আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘাটতি নেই, তবু বাড়ছে চাল আমদানি

চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) চাল আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এক হাজার শতাংশের বেশি বেড়েছে। এলসি নিষ্পত্তির বেড়েছে প্রায় একই হারে।

দেশে চালের ঘাটতি নেই, তারপরও আমদানির এই তথ্য ‘অবিশ্বাস্য’ বলে মনে করছেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আহমেদ হোসেন খান।

বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বেশ কিছু দিন ধরে সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি হচ্ছে না। বেসরকারি পর্যায়ে কিছু হয়ে থাকতে পারে।

তবে সাত মাসে এক হাজার শতাংশ প্রবৃদ্ধি আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। ”

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে চাল আমদানির জন্য মোট ১৭ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল এক কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাৎ, এই সময়ে এলসি বেড়েছে ১০৬০ শতাংশ।

একই সময়ে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১২ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের।

২০১২-১৩ অর্থবছরে জুলাই-জানুয়ারি সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছিল এক কোটি ১৫ লাখ ডলারের। এ হিসাবে এলসি নিস্পত্তি বেড়েছে ১০০০ শতাংশ।

অবশ্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব হোসেনের মতে, গত দুই বছর চাল আমদানি এক প্রকার না হওয়ায় এবার হিসাব করা হচ্ছে একেবারেই ছোট অংক থেকে। এ কারণেই ‘শতাংশ’ হিসাবে আমদানি অনেক বেশি বলে মনে হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৩ কোটি ডলারের চাল আমদানি করা হয়, যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বনিম্ন।

তার আগের অর্থবছরে চাল আমদানিতে খরচ হয়েছে ২৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। আর ২০১০-১১ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৮৩ কোটি ডলারের চাল।    

বছরে সোয়া তিন কোটি টন চাহিদার বিপরীতে গত বছর দেশে চালের উৎপাদন ছিল তিন কোটি ৩৮ লাখ টন। আর সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে বর্তমানে ৮ লাখ ২৫ হাজার টন চাল মজুদ আছে বলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আহমেদ হোসেন খান জানান।  

বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক মাহবুব হোসেন বলছেন, গত ছয়-সাত মাস ধরে দেশের বাজারে চালের দাম বাড়তির দিকে।

অন্যদিকে ভারতে চালের দাম কিছুটা কম। এ কারণে লাভের কথা ভেবে বেনাপোলসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করছেন।

দেশে পাইকারি চালের বৃহত্তম আড়ত ঢাকার বাবুবাজার ও বাদামতলী চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন বলেন, ঢাকার ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করছে না। আমদানি করছেন সীমান্ত এলাকার ব্যবসায়ীরা।

আর বেনাপোল বন্দরের চাল আমদানিকারক মশিউর রহমান বলেন, ভারতের স্বর্ণা চালের দাম কিছুটা কম বলে প্রায় প্রতিদিনই কিছু চাল আমদানি হচ্ছে।

এতে ব্যবসায়ীদের কেজিতে এক টাকার কিছু বেশি লাভ থাকছে।

এই আমদানিকারক বলেন, দেশে চালের কোনো ঘাটতি না থাকলেও ব্যবসায়ীরা এলসি করে রাখেন। তারা প্রতিদিন কলকাতা ও দেশের চালের বাজার পর্যবেক্ষণ করেন এবং ভারতে দাম কম দেখলেই কিছু চাল কিনে দেশে নিয়ে আসেন।

মশিউর বলেন, “আমদানি করা এই চাল ঢাকা কিংবা চট্টগ্রমে যায় না। এগুলো যশোর আর খুলনা অঞ্চলের স্থানীয় বাজারেই বেশি বিক্রি হয়।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত দুই বছরে বোরোর উৎপাদন একই জায়গায় রয়েছে। অথচ এই সময়ে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে; বেড়েছে চাহিদা। সব কিছু হিসাব-নিকাশ করেই চাল আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা। ”

‘সরকারি মজুদ আগের মত নেই’ মন্তব্য করে মাহবুব হোসেন বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৫ থেকে সাড়ে ১৫ লাখ টন খাদ্য মজুদ থাকার কথা;  চাল ও গম মিলিয়ে মজুদ আছে সাড়ে দশ লাখ টন। আমদানিকারকরা এ বিষয়টিও মাথায় রাখছেন।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.