আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সারাবিশ্বে জঙ্গীদের ভয়াবহ তান্ডব ও মানবতার শত্রু জঙ্গীবাদ !

স্বাধীনতা, সে তো আমার প্রিয় মানুষের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে কেনা


আফ্রিকা মহাদেশের মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে উগ্র মুসলিমরা দেশটির একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে নেওয়াতে সেখানে পাল্টা পদক্ষেপ হিসাবে উগ্র খ্রিস্টানরা মুসলিমদের নিধন করতে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করতেছে আর উগ্র খ্রিস্টানদের ভয়াবহ সাড়াশি আক্রমনে সেখানকার উগ্রপন্থী মুসলিম গ্রুপের নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। প্রতিশোধ হিসাবে ধর্মান্ধ ও নর খাদক উগ্র খ্রিস্টানরা সেখানকার মুসলিমদের গণহারে হত্যা করে তাদের তাদের লাশ প্রকাশ্য দিবালোকে ভক্ষণ করতেছে যা যে কোনো সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষের শরীর শীহরে ওঠার কথা ! উগ্রবাদী খ্রিস্টান গেরিলাদের আক্রমন এত ভয়াবহ যে এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেও কুল পাচ্ছে না দেশটির সরকার। এমনকি সেখানে নিয়োজিত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীও তাল পাচ্ছে না । এটা তো গেল আফ্রিকার খ্রিস্টান উগ্রপন্থীদের কথা, ইউরোপ, আমেরিকাতেও প্রচুর উগ্রপন্থী খ্রিস্টান গ্রুপ আছে। ইহুদীদের জায়নিস্টরাও অত্যন্ত ভয়ংকর ! জায়নিস্ট আর ইসলামের আল কায়েদার মধ্যে দর্শনাগত পার্থক্য খুব সামান্যই।

জায়নিস্টরাও ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠার নামে নেমেছে। এলক্ষ্যে তারা ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা বৈধ মনে করে। আবার যেখানে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সেখানে মুসলমানরাই উগ্রপন্থী যেমন পাকিস্থান, আফগানিস্থান ইরাক, সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অন্য ধর্মের মানুষজন তো আরো দূরের ব্যাপার এইসব দেশগুলিতে স্বয়ং মুসলমানরাই মুসলমানদের আর এক গ্রুপকে দেধারছে হত্যা করতেছে সাথে সাথে লাশের উপর নেচে গেয়ে নৃত্যও করে ! পাশের দেশ মিয়ানমারের কথা আর কি বলব ? বৌদ্ধ ধর্মকে সবচেয়ে মানবতাবাদী ধর্ম বলা হয় অথচ সেখানে বৌদ্ধরা গণহারে রোহিঙ্গাদের নিধন করতেছে ! শুধু তাই নয় সেখানে এই গণহত্যায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও যোগ দিয়েছিল। তদ্রুপ পাশের দেশ ভারতেও উগ্র হিন্দুরা মুসলমানদের প্রায়শ আক্রমন করে। ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা তো অহরহ শুনতে পাই।

ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের নির্যাতনের কথা নাইবা বললাম।

এই ধর্মের নামে সারা পৃথিবীতে কোথাও কম আবার কোথাও বেশি নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চলছে সেগুলো সবই হচ্ছে ধর্মের নামে। যারা হত্যা করতেছে তাদের সবার উদ্দেশ্য পরিষ্কার- তাদের নিজ নিজ ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা, কেউ প্রতিষ্ঠা করবে রাম রাজ্য, কেউবা ঈশ্বরের রাজ্য আবার কেউবা প্রতিষ্ঠা করবে ইসলামিক রাস্ট্র মানে আল্লাহ রাজ্য! এ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে তাদের দেশের সংখ্যালঘু বা ভিন্নমতের মানুষগুলিই তাদের প্রধান বাধা। এ আবার কেমন ঈশ্বর যিনি মানুষদের হত্যা করে তার রাজ্য প্রতিষ্ঠার কথা বলেন !!! অথচ মানুষকেই তিনি আবার তার সৃষ্টির সেরা হিসাবে অ্যাখ্যায়িত করেছেন ! কিন্তু অদৌ মানুষ সৃষ্টির সেরা নয়। মানুষের সাথে বনের হিংস্র জানোয়ার ও জন্তুদের সাথে পার্থক্য খুবই সামান্য।

পার্থক্য শুধু মানুষ এই পশুদের চেয়ে উচ্চ বুদ্ধির ক্ষমতাসম্পন্ন। এই পার্থক্যের কারণে হিংস্র জন্তু জানোয়ারেরা কাচায় মাংস খায় আর মানুষ রান্না করে খায় ! কোনো কোনো জাতি-উপজাতির তো নরমাংসই প্রিয় খাবার !

