আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোন এক আমি’র একখণ্ড জীবন

কিছু বলার নেই। আমি যা আমি তা অর্থাৎ যাতা. . .


নিজেকে খোলা বইয়ের এর মতো রাখতে চেয়েছে সে, চেয়েছে জটিলতাহীন “আমি” থাকতে। জীবনের প্রয়োজনে কখনো কখনো হিসেবি হতে হলেও, বেহিসেবিই বেশি কিন্তু জটিলতা পরিহার করে গেছে । বিষয়টায় কোন রকম মহত্ব আরোপ করা হচ্ছে না, খুব সম্ভবত সে জটিল করে ভাবতেই জানে না, তার মানসিক গঠন হয়ত বোকাটে !
কিন্তু সব কিছু অবশেষে জটিল !
কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও ভাবনা চিন্তাদের তেমন একটা সক্রিয় হতে দেয়া হয় না, আবেগরাই অগ্রগণ্য ভূমিকা রাখে … জীবনের খুব বড় সিদ্ধান্তগুলি নেয়ার বেলায় দেখা গেছে সময়ও তেমন পাত্তা পায়নি, সময়-ব্যয় হয়নি তার। হয় না কখনই, হুটহাট নিয়ে নিতে পারে।

কোন বিষয়ে মন-এর সায় থাকলেই হলো… যদিও এতে অপমানিত সময় ঠিকই শোধ তুলে নিতে ছাড়েনি!

এমন স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতায় প্রিয়রা অবহেলা টের পায়। অভিমান উসাকানি দেয়, মনে তাদের মেঘ জমে … অদ্ভুত এক ঘোরের মধ্যে ডুবে থাকা সর্বদা অসচেতন “আমি”র বিস্ময় মিশ্রিত উপলব্দি ঘটে, সাথে চলে আত্মতিরস্কার - “উহু, ভালোবাসার দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাওয়া ! এ কেমন আমি !!!”

ফল স্বরূপ ভালোবাসার দায়বদ্ধতার গুরুত্ব বেড়ে গেলো, গুরুত্ব বাড়লে যা হয়, সুযোগ নেয়ার প্রবনতাও সাথে বাড়ে…সুযোগের সদ্ব্যবহার করে “আমি”কে প্রিয় ভালোবাসাদের কাছে দায়ের দায়-এ আটকে দেয়া হলো।

এই তো সেদিন, ছোট্ট দুষ্টরাজা কোন এক অজানা আবেগের প্রাবল্যে “আমি”র মাথাটা হটাত দু’হাতে ঝাপটে ধরে অতি উৎসাহে কাছে টেনে নিয়ে নতুন উঠা ধারালো দু’টি দাঁত তার ঠোঁটে বসিয়ে দিয়ে, সেকি উচ্ছ্বল প্রাণময় হাসি! সেই হাসি “আমি”র চারপাশে আনন্দ ছড়িয়ে দিয়েছিলো মূহুর্তে ! ... জলপরীর কচি মুখের অদ্ভুত আভায়, হাসির ভঙ্গিমায়, হাত পায়ের অবুঝ ছোড়াছুড়িতে, উজ্জ্বল চোখের তারায় মায়া ঝলমল করতে থাকে ! ভবিষ্যতে ভাষা গঠনের অব্যাহত প্রাকৃতিক প্রচেস্টার অংশ হিসেবে আ, উ, গাউ, হউ ইত্যাদি অর্থহীন অস্ফুট ধ্বনিরা মমতা ছড়িয়ে নেচে বেড়াতে থাকে ঘরময়, “আমি”র আমিত্ব জুড়ে ... এইসব শিশু ভালোবাসারা ভীষণ রকম নিষ্পাপ-নিষ্ঠুর ! কিছু না বলে, করেও অদৃশ্য কিছুতে জড়িয়ে ফেলার ভয়ংকর ষড়যন্ত্রি ক্ষমতা রাখে! “আমি” জড়িয়ে যেতে থাকে...

তবুও কিছু প্রশ্ন দ্বিকবিদিক ছুটোছুটি করে “আমি”র উপর হামলে পড়তে থাকে - কোথায় গিয়ে জীবনের আনন্দ সব পাল্টে গিয়ে বিষাদ রূপ নেয় ? জীবনের কোন মোড়ে প্রিয়দের ভালোবাসাকে ভয় হতে থাকে ? -অপূর্নতার বোধে ? -অর্থহীনতার বোধে ? – নিজের ভালোবাসা প্রিয়দের জন্যে একদিন বোঝা হয়ে যেতে পারে, এই ভাবনা-বোধে ?
এইসব নাছোড় প্রশ্নরা থেকে থেকেই জীবন তুলে আনতে থাকে। সুতরাং সাহসী হয় “আমি” । হাসতেই হাসতেই অনুমতি প্রার্থনা করে বসে- “প্রিয় জ্যোৎস্নার ফুলেরা, নিজেকেই নিজে মার্সি কিলিং-এর অনুমতি প্রদানে মহোদয়াগনের আজ্ঞা হোক !” তাৎক্ষনিক আবেদন খারিজ হয়ে শর্ত-রূপ নেয় নতুন জন্ম নেয়া ভালোবাসারা ।


ভালোবাসারা সব জোটবদ্ধ হয়। মায়ার প্রলোভন এর তীব্রতীর শক্তি সঞ্চিত করে –নিশানায় পড়ে যায় “আমি” ।
জ্যোৎস্নার ফুল এক ফিসফিস করে মন্ত্র শোনায় অন্য জীবনের – “দ্যাখো! ঐখানে! হাঁ, ঠিক ঐখানটায় জীবন আছে ! এগিয়ে যাও ! হাত বাড়িয়ে তুলে নাও ... যা তুমি চাও ! যা পাওয়ার অধিকার তোমার আছে ! “
আহা! জ্যোৎস্নার ফুলটা ! সাহস হয় , ভরসা হয় , নির্ভরতা হয়, নিশ্চয়তা হয়, সব কিছুই হয়ে যেতে চায় মুহূর্তে ... জীবনমোহ হারামীপনায় লোভদগ্ধ করে দিতে লোভ আগুন উস্কে দেয় ...
******
সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে যায় পূর্বনিয়মেই কালক্ষেপন না করেই ...
“আমি” শেষবারের মতো উঠে দাঁড়ায় – “এসো জীবন, তোমার সাথে শেষ খেলাটা খেলবো, প্রস্তুত হও, তোমাকেই সুযোগ দিলাম – নাও , প্রথম দান তোমার! ”
******
অথবা হতে পারে এমন –
জীবনমোহ হেরে যায় জীবনের শূণ্যতা বোধ আর অর্থহীনতায় খুব মনোরম লাগতে থাকা ছাদটার কাছে ! রেলিং টা খুব উঁচু না । সে উঠে দাঁড়ায়, শরীরের ব্যালেন্স করা যায় সহজেই, পিলাটার কারনেই যদিও । চারপাশের অনেক দূর দেখা যায়... সে দেখার চেস্টা করে ভালোবাসাদের... মায়াদের... প্রিয়দের... ব্যালেন্স ছেড়ে দিতে দিতে শেষ বারের মত ভর দুপুরের সূর্যটায় চোখ পুড়িয়ে নেয় “আমি” ।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।