আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেইসবুক কেন নীল!

দিনে অন্তত একবার হলেও লগ-ইন করা হয় ফেইসবুকে, তারপরও হয়ত অনেকেরই মনে নেই আজ ৪ ফেব্রুয়ারি, ফেইসবুকের দশম জন্মদিন। অনেকেই বলেন, ফেইসবুক এখন নাকি শুধু একটি ওয়েবসাইট নয় বরং পৃথিবীর ১০০ কোটির বেশি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। সদ্য কৈশোর পেরোনো কয়েকজন তরুণের ছোট্ট একটা স্বপ্নই যে একটা সময় পরিণত হবে বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগের সাইটে সেটাই বা ভেবেছিলেন ক’জন!

এমআইটির এক ডরমিটরির ছোট্ট ঘরে বসে ফেইসবুকের শুরুটা করেছিলেন পাঁচ তরুণ; মার্ক জাকারবার্গ, এডওয়ার্ডো স্যাভেরিন. অ্যান্ড্রু ম্যাকালাম, ডাস্টিন মস্কোভিটজ আর ক্রিস হিউজ। সেই ডরমিটরির ছোট্ট ঘর ছেড়ে ফেইসবুক পরিবার এখন পুরো পৃথিবী জুড়ে। অথচ সেই ফেইবুকের অনেক মজার তথ্যই হয়তো জানা নেই অনেকের।

জন্মদিন উপলক্ষ্যে না হয় এবার জেনেই নেয়া হল তার কয়েকটি।

১. ফেইসবুকের রং নীল কেন? : ফেইসবুকে শুধু নীল রংয়ের ছড়াছড়ি কেন? নীল পছন্দের রং না হলে দোষটা দিতে হবে জাকারবার্গকেই। ‘নচ্ছাড়’ এই কণিষ্ঠতম বিলিয়নেয়ার একেবারেই চেনেন না লাল আর সবুজ রং। কারণ আর কিছুই না, তিনি কালার ব্লাইন্ড। জাকারবার্গের কাছে সবচেয়ে উজ্জ্বল রং হচ্ছে নীল।

ফেইসবুকের বদৌলতে নীল রংটা এখন এতটাই জনপ্রিয় যে ফেইসবুকের নীলের সঙ্গে মিল রেখে নেইলপলিশও বানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেইসবুক ক্যাম্পাস স্টোরে নাকি দেদারসে বিক্রিও হয় ‘সোশাল বাটারফ্লাই ব্লু’ শেইডের সেই নেইলপলিশ।

২. ৭০ ভাষার ফেইসবুক: ৭০টিরও বেশি ভাষায় ব্যবহার করা যায় ফেইসবুক। এমনকি আছে ফেইসবুকে ইংরেজিতে লেখা আইকনগুলো উল্টো করে দেখার অপশনও। নিউজফিডের ডান দিকে নিচে আছে পছন্দের ভাষা ঠিক করে নেওয়ার অপশন।

বিশ্বাস না হলেও সেখান গিয়েই দেখুন না, খুঁজে পান কিনা উল্টো করে লেখা ইংরেজির অপশনটি।

 

৩. জাকারবার্গের ফ্যাশন সেন্স: ফেইসবুকের এই সহপ্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে তর্ক বিতর্কের অভাব নেই। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে কণিষ্ঠতম বিলিয়নেয়ার হয়েও কর্পোরেট ড্রেস কোড তথা স্যুট-টাই পরার প্রথা তিনি মানেন না বললেই চলে। ধূসর রংয়ের টি-শার্ট অথবা হুডি ছাড়া জাকারবার্গের দেখা পাওয়া একেবারেই দুষ্কর। এর কারণ? আজ কি পরবেন সেটা ভাবার সময় নেই জাকারবার্গের, বরং ফেইসবুক নিয়ে আজ কি করবেন তা নিয়েই তার সব ব্যস্ততা।

তাই সময় বাঁচাতে স্যুট-টাই বাদে জাকারবার্গের পছন্দ টি-শার্ট আর হুডি। গণমাধ্যমের সামনে জাকারবার্গ স্যুট-টাই পরে হাজির হয়েছিলেন স্রেফ দুই-একবার। একবার বারাক ওবামার সঙ্গে এক ইভেন্টে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আর তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বেশ গর্ব করেই বলেছিলেন, “আমিই সেই ব্যক্তি যে মার্ককে স্যুট পরিয়েই ছাড়লো!”

