আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সচিত্র ভাপা পিঠা রহস্য

অ্যাবস্ট্রাক্টঃ স্বদেশ ছেড়ে মরার দেশে পড়ে থাকা পোড়া কপাইল্যা বলে একটা বিশেষ যে প্রজাতি আছে, তাদের মধ্যে অমাবস্যা-পূণ্যিমায় তথা চান্দে চান্দে বিবিধ ফান্দে থাকার কথা ছন্দে ছন্দে মাথার নানান রন্ধ্রে রন্ধ্রে জানান দিয়া থাকে। এমনতর শত শত উপাদানের মাঝে শ্রদ্ধেয় শ্রীমতি ভাপা পিঠা অন্যতম। বিগত দশটি বৎসর যাবত এই শ্রীমতির ভাজ খুলে, আনন্দ দেখে, প্রেমের তর্জমা করার নিমিত্তে বহু দিনমানরজনী অতবাহিত হয়েছে। অবশেষে হপ্তাব্যাপি যথেষ্ট হাদুমপাদুম প্রদর্শনের পর বিগত শেষ রজনীতে তন্দ্রায় পাওয়া সিস্টেমে শ্রীমতি ভাপা পিঠার চুনরি ম্যায় দাগ লাগানোর উপায় খুঁজে পেয়েছি। তার চোলি কে পিছে ক্যায়া হ্যায়, তার রহস্য উদ্ঘাটনে সক্ষম হয়েছি।

তারই মহিমান্বিত বয়ান হবে আজকের মাহফিলে। সবাই বলেন আমিন।
মিশনঃ ভাপা পিঠা
এ বড়ই খতরনাক মিশন! কদম গাছের পাতার আড়ালে লুকিয়ে থেকে পুকুরের জলে ক্যালি করা রাধারাণীর জবজব অঙ্গ দেখার মিশনও বোধকরি এতো খতরনাক বিবেচিত হয় নাই। স্মরণকালের ইতিহাসে এই খতরনাক মিশনে সামিল হইতে যাদেরকে পামপট্টি মেরে গেছি, তারা কেউই কদম তলায় যাইতে রাজী হয় নাই। উলটা ভগ্নমনোরথে পালটাসিধা বুঝাইয়া আমার কামনার রথে রিভার্স গিয়ার মেরে রাখছে! অতঃপর, সেই অমোঘ বাণী- 'থাকিতে নিজের হস্ত, হইবো না কারও দারস্থ!' - মন্ত্রদ্বারা ইয়োগামারাপ্রাপ্ত হয়ে, পরনের লুঙ্গিকে কেরালা স্টাইলে ডাবল ফোল্ডিং দিয়ে, দুই উরুতে খটাশ খটাশ দুইটা থাবড়া মেরে লেগে পড়লাম, মিশনঃ ভাপা পিঠা'য়।


অস্ত্র ও গোলাবারুদ
একটা কথা মনেপ্রাণে না, বরং মাথার মধ্যে প্রাচীন মিশরীয়দের লিখন পদ্ধতির মতো খোদাই করে ফেলতে হবে প্রথমেই। সেটা হলো, এই মিশনের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ দরকারী, কিন্তু গোলন্দাজ সমস্যার উদ্রেককারী! তাই যতদূর সম্ভব গোলন্দাজ নিযুক্ত করা, জমায়েত করা থেকে বিরত থাকুন। নিজের কামান নিজে দাগুন।
এবার মূল যে গোলাবারুদের সিস্টেম আপনাকে বুঝতে হবে, তা হলো, হোয়াট ইজ আতপ চাল! ফ্রাঙ্কলি স্পিকিং, আমি নিজেও জানি না এই জিনিস কী! তবে, ভাপা পিঠার জন্য এই জিনিস আপনার মাস্ট। তো কী করবেন? ঘাবড়াবেন না জনাব, আমি আছি না? আতপ চাল, মশুরের ডাল আর সেদ্ধ চালের মধ্যে পার্থক্য করতে পাচ্ছেন না? এইটা কোনো ঘটনাই না।


তিন আইটেম থেকে তিনটা দানা আলাদা আলাদা করে মুখে দিয়ে পেয়ারছে একটা কুট্টুস কামড় দিন। তারপর জিব্বায় করে কামড়ে দেয়া জিনিসটা বের করে আনুন।
যদি দেখেন সেইটা লালচে কিসিমের, তাইলে ফেলে দিন। এটা মশুরের ডাল। এই মিশন থেকে ডাইল তোমায় দিলেম ছুটি।


যদি দেখেন, কামড় দেয়ার পর জিনিসটা গুঁড়া গুঁড়া আর ইউরোপিয়ানদের মতো ধবলা হয়ে গেছে। চোখ বন্ধ করে একে বুকে জড়ায়ে ধরে বাকি সব কিছু ফেলে দিন।
গুঁড়ির চেহারা দেখতে অনেকটা এরকম হলে ভালো, আরেকটু ভালো হলে আরও ভাল।



যাইহোক, শেষ পর্যন্ত সনাতন পদ্ধতির হাঁড়ির উপর দিয়েই পাড়ি দিতে হয়েছে এ যাত্রা। আসুন দেখে নেই এক নজরে-

এবার আসুন দেখি, এতোক্ষণ ধরে কুদাকুদির পর আউটপুট কী হাতিঘোড়া বের হইলো-

পর্যাপ্ত পরিমানে হাদুমপাদুমের পর পরিবেশনের জন্য উন্মুক্ত ভাপা পিঠা।



অন্য এ্যাঙ্গেল থেকে-

বিদ্রঃ গুড়ের পরিমানে কিছুটা অসামঞ্জস্য লক্ষ্যণীয়। এটা হয়েছে আসলে, 'পরিমানমতো' টার্মটার সাথে অপরিমিত পরিচিতির কারণে। কিন্তু সমস্যা নাই, দুই পিঠার গুড়ের গড় করলে ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। আপনিও গড়, মিন, মিডিয়ান করে পরিমান ঠিকঠাক রাখতে পারেন।
শুভ খাওয়া, খান, খায়া বাঁচেন।

দুইডা খাওনের জন্যই তো এই দুইন্যাতে আসা...

সোর্স: http://www.sachalayatan.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.