এত লম্ফঝম্ফ দেখিনি। কী কারণে বিদেশিরা আমাদের নিয়ে এত কথা বলছেন সেটা বুঝতে হবে। তাদের বারবার উদ্বেগ প্রকাশ বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক।

কূটনৈতিক ভাষায় বিদেশিরা খুব শক্ত কথা না বললেও তাদের ছোটখাটো অনেক সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। আর আন্তর্জাতিক কমিউনিটির সঙ্গে সুসম্পর্ক না রেখে এত বড় জনগোষ্ঠীর দেশকে বিকশিত করা যাবে না। রবিবার চ্যানেল টোয়েন্টিফোর'র টকশো 'মুক্তবাক'-এ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন। মাহমুদুর রহমান মান্নার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে যেসব প্রতিক্রিয়া এসেছে তার কূটনৈতিক ব্যাখ্যা করলে এটা পরিষ্কার তারা নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আরেকটা নির্বাচন চাইছে।

অনেকে তাদের বিবৃতিকে আংশিক বা ভুল ব্যাখ্যা করছেন। বলছেন, বিদেশিরা তো বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাইছে। সেটা চাওয়াই স্বাভাবিক, কারণ এটা একটা সাংবিধানিক সরকার। পাশাপাশি বাইরের দেশগুলো এও বলেছে যে, আমরা চাই বাংলাদেশে জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী একটা প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার থাকবে। এমনকি ভারতের বিবৃতির তৃতীয় বাক্যেই আছে তারা মনে করে, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপূর্ণ সরকার এ দেশে থাকবে।

রাশিয়ার বক্তব্যেও ওই বিষয়টি আছে। বক্তব্যগুলো বিদেশের যে কোনো নাগরিক কিন্তু দিচ্ছে না। বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে। এটা কি দেশ হিসেবে আমাদের সবলতার লক্ষণ নাকি দুর্বলতার লক্ষণ?

তিনি বলেন, আমি নির্বাচন-উত্তর বিভিন্ন দেশের ১২টি প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করেছি। সেখানে তিনটি শব্দ বারবার ঘুরেফিরে এসেছে।

দুঃখিত, চিন্তিত আর হতাশ। তারা বারবার সহিংসতার বিষয়টি সামনে এনেছেন। এরপর তাদের বক্তব্যে এসেছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের বিষয়। এসেছে সংলাপের বিষয়। সবশেষে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশের অর্জন যেন হারিয়ে না যায়।

মূলত, বাংলাদেশে কী হচ্ছে না হচ্ছে তা নিয়ে দুনিয়ার চিন্তাশীল মানুষেরা চিন্তিত। এর অর্থ আমি কিছুটা গুরুত্ব পেলাম। কিন্তু সেই গুরুত্বটা মাতৃমৃত্যুর হার কমা বা দারিদ্র্য কমার জন্য নয়; সহিংসতা বৃদ্ধি, নির্বাচন চুরি হওয়া ও আগামী দিনের অর্থনৈতিক সংকট বেড়ে যাবে কিনা সেটা নিয়ে। গত দুই দশকের ভাবমূর্তির পরিবর্তনটা এক ধাক্কায় পেছনে চলে গেল। ড. দেবপ্রিয় বলেন, অনেকেই বলছেন বর্তমান সরকারকে তো নিন্দা করে ফেলে দিল না।

কূটনীতির ভাষায় একটা সার্বভৌম দেশ সম্পর্কে খুব বেশি কঠোর ভাষা ব্যবহার করা যায় না। সবাই ঘুরেফিরে জিএসপি থাকা-না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করছে। মনে রাখতে হবে বিদেশিরা নরমভাবে বারবার একটা কথা বলছে। আপনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। মনে করছেন কিছুই তো হচ্ছে না।

একটা পর্যায়ে দেখবেন যা কখনো ভাবেননি তাই হয়ে গেছে। এবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচনার একটা বড় বিষয় ছিল বাংলাদেশে তাদের যে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ সেটা ভবিষ্যতে থাকবে কি থাকবে না।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।