আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সে বহু বছর আগের কথা।

নিরন্তর সত্যের উপর পথ চলি, দুমড়ে মুচড়ে দেই সব বাধা!

রাজবাড়ী আর পাবনা, পাশাপাশি দুটো জেলা। এপারে মিজানপুর ইউনিয়নের বিশাল চরান্চল যার একটার নাম ছিল কালিকাপুর। ওপারে নাজিরগন্জ, সাগরকান্দি, ঢালার চর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অন্চল। মাঝে উত্তাল পদ্মা ও বিশাল বালুর চর। শুস্ক মৌসুমে রাজবাড়ীর গোদার বাজার পার হয়ে মাইলের পর মাইল তপ্ত বালুকারাশি পা'য়ে হেটে তারপর পাওয়া যেত খেয়া ঘাট।

'গয়নার নৌকা' কিংবা সাধারন কোন খেয়ায় পার হয়ে ওপারে সবুজ ধান ক্ষেতের বিস্তীর্ন পথ, কিছুদুর গেলেই দোতলা কাঠের জমিদারী স্টাইলের বাড়ী।

সে বহু বছর আগের কথা। কালিকাপুর চরে এক মামাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান। বরের বাড়ী ওপারে। যেতে হবে বিয়ের যাত্রী হয়ে।

জাসদের তখনকার ওই অন্চল দাপটে রাখা কিছু কমরেডদেরকে নিয়ে শুরু হলো দুর্গম পথ যাত্রা। দিনের আলো শেষ হয়ে আকাশে রক্তিম আভা। সন্ধ্যায় পৌছানো মাত্র পেট ক্ষিদেয় চৌচির। বৈষম্যমুলক আপ্যায়নে বিক্ষুদ্ধ সবাই। সিদ্ধান্ত হলো অনুষ্ঠান বয়কট শুধু নয়, কাছেই শ্যামগন্জের হাট থেকে বাজার করে এনে বিয়ে বাড়ীর সামনেই রান্না করে খেয়ে অপমানের প্রতিশোধ নেয়ার।

কিছুক্ষণেই চলে এলো মাটির হাড়ি পাতিল, কাচা বাজার। সামনের চরের মধ্যেই কিছুটা পথ পা'য়ে হেটে তাবুর ঠিকানাও হয়ে গেল। দরকার এখন পদ্মার তাজা ইলিশ। বিশাল পদ্মার জলরাশির জলমহালের কন্ট্রোল করা মাতবর গোছের এক জাসদ কমরেডকে পাঠানো হলো ইলিশ সংগ্রহের কাজে। দ্রুতই ফিরে এলেন তিনি হালি খানেক সদ্য ধরা পরা ইলিশ নিয়ে।

খোলা আকাশের নীচে সুস্বাদু ইলিশ খিচুরী সাবাড় হলো নিমিশেই। এবার ফেরার পালা। আমাদের হাটার সাথে পাল্লা দিয়ে চাঁদ হাঁটে। কালিকাপুর চরের সেই বাড়ীতে যখন ফিরে এলাম রাত তখন মধ্য প্রহর।

আজ এত বছর পর, হিমাংকের ১৫ ডিগ্রী নীচের হিমশীতল ঠান্ডায় টরন্টোর রাস্তায় রাশি রাশি সাদা বরফের স্তূপ পার হই আর ভাবি, আহ, আবার যদি ফিরে যেতে পারতাম সেই সব রৌদ্র আর জোসনার আলো ছায়ার দিনগুলিতে!



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।