আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর: সকলকে একরাশ ভালোবাসা!

Consistency is the last refuge of the unimaginative. –Oscar Wilde (ইহা হইল আমার কনসিসটিন্সি না থাকিবার একটি গ্রহণযোগ্য অজুহাত)

শুধু একদিন ভালোবাসা
মৃত্যু যে তারপর
তাও যদি পাই, আমি তাই চাই
তাও যদি পাই...
চাই না বাঁচতে আমি
প্রেমহীন হাজার বছর।

যদি ও চোখে রশ্মি জ্বালো শুধু একবার...শুধু একবার
তাতেই পোড়াতে রাজি যা কিছু আমার
আমি চাই দেখতে ঐ প্রাণহীন চোখের পাথর
চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।

ভাগ্যের দরবারে দু'হাত পেতে
আমি চাই না পূণ্যফলে স্বর্গে যেতে
ঐ স্বর্গকে ধরে ফেলি হাতের মুঠোয়
যদি একবার হাত খানি রাখো এ হাতে।

যদি উপহার দিয়ে ফেলো একটাও ফুল
যদি একবারও করো কোন সামাজিক ভুল
সেই ভুলেই ভাবতে রাজি এই ঘর সুখের বাসর
চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।

শুধু একদিন ভালোবাসা
মৃত্যু যে তারপর
তাও যদি পাই, আমি তাই চাই
তাও যদি পাই...
চাই না বাঁচতে আমি
প্রেমহীন হাজার বছর।




প্রেমের কণ্ঠকবি, মরমী শিল্পী মান্না দে’র গানটি কেউ শুনতে চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করুন।




:::::কপটতায় মোড়ানো প্রেম (একটি ‘স্বরচিত’ কবিতা)
----------------------------------------------------

দৃষ্টি পড়তেই কপট ঔদাসীন্যে
মুখ ঘুরিয়ে নিলে তুমি।
আবার মনোযোগ দিলাম কপট কাজে,
কপট ব্যস্ততায় মগ্ন হয়ে উপলব্ধি করলাম
তোমার দৃষ্টির আলো আমাকে
ধৌত করে যাচ্ছে।
আর আমি শুদ্ধ হচ্ছি।

ভাবছি কী দেখছো তুমি
যা খুঁজছো, তা কি তুমি দেখো আমাতে?
হঠাৎ তোমার কপট ডাকে সচকিত হলাম
“এই রিকশা” বলে তুমি কপট আগ্রহ দেখালে
চলে যাবার
যা কেবল আমি বুঝেছি।



ছাদে এসে কপট ব্যস্ততা দেখালে
ফুলগাছে পরিচর্যার
কপট ব্যস্ততায় কাপড় গোছাচ্ছো তুমি
আর বুঝতে চেষ্টা করছো
আমি এখনও আছি কি না।
হঠাৎ চাহনীতে এক মিলিসেকেন্ড
তুমি আমাকে দেখলে
আর আমি ধন্য হয়ে গেলাম!

কপট দৃষ্টিতে আবহাওয়া বুঝার জন্য
তোমার পেছনের আকাশে তাকাই-
নীলাকাশে অস্থির মেঘ:
মেঘগুলো একে অন্যের সাথে
ভাবের খেলা করছে, যেমন তুমি-আমি!
তুমিও মেঘ দেখছো, আমিও।
দু’জনের দৃষ্টি একই মেঘরাশিতে!

ভালোবাসা ছাড়া বাকি সবই কি তবে কপট?
মেনে নিলাম, তোমার জন্য।
কপট আমি কপট তোমাকে
অকপট ভালোবাসি।
তুমি কি তা বুঝো?