এই জঙ্গীবাদের ভয়াল থাবা থেকে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশও মুক্ত নয়। কয়েকদিন আগের সন্ত্রাসী জাওয়াহিরির ভিডিও বক্তব্য আমাদের শংকিত করে ! জাওয়াহিরীর ভিডিও নিয়ে আমার এক ফেসবুক স্টাটাসে এক বাংলাদেশী জঙ্গী মন্তব্য করেছে 'হে আল্লাহ তুমি দেশটাকে আফগানিস্থান অথবা সিরিয়া বানিয়ে দাও, জেহাদের ময়দান বানিয়ে দাও !' যারা বলেন বাংলাদেশে জঙ্গী নেই তারা হয় বোকার স্বর্গে আছেন নয়তো জঙ্গীবাদের সমর্থক ! এই জঙ্গীরা সুযোগের অপেক্ষায় আছে । গত বিএনপি সরকারের আমলে ২০০৫ সালে এরা একযোগে সারাদেশে বোমা হামলা করেছিল! এই জাওয়াহিরী ও তার অনুসারীদের কারনেই ইসলাম আজ সন্ত্রাসী ধর্ম ও মুসলমানরা সন্ত্রাসী নামে পরিচিতি পেয়েছে । এদের মুল কাজ হলো বোমাবাজী করা, মানুষ হত্যা করা, এরা এদের ভিন্নমতের মুসলমানকেও হত্যা করা ফরজ মনে করে।

এই সংগঠনটি আমেরিকা ও সৌদির যৌথ উদ্যেগে তৈরি, সৌদির অর্থে ও আর্শীবাদে এরা পরিপুষ্ট । সৌদি প্রতি বছর বিপুল পরিমান অস্ত্র কিনে এই আল কায়েদার জন্য । যেখানে যখন প্রয়োজন আলকায়েদাকে সেখানে পাঠিয়ে দেয় সৌদি -উদাহরন সিরিয়া। সিরিয়ায় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে আলকায়েদা যুদ্ধ করলেও বাহরাইনের ব্যাপারে তারা চুপ কারন বাহরাইনের খলিফা সৌদিপন্থী অথচ বাহরাইনে গন আন্দোলন চলছে সেই কয়েকবছর ধরে ও বাহরাইনের জনগন তাদের সরকার দ্বারা নির্যাতিত ও নিপীড়িত । কিছুদিন আগে সৌদির নির্দেশে রাশিয়াতেও সন্ত্রাসি আক্রমন চালিয়েছে আল কায়েদা ।

সেই হামলার নির্দেশদাতা ছিলেন সৌদি গোয়েন্দা প্রধান প্রিন্স বন্দর বিন সুলতান । আলকায়েদা ও তার সমর্থকদের বোঝা উচিত্‍ তাদের তথাকথিত জিহাদের জন্য বাংলার মাটি উর্বর নয় । বাংলার জমিনে এই সন্ত্রাসীদের কোনো ঠাই নেই । এরা যতই ধর্মের নামে তাদের জঙ্গীপনার বৈধতা দাবি করুক না কেন।

যাইহোক, ধর্মের যেমন কিছু সুললিত বানী আছে তেমনি কিছু কুৎসিত রুপও আছে।

ধর্মের এই কুৎসিত রুপটিই প্রকাশ করে এই উগ্রবাদীরা। তাই তারা যখন ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠার নামে নর হত্যা করে তখন তা নিজ ধর্মের নামেই করে। তারা আমার আপনার চেয়ে তাদের ধর্ম সম্পর্কে কম জানে এটা মনে করা কোনোমতেই উচিৎ হবে না-কারণ তারা জেনেশুনেই ধর্মের নামে এই অপকর্মগুলো করতেছে ও নরহত্যা করা তারা পূণ্যের কাজও মনে করে। তারা এটাও মনে করে এভাবে ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে ও করতে পারলে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত স্বর্গবাস শতভাগ নিশ্চিৎ ! এরা ছুটছে স্বর্গের দিকে যেখানে আছে সীমাহীন ভোগ আর আনন্দ, যুবতী নর ও নারীর মিলন মেলা। এই ভোগটা পার্থিব নয় বরং পরকালের।

তাই পৃথিবীকে মরীচিকা মনে করে এই সুন্দর পৃথিবীকে তারা অশান্তি ও সহিংসতার কুরুক্ষেত্র বানিয়ে নিজেদের স্বর্গবাসের নিশ্চয়তা আদায় করতে চাচ্ছে, কিন্তু তারা বুঝতে পারে না তারাও শুধু শুধু মরীচিকার পিছনে ছুটছে।
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।