আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৪ই ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১৪৪ ধারা জারি করার জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট একটি অনুরোধ পত্র

মুখোশ

আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ‘কালো দিবস’ ঘোষণা
করে দেশে ১৪৪ ধারা জারি করার জন্য
রাষ্ট্রপতির প্রতি একটি
অনুরোধ পত্র



হে জাতির কর্ণধার,
বছরের বাকি ৩৬৪ দিন এক রকম হলেও ১৪ই ফেব্রুয়ারি সম্পূর্ণ অন্যরকম। অনেকের কাছে এই দিন ‘আজ ঈদ, বাংলার ঘরে ঘরে আনন্দ’ এর মত ব্যাপার। অথচ বিরাট একটা অংশের কাছে এটি ‘হাহাকার দিবস'। সারাবছর নিজেদেরকে ইনিয়ে বিনিয়ে সান্ত্বনা দিয়ে গেলেও এদিন পারিপার্শিক অবস্থা দেখে এদের বুকে চিনচিনে ব্যাথা উঠে। অথচ কোলেস্টেরল কিংবা প্রেসারের কোন সমস্যাই নেই এদের।

১৪ই ফেব্রুয়ারিতে এদের মনের অবস্থা অনুধাবন করে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত লিখেছিলেন, “কাঁদে তখন আকুল মন, না মানে সান্ত্বনা’।

হে নিপীড়িত জনতার ভরসা,
‘সম্পদের অসম বন্টন’ আগে শুধুমাত্র অর্থনীতির জন্য প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু অপু যেদিন বলেছিল “সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ” সেদিন হতে এটি অনেক কিছুর জন্য সত্য। দেশের মুষ্টিমেয় কিছু লোক হেসেখেলে বিলাসী জীবন যাপন করছে। অথচ বিশাল একটি অংশের মন দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে।

এমন বৈষম্য জনগণের মনে তীব্র হতাশা এবং ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে।

হে দুর্বলের শেষ আশ্রয়
সংবিধানকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এদেশে চলছে চরম অরাজকতা। এখানে পূর্ণিমার চাঁদ একটি, অথচ অর্থ দুটি। এ চাঁদ কারো কাছে উপমা, কারে কাছে বাসি, পোড়া একটা রুটি। এখানে রাতভর কেউ মুঠোফোনে বাক-স্বাধীনতার অধিকার উপভোগ করে আর অন্য একটির অংশের রাতে কাটে ফুটপাতে ঘুমন্ত অসহায় মজুরের মত।

একটা স্বাধীন দেশে এরকম বৈষম্য কি সাংবিধানিক লংঘন নয়?

হে মাননীয় সুবিবেচক
দেশের মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ যখন পার্কে, রেস্টুরেন্টে বসে ‘আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে’ গাইতে থাকে তখন আরেক অংশের জীবন যেন উদ্দেশ্যহীন ছুটে চলা ‘টেম্পল রান’। রাস্তা দুর্গম, সেতু ভাঙ্গা, গন্তব্য অনিশ্চিত, পথ নিঃসঙ্গ। অথচ সবসময় দৌড়ের উপর। দৌড়ের মাঝখানে একটু জিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই, কেউ ঘাম মুছে দেয় না, এগিয়ে দেয়না এক গ্লাস পানি। তাই প্রতিবছর ১৪ই ফেব্রুয়ারি আসে এত্তোগুলো উপহাস নিয়ে।

নিপীড়িত জনতার প্রতি এমন আচরণ মানবতাবিরোধী অপরাধের মতই ঘৃণ্যকর।

হে মানবতার প্রতিমূর্তি
দেশের একাংশের মোবাইলের ইনবক্স যখন কোন মন্ত্রীর বউয়ের ব্যাংক একাউন্টের মত ফুলে ফেঁপে উপচে পড়ে তখন অন্য অংশের ইনবক্স যেন মঙ্গাপীড়িত কোন জনপদ। সেখানে ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে আসে না কেউ। যা আসে তা হল ‘রিংটোন সেটিংস’ আর ‘মজার জোকস শুনতে ডায়াল করুন ২২২ নাম্বার’ মেসেজ। যেন কৌতুকের উপর কৌতুক।

টেক্সট না লিখতে লিখতে একসময় অক্ষরজ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে এ বঞ্চিত জনতা। এভাবে সুকৌশলে জাতিকে মেধাশুণ্য করার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার এটাই উপযুক্ত সময়।

হে রাষ্ট্রের অভিভাবক,
একটি সাম্যবাদী সমাজের স্বপ্ন দেখেছিল জনগন। তাই আপনার কাছে আকুল অনুরোধ আপনি ১৪ই ফেব্রুয়ারিরকে ‘কালো দিবস’ ঘোষণা করুন। ঐদিন অবাধ চলাচল নিষিদ্ধ করে দেশব্যাপী ১৪৪ ধারা জারি করুন।

রাস্তায় যে কাউকে দেখামাত্র টিয়ারশেল, গরম পানি, লাঠিপেঠা করে আধমরা করে ফেলার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিন। ফেব্রুয়ারির ৩০ তারিখ যেহেতু খালি আছে ক্যালেন্ডারে ৩০ তারিখ অন্তর্ভুক্ত করে ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ ক্যালেন্ডার থেকে ডিলিট করে দিতে আপনার মর্জি হয়।






অনুরোধক্রমে
নিখিল বাংলা সিঙ্গেল সমাজ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।