(এই কবিতার সমালোচনা করা সম্পূর্ণভাবে (নি)সিদ্ধ করা হলো)



ভালোবাসা ‘কাহাকে’ বলে: সংজ্ঞাটি কিন্তু মনগড়া
যখন কেউ সত্যিকারভাবে অন্যকে নিজের অন্তরে অনুভব করে; স্বার্থহীনভাবে তার মঙ্গল চায়; তার ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে; তার ভালো বিষয় নিয়ে গর্ব করে; সকল পরিস্থিতিতে সঙ্গ দেয়; মতভেদের বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবে মোকাবেলা করে; নিজের উচ্ছ্বাস হতাশা নির্ভেজাল আবেগে প্রকাশ করে; অসন্তুষ্টির কথাগুলো মুখদর্শনেই ভুলে যায়; রাগেও ভালোবাসার প্রকাশ থাকে; পৃথিবীর সমস্ত ভালো-মন্দ সরস-নিরস সুখ-বিসুখ একসাথে অনুভব করে… দেখলে তো দিল পিট পিট করেই... না দেখলেও আরও... ‘তাহাকে’ বলা হয়.... (আচ্ছা আপনারা আর কিছু যোগ করুন)





ভালোবাসা কত প্রকার: (আলাদা দেওয়া হয়েছিলো)

ভালবাসার চারটি ধরন : স্নেহ মায়া মমতা, বন্ধুর সাথে হৃদ্যতা, বিপরীত লিঙ্গের সাথে প্রেম আর ঈশ্বরে আসক্তি বা ভক্তি।

এই প্রকারভেদ আবিষ্কার করেছেন গ্রিক প্রেম-পণ্ডিত বা দার্শনিকগণ।

তাদের ভাষায় প্রথমটির নাম হলো storge বা affection যার অর্থ পিতামাতার ভালবাসা বা পারিবারিক ঘনিষ্টতা। শুধু মানুষই না, সকল প্রাণীরই সন্তানের প্রতি মাবাবার বা মাবাবার প্রতি সন্তানের ভালবাসা আছে। পারিবারিক বন্ধনই স্টোর্জ বা পারিবারিক ভালবাসার মূল ভিত্তি।

দ্বিতীয়টির নাম philia বা friendship, সাধারণত সমগোত্রীয় সমবয়সী বা অভিন্ন চিন্তাচেতনার মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ককে ফিলিয়া বলে।

বন্ধুত্ব অতি প্রাচীন একটি সামাজিক সম্পর্ক। সত্যিকার বন্ধু প্রেমের চেয়েও গভীর, তা যারা পেয়েছে তারা আরও ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবে। নিজের জন্য নয় বন্ধুটি যেন ভালো থাকে - এরকমের অনুভূতি থেকে এর সৃষ্টি। আমাদের সমাজে শিক্ষাজীবন বা বাল্যজীবনে এরকমের বন্ধুত্ব পেয়ে থাকি, যা কর্মজীবনের বাস্তবতায় এসে অনেকটা ফিকে হয়ে যায়। কারও কারও থেকে যায় আমৃত্যু।

তারা ভাগ্যবান।

তৃতীয়টির নাম eros বা romance বাংলায় প্রেম, গভীর প্রেম। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি শাশ্বত জৈবিক আকর্ষণ। এই ভালবাসা প্রলয়ংকরী এবং সৃষ্টিকারী উভয়ই। এটি ধ্বংস করতে পারে আবার অসম্ভবকে সৃষ্টি করতে পারে।

পৃথিবীর অনেক সৃষ্টি ও ধ্বংসের উৎস এই প্রেম। দার্শনিক প্ল্যাটো অবশ্য এর মাঝামাঝি এক আদর্শিক প্রেমের কথা বলেছেন, যাতে দৈহিক ঘনিষ্টতাকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, যাকে আমরা বলে থাকি প্ল্যাটোনিক প্রেম। আবার সিগমান্ড ফ্রয়েড সেটাকে অস্বীকার করে গেছেন।

চতুর্থটির নাম agape বা unconditional love। ঈশ্বরের সাথে শর্তহীন সম্পর্কের নামকে বলা হয় আগাপে অন্য ভাষায় charitable love।

