আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাম চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা

টাঙ্গাইলসহ সারা দেশে পাম চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় পাম চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। পাম গাছের নাম শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে মালয়েশিয়ার কথা। এটি মালয়েশিয়ান গাছ। এদেশে জন্মাবে না এমন ধারণা থেকেই হয়তো কেউ পাম চাষ করার উদ্যোগ নেননি। কিন্তু এ ধারণাটি মিথ্যা প্রমাণ করেছেন টাঙ্গাইলের ওসমান গনি।

তিনি সাত-আট বছর ধরে কয়েকটি উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এক থেকে দেড় লাখ পাম গাছের চারা বিতরণ করেছেন। এ চারা গাছগুলো আজ ফলবান হলেও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় সঠিকভাবে কাজে আসছে না। ঘাটাইল উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের ওসমান গনি ১৯৮৩ সালে রাজস্ব বিভাগের একজন কর্মচারী হিসেবে অবসরে যান। গ্রামের যেসব যুবক মালয়েশিয়ায় পাম বাগানে কাজ করেছে তাদের কাছেই প্রথম পাম গাছের গল্প শোনেন ওসমান গনি। ১৯৮৮ সালে মালয়েশিয়া প্রবাসী ঘাটাইলের এক ব্যক্তি তাকে দুটি বীজ এনে দেন।

তখন থেকেই শুরু। বীজ দুটি বাড়ির আঙ্গিনায় রোপণ করার পর এতে প্রচুর পাম ফল ধরে। তা থেকে বীজ উৎপাদন শুরু করেন ওসমান গনি। পাম গাছের পরিচর্যা রপ্ত করতে তিনি ঢাকার মালয়েশিয়া দূতাবাস থেকে কিছু হ্যান্ডবুক সংগ্রহ করেন। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি চারা উৎপাদন করে বিনা মূল্যে তা ছড়িয়ে দেন বিভিন্ন জেলায়।

ইতোমধ্যে বিতরণ করা চারার সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে তিনি জানান। এর মধ্যে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৮২টি পাম গাছের চারা লাগানো হয়। ওই সময় পাম গাছ চাষে সাড়া পড়ে যায় মানুষের মধ্যে। অনেকেই আশা নিয়ে পাম গাছের চাষ করেন। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাম চাষ করতে পারলে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরে তেল রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। এমন স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বৃদ্ধ ওসমান গনি বিতরণকৃত পাম গাছের খোঁজখবর রাখতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। তার স্বপ্ন ছিল একদিন সারা দেশে পাম গাছ ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আজও স্বপ্নই রয়ে গেছে। ওসমান গনি জানান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পাম গাছ থেকেই ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটানো সম্ভব।

এ ছাড়া পাকা ফল থেকে প্রসাধনী, ওষুধসহ অন্যান্য প্রায় ৫০ প্রকারের মূল্যবান পণ্য পাওয়া সম্ভব। পাম গাছের ফল পাওয়া শুরু হলেও তেল বানানোর মেশিন না থাকায় তেল পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে পাম চাষিরা হাতে তেল তৈরি করে তা ব্যবহার করছেন। ঘাটাইলের শালিয়াজানী গ্রামের আসমা আক্তার জানান, তার বাড়ির আঙ্গিনায় দুটি পাম গাছে তিন বছর ধরে ফল ধরছে। এ ফল থেকে আমরা তেল বানিয়ে খাবার হিসেবে ব্যবহার করছি।

এতে আমাদের ভোজ্যতেলের চাহিদা মিটে যাচ্ছে।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।