আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিন পাগল: ফকির লালন

না লিখুম না.........। লালনের " তিন পাগল" এর গানটি শুনেনি, এমন বাঙ্গালী এ দেশে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু এই তিন পাগল কে কে ছিলেন ?? এই গানের অর্থও বা কি ?? জানতে হলে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। -- ""তিন পাগলে হৈল মেলা নদে এসে তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে। "" ## নদে মানে ধরে নিচ্ছি, নদীয়া, নদীয়া জেলা।

জ্ঞানপীঠ বলে যে জায়গাটির এককালে বিপুল খ্যাতি ছিল। সেই নদীয়া জেলায় তিনজন পাগলের মেলা বসেছে। আমরা অনেক সময় বিদ্যাধর পন্ডিতব্যাক্তিকে পাগল বলি। ‘হৈল মেলা’ বলতে দেখা হয়েছে বোঝানো হয়েছে। -- ""একটা পাগলামী করে জাত দেয় সে অজাতেরে দৌড়ে গিয়ে আবার হরি বলে পড়ছে ঢলে ধূলার মাঝে তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে।

"" ## একজন পাগলামী করে ‘জাত দেয় সে অজাতেরে দৌড়ে গিয়ে’। এই পাগলেরা বৈপ্লবিক চিন্তাচেতনায় আচ্ছন্ন। বাংলায়-যেখানে জাতপাতের অলঙ্ঘনীয় প্রাচীর উঠেছে-সেখানে জাতহীনকে জাত দেওয়া সহজ কথা নয়: এক অর্থে এটি পাগলামীই বটে। অজাতকে জাত দিলে নিজের জাত খোয়ানোর আশঙ্কা থাকে। -- ""একটা নারকেলের মালা তাতে জল তোলাফেলা -করঙ্গ সে; পাগলের সঙ্গে যাবি পাগল হবি বুঝবি শেষে"" ## একদা গ্রামাঞ্চলে নারকেলের মালাকে ‘কাপ’ কিংবা ‘মগ’ হিসেবে ব্যবহার করা হত; এই নারকেলের মালার আরেক নাম-‘করঙ্গ’।

এই করঙ্গ-র বৈশিষ্ট্য স্থির বা Fixed. কেননা, এতে কেবল ‘জল তেলাফেলা-ই’ হয় -আর কিছু হয় না। এই ধরনের স্থির চরিত্র দিয়ে সমাজ (বা কর্পোরেট সোসাইটি) তৈরি হয়, এরা বোধবুদ্ধিহীন অনঢ় বলেই পরিবর্তনের প্রয়োজন বোধ করে না। কাজেই দীর্ঘকাল সমাজের শুভ পরিবর্তন হয়নি। এরা সমাজ টিকিয়ে রাখার স্বার্থে জাতপাত, বর্ণবৈষম্য ও শ্রেণিবৈষম্য টিকিয়ে রাখে। যে জাতপাত নদীয়ার তিন ‘বিপ্লবী পাগল’ ভেঙে ফেলতে চান।

লালন যে কারণে র্ভৎসনা করে বললেন, ‘পাগলের সঙ্গে যাবি পাগল হবি বুঝবি শেষে। ’ -- ""পাগলের নামটি এমন বলিতে ফকিল লালন ভয় তরাসে। চৈতে নিতে অদ্বৈয় পাগল নাম ধরেছে। "" ## মহৎ মানুষের নাম সহজে উচ্চারণ করা যায় না। যেমনটি, এককালে বাংলায় বউরা স্বামীর নামটি মুখে আনতে ভয় পেত।

তেমনি, পাগলের নাম উচ্চারণ করতে লালন ভয় পান। এত বড় মাপের মানুষ, ভয় তো হবেই। চৈতে হলেন শ্রীচৈতন্যদেব; নিতে হলেন শ্রী নিত্যানন্দ এবং অদ্বৈয় হলেন অদ্বৈত আচার্য। লেখাঃ ইমন জুবায়ের। ।

( সংক্ষেপিত ) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।