আমাদের সুফিবাদ অনেকটা এর কাছাকাছি। ঈশ্বরের অস্তিত্বে দেহ-মন-শরীরে গ্রহণ করে পরম একাত্মতা বোধ করার নামই আগাপে বা খোদা-প্রেম। নজরুল গেয়েছেন, “খোদারও প্রেমে সরাবও পিয়ে...বেহুঁস হয়ে রই পড়ে। ” ঈশ্বরবাদীদের মতে, এ-ই হলো সর্বোত্তম প্রেম, যা আমাদেরকে নিঃস্বার্থভাবে স্বজাতিকেও ভালবাসতে শক্তি যোগায়। মাদার তেরিজা বলেছিলেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যে আমি ঈশ্বরকে দেখতে পাই।






বয়সকালের ভালোবাসা: (ডাক্তারের ডায়েরি থেকে )

আমি একটু বিস্মিত হয়েই জিজ্ঞেস করলাম, “তিনি আপনাকে চেনেন না, তবু আপনি প্রতিদিন সকালে স্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে যান?!”
বৃদ্ধ একটু হাসলেন। তিনি আমার হাতে মৃদু চাপ দিয়ে বললেন, “তাতে কী! আমার স্ত্রী আমাকে চেনেন না, কিন্তু আমি তো তাকে এখনও চিনি!”




ইন্টানেটের প্রতি ভালোবাসা: (নেটকোহলিক )

আমার বন্ধুটি ইংরেজি একটি ইন্টারএকটিভ ব্লগসাইটে নিয়মিত লেখে। তার আইডি আছে ফেইসবুক ইউটিউব ভিমিও টুইটার মাইস্পেইস লিংক্ড ইন ফ্লিকার এমএসএন স্টাইপে এবং প্রায় সব সাইটেই যেখানে আইডি দরকার। সরকারি চাকুরিতে যুক্ত থাকার সুবাদে যে পেয়েছে অঢেল সময়। আজকাল তাকে ফোন করলে খুব তাড়াহুড়ো করে কথা শেষ করে দেয়।

নিজে তো ফোন করেই না! বাইরে সাক্ষাৎ প্রায় হয়ই না এখন আর। সমাজ বা বন্ধু না হয় বাদই দিলাম, আমি ভাবছি তার পরিবার তথা সন্তান-সন্ততি ও স্ত্রীর কথা। সেকি আজকাল তার স্ত্রী-সন্তানকে দু্’দণ্ড সময় দিতে পারে? যদি না পারে, তবে তার ফল কী হতে পারে?




জিনিস বানানো হয়েছে ব্যবহারের জন্য...
মানুষ বানানো হয়েছে ভালোবাসার জন্য...
পৃথিবীতে সকল বিভ্রান্তির কারণ হলো:
জিনিসকে ‘ভালোবাসা’ হচ্ছে আর
মানুষকে ‘ব্যবহার’ করা হচ্ছে।
(বেনামী)



নিচের গানটি শুনলেই হাসি পায়। তবু মনে হয় ঠিকই আছে…
“প্রেমহীন এজীবন মৃত্যুর চেয়েও আরও যন্ত্রণাময়
আমার মরণ কেন হয় না...ও আমার মরণ কেন হয় না!”






জীবন সায়াহ্নে আবেগঘণ ছবিটি কিন্তু ফটোশপে হয় নি।

এটি ‘টাইম’ পত্রিকায় বছরের সেরা ছবির মর্যাদা পায়। বলা বাহুল্য ছবিটি এসব কোন উদ্দেশ্যেই ‘তারা’ করে নি!



******
ভালোবাসা বিরতি। অতএব আজ আর লিখবো না! সকলকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা... এবং
একরাশ ভালোবাসা... চলুন প্রতিদিনই ভালোবাসি!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।