আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মরে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

উত্তাল ব্রহ্মপুত্র নদ হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতির অতলে। ভয়াবহ নাব্য সংকট ব্রহ্মপুত্রকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। নদের অববাহিকায় পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি আবাদ, সেচ সংকটে নেমে এসেছে ভয়াবহ স্থবিরতা। নদের তলদেশে পানি না থাকায় সেচনির্ভর কৃষকরা পড়েছে মহাসংকটে।

নদ এলাকায় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত শত বছরেও কোনো ড্রেজিং না করায় এর তলদেশে পলি জমে নাব্য হ্রাস পেয়ে উত্তাল নদ মরতে বসেছে।

বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্যসহ মৎস্য সম্পদ ও নানা জলজ প্রাণী। হাজার হাজার জেলে পরিবার বেকারত্ব ঘোচাতে বেছে নিয়েছে অন্য পেশা। খেয়াপাড়ের মাঝিরা বৈঠা ছেড়ে কলের নৌকা চালিয়েও শেষাবধি রক্ষা পায়নি। জালের মতো ছড়িয়ে থাকা শাখা নদীগুলো এখন বিত্তবানদের ফসলি জমি। ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী দুই পাশে কয়েক লাখ হেক্টর জমি, এ নদের পানির সেচ ব্যবস্থা নির্ভর ছিল।

বর্তমানে মূল নদে পানি না থাকায় সেচ ব্যবস্থা গভীর সংকটের মুখে পড়েছে। নদীর পানিতে যেসব গরিব কৃষক স্বল্প খরচে সেচ ব্যবস্থার আওতায় ছিলেন তাদের এখন মাথায় হাত। বিত্তবান কৃষকরা গভীর নলকূপ বসিয়ে সেচ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। যারা নগদ টাকা দিতে পারছেন তারাই শুধু পানি পাচ্ছেন। এ সুযোগে এক শ্রেণীর মহাজন চড়া সুদে হাতিয়ে নিচ্ছে কৃষকের কষ্টার্জিত ফসলের টাকা।

মটখলা টোক থেকে হোসেনপুর, গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ জামালপুর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদ এখন প্রায় বিলীন হতে চলেছে। পানির প্রবাহ না থাকায় নদের তলদেশে চলছে চাষাবাদ। এ সুযোগে এক শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তাকে কৌশলে ম্যানেজ করে বিশেষ প্রভাবশালী মহল কোটি কোটি টাকার বালু ও মাটি অবৈধভাবে বাণিজ্য করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন। ফলে একদিকে সরকার হারাচ্ছে বিরাট অঙ্কের রাজস্ব অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে ব্রিজ কালভার্ট। নাব্য সংকটের কারণে শুকনো মৌসুমে নৌকা চলাচলসহ পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে।

ফলে নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যেও এর প্রভাব পড়েছে।

তৎকালীন বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে নৌবহর নিয়ে হোসেনপুর এলাকা দিয়ে যাতায়াত করতেন। এ ছাড়াও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নৌবহর ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে নিয়মিত টহল ও রসদ সরবরাহের নিরাপদ পথ হিসেবে ব্যবহার করত। হোসেনপুরে তারা নীলকুঠিও স্থাপন করেছিল।

এই এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি ব্রহ্মপুত্র নদ সরকারি উদ্যোগে ড্রেজিং করা না হলে বিপর্যয় নেমে আসবে।

 

ক্যাপশন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।