আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জেএসসি ও পিএসসি রেজাল্টের আনন্দে সারা দেশ ভাসছে অথচ পরীক্ষার ফল শুনে ২ ছাত্র-ছাত্রীর আত্মহত্যা

আজ যদি সরকার পিএসসি ও জেএসসি নামক এই দুটি পরীক্ষা নতুন করে চালু না করতো তাহলে এই দুটি প্রাণ ঝরে পড়তো না। আমি সরকারকে দোষ দিচ্ছি ন‍া। কারণ সরকার যা করেন তা জনগণের ভালোর জন্যই করেন। কিন্তু তা কতোটা ভালো হয় তা আমরা জানি না। কোমলমতি এসব শিশুরা ব্যর্থতার চাপ সইতে না পেরে অল্প বয়সেই জীবনের নির্মম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে।

এটা জাতিগতভাবে আমাদের জন্য বিপদজনক। সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় একের পর এক পরিবর্তন করে চলেছেন। পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ এর বন্যা বইছে। আদতে কি এতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে? না। শুধু ঝুড়ি ঝুড়ি জিপিএ ৫ এলেই শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবে এমনটা ভাবা যাবে না।

শুধুমাত্র বই পুস্তকের পাঠদান করে শিক্ষার্থীদের জিপিএ ৫ এর পাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তুললেই শিক্ষা ও শিক্ষকের কাজ শেষ হয়ে যায়? আজকাল টাকার বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষার্থীরা ভালো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করার সুযোগ পাচ্ছে আর জিপিএ ৫ প্রাপ্তর‍া যাদের টাকা পয়সা নেই তারা ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা লাভ করার সুযোগ হারাচ্ছে। সরকার এ কোন শিক্ষার উন্নতি করছে? আমাদের দেশের বেশীরভাগ শিক্ষকই সৃজনশীল বিষয়ে প্রশিক্ষিত নয়। আপনি যদি কোনো একটি স্কুলের একাধিক শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করেন যে, সৃজনশীল আসলে কী? তাদের অনেকেরই উত্তর এরকম হবে - প্রথমে একটি অনুচ্ছেদ থাকবে। তারপর সেই অনুচ্ছেদের ওপর ভিত্তি করে (ক) নম্বরে জ্ঞানমূলক একটি প্রশ্ন থাকবে (খ) নাম্বারে অনুধাবনমূলক (গ) নাম্বারে প্রয়োগমূলক ও (ঘ) নাম্বারে উচ্চতর দক্ষতামূলক ১টি প্রশ্ন থাকবে। এর বাইরে বেশীরভাগ শিক্ষকই বলতে পারবেন না।

তারা নিজেরাই সৃজনশীল বিষয়ে ঠিকমতো জানেন না। তারা কীভাবে শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো সৃজনশীল বিষয়ে শিক্ষা দিবেন? এছাড়া আজকাল প্রায়ই দেখা যায় রাস্তার মোড়ে সর্বক্ষণ আড্ডা দেওয়া ছাত্রটি, টিভির সামনে সারাক্ষণ উপুড় হয়ে বসে থাকা ছাত্রিটি পর্যন্ত ভালো গ্রেড নিয়ে পাস করছে অথচ দিনের বেশিরভাগ সময়ই পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকা শিক্ষার্থীটি ফেল করছে পরীক্ষকদের অসাবধানতার কারণে। পরবর্তীতে আবেদন করলেও শতকরা ১০% শিক্ষার্থী এর সুফল পায়। বাকিদের ভাগ্যে সেই আগের ফলাফলই বহাল থাকে। আজকের প্রকাশিত পরীক্ষার ফল দেখে অনেকেই উচ্ছস্বিত হতে পারেন।

কেননা পরীক্ষায় পাসের হার অনেক ভালো। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে, শিক্ষকদের পরীক্ষার খাতা দেখতে দেওয়ার সময় কী বলে দেওয়া হয়। শোনা যায় তাদেরকে নাকি বলা হয় আপনি যে খাতটি দেখবেন মনে করবেন সেটি আপনার সন্তানের খাতা। একেবারে অসমর্থ না হলে কিছুতেই ফেল করাবেন না। যে করেই হোক পাস করিয়ে দিবেন।

এই যদি হয় সরকারের পক্ষ থেকে আদেশ তাহলে কি দরকার নিত্য নতুন শিক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন করার? কি দরক‍ার এতোসব পরীক্ষা নেওয়ার? আজকে যেই শিক্ষার্থী ১ ‍বিষয়ে খারাপ করেছে সেজন্য সেই শিক্ষার্থীটি ১ বছর পিছিয়ে গেলো। এ থেকে অনেক শিক্ষার্থীই মনোবল হারিয়ে ফেলবে। অনেক শিক্ষার্থীরই ঝরে পড়ার আশংকা রয়েছে। আগে শুধুমাত্র এসএসসি - তে ঝরে পড়তো আর এখন পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি এই তিন জায়গায় ঝরে পড়বে। এতে দেশে শিক্ষার হার বাড়বে? বি:দ্র: উপরের শিরোনামের নিউজটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.