আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেরা অধিনায়কের সমাপ্তি

কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে স্মিথের বিদায়ী টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২৪৫ রানে হেরে গেছে স্বাগতিকরা। তিন ম্যাচের সিরিজ তারা হেরেছে ২-১ ব্যবধানে।

সোমবার টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে সবাইকে অবাক করে দিয়ে অবসরের ঘোষণা দিযেছিলেন স্মিথ। অবসরের সিদ্ধান্তটা তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত হলেও এটা হঠাৎ করে নেয়া নয়। গত এপ্রিলে গোড়ালির অস্ত্রোপচার করার পর থেকেই নাকি অবসরের চিন্তা করছেন স্মিথ।

স্মিথের বিদায়লগ্নের পুরোটাই হতাশায় ঢাকা। মঙ্গলবার শেষ বারের মতো ব্যাট করতে নেমে সিরিজে চতুর্থবারের মতো মিচেল জনসনের ‘শিকারে’ পরিণত হন স্মিথ। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের ‘স্যালিউট’ আর সাজঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসা সতীর্থদের বিদায় সংবর্ধনা স্মিথকে সান্ত্বনা ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি। জীবনের শেষ টেস্ট সিরিজে ব্যাট হাতে দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে তার। তিন টেস্টের সিরিজটিতে মাত্র ৪৫ রান করেছেন তিনি, গড় ৭.৫।

শেষ টেস্টে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র আট রান।

আর তার দল পাঁচ বছর পর প্রথম টেস্ট সিরিজ হারলো। শেষবার ২০০৮/০৯ মৌসুমে এই অস্ট্রেলিয়ার কাছেই তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ এ হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

এই ব্যর্থতা স্মিথের বিদায়বেলাটাকে তাই কিছুটা ম্লান করে দিলেও তার সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ার কখনও ম্লান হবার নয়। ২২ বছর বয়সে নেতৃত্বের গুরুভার কাঁধে চাপা স্মিথের রয়েছে বিরল একটি বিশ্ব রেকর্ড।

ক্যারিয়ারের ১১৭টি টেস্টের ১০৯টিই তিনি খেলেছেন অধিনায়ক হিসেবে।

১০৯ টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৫৩টিতেই জিতেছেন তিনি; শেষ ম্যাচটিসহ হেরেছেন মাত্র ২৯টি। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডে পরিসংখ্যানটা আরও সমৃদ্ধ। ১৪৯ ম্যাচের মধ্যে ৯১টিতে জিতেছে স্মিথের দক্ষিণ আফ্রিকা। আর টি-টোয়েন্টিতে ২৭ ম্যাচে জয় ১৮টি।

২০১২ সালে স্মিথের নেতৃত্বেই টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। যা এখনও ধরে রেখেছে দলটি।

২০০২ সালের মার্চে, ২১ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন স্মিথ। আর পরের বছর এপ্রিলে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে দেশের নেতৃত্বভার কাঁধে চাপে তার। নেতৃত্বের অভিষেকের চাপটা কিন্তু ভালোই সামলেছিলেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছিল ইনিংস ও ৬০ রানে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম ইনিংসে মাত্র তিন রান করেছিলেন স্মিথ। শেষটাতেও তার ব্যাট থেকে এল তিন রান। স্মিথের ক্যারিয়ারে মিল আছে আরেক জায়গায়, প্রথম টেস্টের মতো শেষ টেস্টেও হার হলো সঙ্গী।

অধিনায়কত্বের মতোই ব্যাট হাতে স্মিথের সাফল্য রীতিমত ঈর্ষণীয়।

১১৭ টেস্টে নয় হাজার ২৬৫ রান করেছেন তিনি। ১৯৭ ওয়ানডেতে তার রান ছয় হাজার ৯৮৯। আর ৩৩ টি-টোয়েন্টিতে ৯৮২ রান করেছেন স্মিথ।

টেস্টে ২৭টি শতক (যার মধ্যে পাঁচটি দ্বি-শতক) ও ৩৮টি অর্ধশতক করেছেন স্মিথ আর ওয়ানডেতে তার শতক ১০টি, অর্ধশতক ৪৭টি।

বয়সের বিবেচনায় কিন্তু আরো কিছুদিন অনায়াসেই খেলতে পারতেন ৩৩ বছর বয়স্ক স্মিথ।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে ব্যর্থতাই হয়ত তাকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। কারণ শেষ পাঁচ টেস্টের ১০ ইনিংসে মাত্র একটি অর্ধশতক করেছেন স্মিথ, গত ডিসেম্বরে ভারত সফরে।

সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে অবশ্য আগেই সরে দাঁড়িয়েছেন স্মিথ। গত নভেম্বরে পোর্ট এলিজাবেথে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন তিনি।




সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     বুকমার্ক হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।