আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্বাসতন্ত্রের জটিল তিন রোগ

অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন বা শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর একটি সবিশেষ কারণ। এই রোগ সব বয়সের লোকের হতে পারে। শ্বাসতন্ত্রকে সাধারণত দুুটি অংশে বিভক্ত করা হয়। উপরের অংশ বা আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট এবং নিচের অংশ বা লোয়ার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট। উপরের অংশে আছে নাক, ন্যাজোফ্যারিংস, ফ্যাপরিংস ও স্বরযন্ত্র বা ল্যারিংস।

নিচের অংশে আছে ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালি এবং শ্বাসনালির শাখা-প্রশাখা ও ফুসফুস। ঊধর্্ব শ্বাসনালিতে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয় ভাইরাস থেকে।

ল্যারিংজোট্রাকিও ব্রংকাইটিস : এই রোগ প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জ ১ ২ ৩ (রাইনা ভাইরাস, অ্যান্টা-রোভাইরাস) সংক্রমণে হয়। প্রারম্ভিক উপসর্গ হবে সর্দির মতো। হঠাৎ করে একসঙ্গে অনেকক্ষণ কাশি, সঙ্গে গলায় শব্দ হবে এবং শ্বাসকষ্ট হবে।

বুকের ও গলার মাংসের সংকোচন এবং বক্ষ-পাঁজরের মাংস ভেতর দিকে শ্বাসকষ্টের জন্য ঢুকে যাচ্ছে- লক্ষ্য করা যাবে। শিশু-কিশোরদের যথাযথ চিকিৎসা না দেওয়া হলে শ্বাসকষ্ট ও শরীর নীলাভ হয়ে যাবে। বিভিন্ন জটিলতা যেমন শ্বাস বন্ধ এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। স্ট্রেপটো-নিউমোনিয়া ও স্ট্যাফাইলো-অরিয়াস সুপার ইনফেকশন হতে পারে। ঘন কফের জন্য অনেক সময় ব্রংকাই বা ছোট নীল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

স্টিম ইনহেলেশন এবং অঙ্েিজন লাগতে পারে।

ইপিগোটাইটিস বা তালু জিহ্বায় সংক্রমণ : জ্বর গলাব্যথা হবে। তালু জিহ্বা ফুলে যাওয়ার জন্য গলায় শব্দ হবে স্ট্রিডর এবং কাশির সঙ্গে স্বরভঙ্গ না থাকায় অন্যান্য কারণে স্ট্রিডর না তালু-জিহ্বায় সংক্রমণের জন্য স্ট্রিডর সেটা বোঝা যাবে। একটা বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে যে, টাং ডিপ্রেসর বা কোনো মেটালিক যন্ত্র দিয়ে গলা পরীক্ষা করা যাবে না।

ট্রাকিয়াইটিস ও ব্রংকাইটিস : রাইনোআইরাস, অ্যাডিনো-ভাইরাস, রেসপিরেটরি সিনসিটিয়েল ভাইরাস সংক্রমণে এ রোগ হয়।

সাধারণ সর্দিজ্বরের পরে হবে। শুকনো ও বেদনাময় কাশি এবং বুকের নিচে অশান্তি। বুক ভারী, সাঁইসাঁই শব্দ, শ্বাসকষ্ট হবে। শ্বাসনালি প্রদাহের জন্য কাশির সময় বুকে ব্যথা হবে। কফ সামান্য হবে, আঠাল এবং অনেক সময় রক্তমিশ্রিত।

এক-দুই দিন পর কফ গাঢ় হয়ে যাবে এবং প্রচুর উঠবে এবং শ্বাসনালিতে প্রদাহের জন্য রক্তমিশ্রিত হবে। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকিউট ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন হয়ে জ্বর বেড়ে ১০২ ডিগ্রি থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফা. পর্যন্ত হয়ে যাবে এবং রক্ত পরীক্ষায় শ্বেতকণিকা বেশি পাওয়া যাবে। কয়েকদিনের মধ্যে রোগী আপনাআপনি সুস্থ হয়ে উঠবে। এ রোগ থেকে জটিলতা যেমন ব্রংকোনিউমোনিয়া, ব্রংকিয়েল অ্যাজমা বা পুরাতন সিওপিডি রোগীর কন্ট্রোল চলে গিয়ে শ্বাসকষ্ট বাড়ে এবং অ্যাকিউট অ্যাটাক হবে এবং টাইপ-২ রেসপিরেটরি ফেইলিউর হতে পারে।

লেখক : অ্যাজমা বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল

কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।

ফোন : ০১৭১১-১৭১৬৩৪

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।