 

৪. ইয়াহুকে না: সালটা ২০০৬। ২২ বছর বয়সী জাকারবার্গের মালিকানায় তখন ফেইসবুকের ২৫ শতাংশ শেয়ার।

১০০ কোটি ডলার দিয়ে সে সময় ফেইসবুক কিনে নিতে চেয়েছিল তৎকালীন ওয়েব জায়ান্ট ইয়াহু! সেবার ইয়াহুকে না বলে দিয়েছিলেন জাকারবার্গ। কারণ, বুঝে উঠতে পারছিলেন না কি করবেন এত টাকা দিয়ে। জাকারবার্গ যে তখন ভুল করেননি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ফেইসবুকের মূল্য এখন সাড়ে ১৩ হাজার কোটি ডলার।

 

৫. ফেইসবুকে ফটো বন্যা: প্রতিদিন গড়ে ৩৫ কোটি ফটো ফেইসবুকে আপলোড করেন এর ব্যবহারকারীরা।

২০১৩ সালের প্রথম ৯ মাসে প্রায় ২৫ কোটি ফটো আপলোড করা হয়েছে সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটটিতে। প্রতি সেকেন্ডে আপলোড হয় গড়ে ৪ হাজার ফটো।

 

৬. সংবিধান লিখতে ফেইসবুক: অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি সংবিধান লিখতে ফেইসবুকের শরণাপন্ন হয়েছিল আইসল্যান্ড সরকার। ২০০৮ এবং ২০০৯ সালের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আইসল্যান্ডের জন্য নতুন সংবিধান লেখার স্বিদ্ধান্ত নিয়েছিল দেশটির সরকার। আর এজন্য ফেইসবুকের মাধ্যমেই দেশটির নাগরিকদের মতামত আর পরামর্শ নেওয়ার প্রকল্প শুরু করেছিলেন আইসল্যান্ডের আইন প্রণেতারা।

তবে শেষ পর্ন্ত ধোপে টেকেনি সেই প্রকল্প। বিভিন্ন কারণে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয় দেশটির রাজনীতিবিদরা।

৭. বাড়াবাড়ি সবখানে: সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী ফেইসবুকে ব্রিটিশদের পোস্ট করা ফটোগুলোর তিন-চতুর্থাংশতেই নাকি হয় মাতাল অবস্থায় অথবা মদের বোতল হাতে ছিলেন কেউ না কেউ। তবে এটাও ঠিক ফেইসবুকের আর সবকিছুর মতো এক্ষেত্রেও একটু বাড়িয়ে বলা হতে পারে।

৮. টুইটারে মনোযোগ নেই জাকারবার্গের: একটা সময় মনে হয়েছিল এই বুঝি ফেইসবুককে টপকে গেল টুইটার।

ফেইসবুকের একসময়ের এই প্রতিদ্বন্দ্বী মাইক্রোব্লগিং সাইটটি এখন অনেক পিছিয়ে ফেইসবুকের তুলনায়। টুইটারের মোট ২০০ কোটি ব্যবহারকারীর মধ্যে আছেন ফেইসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গও। তবে টুইটার নিয়ে জাকারবার্গের কোনো মাথাব্যথা নেই। মাইক্রোব্লগিং সাইটটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে মোটে ১৯বার টুইট করেছেন তিনি। ২০১২ সালে একবার, আর ১৮বার ২০০৯ সালে।

 

৯. ফেইসবুক বাউন্টি হান্টিং: অন্যান্য প্রযুক্তিকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানের মতো ফেইসবুকেরও আছে ‘বাউন্টি হান্টিং প্রোগ্রাম’। ফ্রিল্যান্স সিকিউরিটি রিসার্চাররা নিয়মিত চিরুনি অভিযান চালান সাইটটির কোডের উপর। কোনো বাগের সন্ধান পেলেই মেলে সর্বনিম্ন ৫০০ ডলার থেকে শুরু করে সাড়ে ৩৩ হাজার ডলারের নগদ পুরস্কর।

১০. বিচ্ছেদেও ফেইসবুক: বিচ্ছেদেও বিকল্প নেই ফেইসবুকের। ব্রিটিশ লিগাল ফার্ম ‘ডিভোর্স অনলাইন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১১ সালে ব্রিটিশ আদালতের এক তৃতীয়াংশ বিয়েবিচ্ছেদের আবদনে আবেদনকারীরা বলেছেন ফেইসবুকের কথা।

জীবনের হাসি-ঠাট্টাগুলোতে যেখানে ফেইসবুক না হলেই না নয়, বিচ্ছেদেও যে তার বিকল্প নেই সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না বৈকি।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।