আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তরল দুধের মেয়াদ কাল



আমার লিকলিকে শারীরিক গঠনের বন্ধু বিদেশ যাইয়া বড্ড মোটা-তাজা হইছে দেখিয়া বড়ই পুলকিত হইছি। হাসতে হাসতে কইলাম – কিরে কি অবস্থা তোর! কেমনে এত হ্যান্ডসাম হইলি? উত্তরে ও হাসতে হাসতে উত্তর দিলো – বিদেশের বাতাস তো তার জন্য মনে হয়। অবশ্য আমি অর্বাচীন তো এমনিতেই জানতাম- যে মানুষ বিদেশ গিয়া অনেকদিন থাকলে মোটামুটি গরু মোটা-তাজাকরন এর খামার থেকে ঘুরিয়া আসে। তবে এইখানে প্রশ্ন হইলো গিয়া- আছে কোণ দেশে? বন্ধু আমার কুয়েত প্রবাসী। ব্লগে যারা বিদেশে বসবাস করছেন, তারা অবশ্য আমার চেয়ে বেশি ভালো ভালো বলতে পারবেন।

আমি বললাম গল্প ক? বলল -কি গল্প? কইলাম কি অবস্থা জীবন যাত্রার মানের? কুয়েতে থাকা একজন প্রবাসীর ভাষ্য আমি সংক্ষেপে তুলিয়া ধরিতেছি। -

“শোন, আমরা কোণ বাসি খাবার খাই না। সব তাজা খাবার খাই। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম অন্যান্য খাবার এর নির্দিষ্ট মেয়াদের আগেই ক্রেতাদের ক্রয় করতে হয়। কোণ দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ পানি ও যদি পাওয়া যায়, তাইলে সে দোকানের টেড লাইসেন্স আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে দেয়।

ধর, দুধের মেয়াদ আছে ৪৮ ঘণ্টা আর রুটির মেয়াদ চব্বিশ ঘণ্টা। সে সময় পার হওয়ার সাথে সাথে তা ডাস্টবিনে অথবা নির্দিষ্ট জায়গায় তার অবস্থান হয় বাতিল-কৃত পণ্য হিসেবে। প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার দুধ, রুটি অন্যান্য জিনিষ যা মেয়াদ উত্তির্ন তা আবর্জনা হিসেবে ফেলে দেয়া হয় নির্দিষ্ট স্থানে। ”

আমি শুনিলাম আর বলিলাম- আচ্ছা!তাইলে এই তোর গুরু রহস্য!

এইবার আমার মতন একজন বাংলাদেশে বসবাস করতে থাকা লোকের বয়ান শুনেন। সীমাবদ্ধ রোজগারের হিসেবি জীবনের এই আমি যখন ল্যাকটোজেন আর সেরেলাক দুধ এর বদলে মিল্ক ভিটা, আড়ং, প্রাণ, ফ্রেশ, ডেইরি ফ্রেশ ইত্যাদি আরও নানান কোম্পানির তরল দুধের উপর ভরসা করিয়া থাকি নিজ সন্তানকে খাওয়াইবার জন্য।

সে তরল দুধ এর প্যাকেটের গায়ে লেপটে থাকা মেয়াদ উত্তির্ন কাল এর মধ্যেই কিনিবার সুযোগ হয়না বেশিরভাগ সময়ই। দোকানদারকে যখন জিজ্ঞেস করি- ভাই এইটার তো মেয়াদ নাই! উত্তরে দোকানী বলিয়া থাকে- ভাই দুধের আবার মেয়াদ কি! দেখেন না ফ্রিজ থেকে বাইর কইরা দিলাম। আমি যখন বলি- আচ্ছা নিমু না। দেখি পাই কি না। সামনে আরেক দোকানে এসে একই অবস্থা! ধরে নেন- তরল দুধের প্যাকেটের গায়ে মেয়াদের তারিখ লিখা আছে- ০১-০২-১৪ আর মেয়াদ উত্তির্নর তারিখ ৭-২-১৪ইং।

কিন্তু আমি যখন প্যাকেট হাতে নিয়েছি, তখন এর তারিখ হল ০১-৩-১৪।

মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে, তা অবশ্যই ডাক্তার-গন অথবা বিশেষজ্ঞ-গন ভালো বলতে পারবেন। তবে ‘আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান’ সে গান এর লাইনটির বাস্তবতার দৃশ্য ‘আমরা জেনেশুনে বিষ করিতেছি পান’ অহরহ পান করিতেছি। আমি আপনি না হয় একটু দেখে শুনে মেয়াদ দেখে পণ্য ক্রয় করার চেষ্টা করি। আর সবাই!

এ ব্যাপারে বাংলাদেশের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন সংগঠন অথবা বিশেষজ্ঞদের মতামত জানিবার ইচ্ছে হয়।

তবে আমার করনীয় যতটুকুন তা আমি করেছি এবং করছি। অন্তত যে দোকান থেকে তরল দুধ ক্রয় করি, তাকে এ ব্যাপারে সচেতন করার চেষ্টায় আছি

আপনারাও আজ থেকে এ ব্যাপারে একটু খোজ নিয়েন, সত্যতা অবশ্যই পাবেন। তরল দুধের মেয়াদ কালীন সময়ের দুধ আপনি পাবেন না বেশির ভাগ ক্ষেত্রে , এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।