আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝিনাইদহে জ্বিনের বাদশা রুপি চাঁদাবাজদের মধ্যরাতের ফোনে মানুষ দিশেহারা

আসিফ ইকবাল কাজল

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
‘আল্লাহ আপনার প্রতি সদয় হয়ে স্বর্ণের মূর্তি দান করেছেন। ’ আর এই গুপ্তধন পেতে আপনাকে মসজিদে টাকা, জায়নামাজ ও কোরআন শরীফ দান করতে হবে, না হলে আপনার সন্তানের ক্ষতি হবে। ’ গভীর রাতে এ রকমের লোভনীয় ফোন পেয়ে প্রায় মানুষ পড়ে যাচ্ছেন দোটানায়। গুপ্তধন পাওয়ার লোভ, উপরন্তু রাজি না হলে সন্তানের অমঙ্গলের আশঙ্কায় অনেকেই রাজি হয়ে যান জিনের বাদশার প্রস্তাবে। মধ্যরাতে জ্বিনের বাদশা রুপি চাঁদাবাজদের এহেন উৎপাতে ঝিনাইদহের মানুষ এখন দিশেহারা।

শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে এই আতংক। বিশেষ করে শহর ও গ্রামের নীরিহ মহিলারা সবচে বেশি আতংকে থাকেন কখন জ্বিনের বাদশা মোবাইল করবে। এমন কোন দিন নেই যে জ্বিনের বাদশার ফোনে মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত্র হয় না। মোবাইল ট্রাকিং করে এ সব প্রতারকদের সনাক্ত করার দেশে সহজ প্রযুক্তি থাকলে বিষয়টি নিয়ে কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ফলে দিনকে দিনে এই প্রতারকের অত্যাচারে শহর ও গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।


ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটী ইউনিয়নের মোশাররফ নামে এক যুবক জ্বিনের বাদশার প্রতারণার শিকার হয়ে বগুড়ার মহাস্থানগড় এলাকার একটি মসজিদে এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে এসেছেন। টাকা প্রদানের পর তাকে কথিত স্বর্ণের তৈরী একটি মূর্তি হাতে ধরিয়ে প্রতারকরা চোখ বন্ধ করে পিছন ফিরে চলে যেতে বলে। বাড়ি ফিরে এসে মোশররফ দেখেন সেটি মাটির উপর প্রলেপ দেওয়া গনেশ মূর্তি। সাধুহাটী উইনয়নের মালয়েশিয়া প্রবাসি আকতারের স্ত্রী জ্বিনের বাদশার খপ্পরে পড়ে কুড়ি হাজার টাকা মোবাইলে ফ্লেক্সি করেন। একই ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলী, জামেনা খাতুন, আজিজুর রহমান ও মিশর প্রবাসি জমিরের স্ত্রী অভিযোগ করেন তাদের কাছে প্রতি রাতেই ০১৭৮৮৫৬৪২৮৮ ও ০১৭৭৬৫৪১৯৪৪ নাম্বার থেকে ফোন করে উৎপাত করা হচ্ছে।

বংকিরা গ্রামের মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করেন, তার কাছে ফোন করে বলা হচ্ছে, “আপনি লটারীতে একটি মোবাইল পেয়েছেন, ঝিনাইদহে এসে নিয়ে মোবাইল সেটটি যান। ঝিনাইদহে আসলেই তাকে অপহরণ বা মুক্তিপণ আদায় করা হতে পারে বলে তার আশংকা। গভীর রাতে এ ধরণের মোবাইল ফোন পেয়ে গ্রামের মহিলারা প্রায় বিচলতি হয়ে পড়েন। জামেনা খাতুন নামে এক গৃহবধুর কাছে ফোন করে বলা হয়, আপনি জায়নামাজ ও কোরআন শরীফ কিনে না দিলে আপনার বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যাবে। আর এ সব কিনতে ০১৭৭৬৫৪১৯৪৪ নাম্বারে টাকা ফ্লেক্সি করতে বলে প্রতরক চক্রটি।

সাধুাহাটী ইউনিয়নের সুজন বিশ্বাস জানান, তার মোবাইলে দীর্ঘদিন ধরে জায়নামাজ ও কোরআন শরীফ কিনে দিতে ফোন করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, মোবাইলে এ ব্যাপারে অহরহ তাদের উৎপাত করলেও বিষয়টি তারা র‌্যাব বা পুলিশকে জানান না। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জমান জানান, এমন অভিযোগ কোন দিন কেও করেন না। করলে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.