আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'দাম বাড়ালে প্রতিরোধ'

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ালে ১৯ দলীয় জোট কঠোর ও কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। দুঃশাসনের করাল গ্রাসে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত মানুষকে স্বস্তি না দিয়ে সরকার একের পর এক উচ্চ মাত্রায় জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে যাচ্ছে। গরিব মানুষকে আরও বেশি অসহায় ও হতভাগ্য করার জন্য সরকার কোমর বেঁধে নেমেছে। ক্ষমতা জবরদখলকারী সরকার মূলত জনগণকেই শত্রুপক্ষ বানিয়ে তাদের ওপর শোষণ, জুলুম ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সবচেয়ে ধনী আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম দুই পয়সা বৃদ্ধি এবং দরিদ্র আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম দেড় টাকা বৃদ্ধি করার প্রস্তাবের মধ্যে বর্তমান 'অবৈধ সরকারের' যথেচ্ছাচারের চরম মাত্রা। পিডিবির প্রস্তাবে সবেচেয়ে গরিব ছাড়াও দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের ক্ষেত্রে মূল্য বৃদ্ধির হার অনেক বেশি রাখা হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতির কেন্দ্র কৃষিকে বিপর্যস্ত করতে সেচ পাম্পের জন্য প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান 'অবৈধ সরকার' গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে। এরা জনসমর্থনহীন।

তাই জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা কোনো কিছুর পরোয়া করছে না। স্বার্থান্ধতা, ঔদ্ধত্য ও অসহিঞ্চুতার মিশেলে এরা অপশাসনের দুর্বৃত্তচক্র গড়ে তুলেছে। জনগণের সুখ, শান্তি ও স্বাচ্ছন্দ্যের নিশ্চয়তার প্রতি দায়বোধ করে না বলেই বিদ্যুতের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জরুরি খাতকে লোপাট করে জনগণের ওপর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির জগদ্দল পাথর চাপানো হচ্ছে। মির্জা ফখরুল অবিলম্বে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।

নইলে কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই বেশ কয়েক দফা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করে বিদ্যুতের সাধারণ গ্রাহক শ্রেণীর ওপর অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের বোঝা চাপানো হয়। ক্ষমতাসীনদের আত্মীয়স্বজনদের লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানানো হয় বিদ্যুৎ সেক্টরকে। রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে সরকারের ঘনিষ্ঠজনেরা বিদ্যুৎ সেক্টরকে ধ্বংস করে এখন তারা সবচেয়ে গরিব, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের ওপর বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করছে। বিদ্যুৎ জনজীবনের জন্য অপরিহার্য, তাই এই খাতকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে তারা কখনো কার্পণ্য করেনি।

দাম বাড়লে আন্দোলন : দেশবাসীর উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিদ্যুতের দাম কমাতে চাইলে সরকার পরিবর্তন করুন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দাম শুধু বাড়বে, কমবে মানুষের জীবনের মান। যদি বিদ্যুতের দাম কমাতে চান, তাহলে সরকার পরিবর্তন করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়লেই প্রতিবাদ জানানো হবে। প্রয়োজনে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর শাহজাহানপুর মাহবুব আলী মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, আবুল কাশেম চৌধুরী, জাফরুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি মানে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি। এতে জনগণের ভোগান্তি বাড়বে। কুইক রেন্টাল নামের যে লুট হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে।

বিদ্যুৎ অফিসগুলোয় যে লুট হচ্ছে, তা বন্ধ করতে হবে। এসব লুট বন্ধ করতে পারলে দাম বৃদ্ধি করার প্রয়োজন নেই। বিএনপির এই নেতা বলেন, উপজেলা নির্বাচনে সরকারের জনপ্রিয়তার বেলুন ফোকলা হয়ে গেছে। তারা জামায়াতের কাছেও হেরে যাচ্ছে। ভোটারবিহীন নির্বাচন করে সরকার বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।

সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম আন্দোলনকারীদের হাত-পা কেটে দেওয়ার যে কথা বলেছেন, তা কোনো সভ্য সমাজে বলতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা দলীয় চাঁদা দেননি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দিয়ে দেন। না দিলে যে নতুন কমিটি হবে, তাতে স্থান পাবেন না। চাঁদা না দিলে, পদও মিলবে না।

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।