আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক লাখ কোটি ছাড়িয়েছে অলস টাকার পরিমাণ

রাজনৈতিক অস্থিরতা কেটে গেছে। স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এলেও বিনিয়োগ বাড়ছে না। ব্যাংকগুলোতে অলস টাকার পরিমাণ প্রতিদিন বাড়ছে। এসএমই ও কৃষি ঋণে সাফাল্য থাকলেও বৃহৎ বিনিয়োগ এখনো স্থবিরই রয়েছে। বর্তমানে দেশের ব্যাংকিং খাতে অলস টাকার পরিমাণ ছাড়িয়েছে এক লাখ কোটি টাকা।

অলস টাকা বেড়ে যাওয়া আমানতের সুদ হার কমিয়েছে ব্যাংকগুলো। তবে ঋণ সুদের হার এখনো ১৭ শতাংশের কাছাকাছি। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিনিয়োগ না বাড়াতে পারলে কর্মসংস্থানও বাড়বে না। ফলে স্প্রেড পার্থক্য কমিয়ে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ২০ শতাংশ।

কিন্তু ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ শতাংশের নিচে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ঋণ পুনঃতফসিলে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কারণে বাস্তবিক ঋণ প্রবৃদ্ধি এরও নিচে হবে। ২০১৩ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য ব্যাংকের ঋণ আদায় ও সরবরাহ বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য ছয় মাসের বিশেষ সুবিধা দেয়। এই সুবিধার পর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা পুনঃতফসিল করা হয়।

গত এক বছরে ব্যাংকগুলো প্রায় পাঁচ লাখ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। আগের বছরের তুলনায় যা প্রায় ১০ শতাংশ কম। তবে জানুয়ারি মাসের পর এই প্রবৃদ্ধি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতের উদ্বৃত্তের পাহাড় জমেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত চার বাণিজ্যিক ব্যাংকই আন্তব্যাংকিং লেনদেনে তারল্য ব্যবহার করছে।

গত তিন মাসের আন্তব্যাংকিংয়ে দেখা গেছে শুধু রূপালী ব্যাংকই প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি ধার দিয়েছে। ব্যাংকের কাছে এই মুহূর্তে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত তারল্য আছে। অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের কাছেও প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার তারল্য রয়েছে। সোনালী ব্যাংকের কাছেও প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার তারল্য রয়েছে। বিপুল পরিমাণ তারল্য থাকলেও বৃহৎ বিনিয়োগ গত তিন মাসে দেখা যায়নি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকের পরিস্থিতিও একই রকম। উদ্বৃত্ত তারল্য ধরে রেখে আন্তব্যাংকিংয়ে আগ্রহ অধিকাংশ ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবের স্থিতি প্রায় ৮ হাজার ৯০ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতের এ অতিরিক্ত তারল্যের সব অংশই অলস নয়। কেননা, সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ শুধু সরকারের উন্নয়ন ও অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য অপরিহার্য নয় বরং এই বিনিয়োগ ব্যাংকের জন্য ঝুঁকিমুক্ত আয়ও নিশ্চিত করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার বলেন, ২০১৩ সালে যে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাতে ব্যাংকিং খাত বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ছিল। এখন পরিস্থিতি উন্নতির দিকে, তাই এই ঝুঁকি কেটে যাবে এবং বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা মনে করি। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, টাকা বসিয়ে রেখে তো লাভ নেই। গত বছর ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন উচিত ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করা।

কিন্তু এখনো প্রায় ১৭ শতাংশের বেশি সুদ দিতে হচ্ছে ব্যাংক ঋণে। ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা মুনাফা করতে না পারলে টাকা ফেরত দেবে কীভাবে। তাই বিনিয়োগ বাড়াতে সুদের হারও কমাতে হবে।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।