আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাসিনা-মনমোহন বৈঠক: তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তি হচ্ছে না



ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ও স্থল সীমান্ত চুক্তি কিংবা ছিটমহল বিনিময় নিয়ে তাঁর দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

আজ (মঙ্গলবার) মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠককালে মনমোহন সিং স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রধান মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণেই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি আপাতত সম্ভব নয়। ’

বিমসটেক সম্মেলনে তিস্তার পানি বণ্টনের মতো স্পর্শকাতর বিষয় উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগেই প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার-নেপাল-ভুটান-থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানদের উপস্থিতিতে তিস্তা প্রসঙ্গ নিজের বক্তৃতায় উত্থাপন করে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি।



দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে হতাশার সুরে মনমোহন জানান, তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের জন্য তিনি সর্বসম্মতির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে সফল হননি। মনমোহন বলেন, ‘চুক্তি না হলেও তিস্তা নদীর পানি প্রাকৃতিক নিয়মে উচ্চ অববাহিকা থেকে নিম্ন অববাহিকায় প্রবাহিত হচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাভাবিক নিয়মে পানি পাবেই। ’

বৈঠকে শেখ হাসিনা প্রস্তাব দেন, “পানি স্বাভাবিক নিয়মে বাংলাদেশে ঢুকলেও ফারাক্কার মতো পানি বণ্টনের মতো একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি হওয়া উচিত।

“ এর উত্তরে মনমোহন সাফ জানিয়ে দেন, “এখন আর সম্ভব নয়। লোকসভা ভোটের পরের সরকারের জন্য অপেক্ষা করুন। “

আধঘণ্টার ওই বৈঠকে শেখ হাসিনা ছিটমহল চুক্তির বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে মনমোহন বলেন, “এখন ভারতের লোকসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ। ফলে আর সেই চুক্তি অনুমোদনের কোনও সম্ভাবনা নেই। "

মনমোহন জানান, “বিলটি রাজ্যসভায় পেশ করা আছে।

তাই লোকসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও বিলটি রাজ্যসভায় থেকেই যাবে। পরবর্তী সরকার যদি মনে করে তাহলেই বিলটি নিয়ে এগোবে। “

তবে, ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ভারত থেকে আরো ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্‍ কিনতে পারবে বলে আশ্বাস পেয়েছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ ইলিশ রফতানির উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বলে এখানে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মিয়ানমারের ইরাবতী নদীর ইলিশ আমদানি করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব দেন।

এই জন্য বিমস্টেক সম্মেলনে এবার মত্স্যক্ষেত্রে সহযোগিতার উল্লেখ হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে তা ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়।

শেখ হাসিনা বৈঠকে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান – এই চারটি দেশের আঞ্চলিক উদ্যোগে জলবিদ্যুত্‍ কেন্দ্র নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দেন। দুই দেশের স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। এছাড়া, প্রটোকল বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধনের বিল দ্রুত ভারতের পার্লামেন্টে পাস হবে বলেও আশা করেন দুই নেতা।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে।

এসব নদীর পানি প্রবাহ নিয়ে ১৯৭২ সাল থেকে নানা হিসাব নিকাশ কষছে দু’দেশের নদী কমিশন। এর মধ্যে শুধু গঙ্গার (পদ্মা) পানি বণ্টন নিয়ে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি রয়েছে। এরপর ২০১১ সালে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের সব কিছু সম্পন্ন হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির মুখে তা আটকে গেছে। এখনও সেটা অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকে গেল


Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।