আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুই দলে দুই 'দানব'

মিরপুরে আজ হাহাকার থাকবেই। গত বছরে বাংলাদেশ ছিল ফাইনালে। তাই চিত্রটাও ছিল ভিন্ন। পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপটটা আলাদা।

গতবারের ফাইনালিস্ট পাকিস্তান আছে ঠিকই, কিন্তু মুশফিকদের জায়গায় শ্রীলঙ্কা। তবে সাকিবরা না থাকলেও আজ জমে উঠতে পারে এশিয়া কাপের ফাইনাল। কারণ দুই দলে রয়েছে দুই 'দানব'। দুই ত্রাস_ পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি ও শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা। তবে দুই তারকাই হালকা ইনজুরি সমস্যায় ভুগছেন।

মালিঙ্গার জ্বর, তবে গুরুতর নয়। আর হিপ ইনজুরিতে ভোগা আফ্রিদি খেলতে পারবেন কিনা তা জানা যাবে সকালেই। তবে পাকিস্তান যে কোনো আজ 'বুমবুম'কে মাঠে নামাতে চাইবে তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্রিকেট বুদ্ধির খেলা। ১১ জনের একটু একটু সাফল্যে দলের ফল নির্ধারিত হয়।

কখনো কখনো পরিস্থিতি এমন হয় যে, ১১ খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স নস্যি হয়ে যায় একজনের কাছে। বুদ্ধির চেয়েও খেলাটা হয়ে যায় শক্তির। বাংলাদেশ ও ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের শেষ দুটি ম্যাচের কথাই ভাবুন একবার। এক আফ্রিদি কি করে ফেলল! অন্য ক্রিকেটাররা হয়তো আফ্রিদিকে প্লাটফরমটা তৈরি করে দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আফ্রিদির বিধ্বংসী ইনিংস না হলে তো সবই বৃথা যেত। ভারতের বিরুদ্ধে আফ্রিদির শেষ দুই ছক্কা এখনো ভক্তদের চোখে ভাসছে।

আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অসুরীয় কায়দায় কি ছক্কাগুলোই হাঁকালেন। যে ম্যাচটা ছিল মুশফিকদের হাতের মুঠোয় তা মুহূর্তের ব্যবধানে হয়ে গেল পাকিস্তানের। অতিমানবীয় স্টাইলে আফ্রিদি যেন ক্রিকেটের চিরাচরিত ব্যাকরণকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছিলেন। কী ইয়র্কার, কী গুডলি_ কিছু মানেননি তিনি। পেসার-স্পিনার সবাইকে হতবাক করে দিয়েছেন।

তাই আজকের ফাইনালে আফ্রিদির দিকেই দৃষ্টি থাকবে সবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি সামান্য হিপ ইনজুরিটাই বেশি সমস্যা করে তবে পাকিস্তান দলের জন্য তা হবে খুবই হতাশার। আফ্রিদিকে ছাড়া শ্রীলঙ্কার সামনে তারা দাঁড়াতে পারবে কিনা!

২.৫_০_১০_৫, লাসিথ মালিঙ্গার স্বপ্নের এক স্পেল। সেটাও কিনা এই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, চলতি এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে। শিশিরসিক্ত ফতুল্লাহ খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে জয়ের দ্বারপ্রান্তেই গিয়েছিল পাকিস্তান।

কিন্তু মালিঙ্গার এই বিধ্বংসী স্পেলটাই সব শেষ করে দেয়। তাছাড়া লঙ্কান পেসারের বোলিং অ্যাকশন কিংবা রঙিন চুলের বাবরি -সব কিছুর মধ্যেই কেমন যেন একটা দানবীয় ভাব! ৩০ গজ দৌড়ে এসে হাতের অর্ধেকটা ঘুরিয়ে তার বল ছোড়ার ব্যাটসম্যানের বুকে কাঁপন ধরায়। তাছাড়া মালিঙ্গার এক-একটি ইয়র্কার ডেলিভারি যেন আগুনের গোলা। যত বড় মাপের ব্যাটসম্যানই হোক না কেন সমীহ করতে বাধ্য। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টানা চার বলে শন পোলক, অ্যান্ড্রু হল, জ্যাক ক্যালিস ও মাখায়া এনটিনিকে আউট করে প্রোটিয়াদের বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন।

শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা জয় পেলেও পেস 'দানব' হিসেবে ক্রিকেটবিশ্বে পরিচিতি লাভ করে মালিঙ্গা। আর লঙ্কানরা চাইবে আজও মালিঙ্গা সেই ভয়ঙ্কর রূপে আবিভর্ূত হোক, ঠিক যেমনটা হয়েছিল এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে কিংবা ২০০৭ বিশ্বকাপে। দুই দলে দুই 'দানবে'র কীর্তি দেখার জন্যই আজ মিরপুর শেরেবাংলা হতে পারে কানায় কানায় পূর্ণ। আর ইনজুরিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে যদি দুই তারকাই মাঠে নামেন তবে এটিই হতে পারে এশিয়া কাপের ইতিহাসে সেরা ফাইনাল।

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।