আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

♦লাল-সুবজ♦

লাল-সুবজ পতাকা হৃদয়ে ধারণ করে একাত্তরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্যদিয়ে ১৬ ডিসেম্বর জন্ম নিয়েছিল বাংলাদেশ। ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল এ দেশেরই মানুষ। নয় মাসের যুদ্ধে দেশ স্বাধীন করে আপন অস্তিত্ব, অধিকার, চেতনা ও মূল্যবোধ বিশ্ববাসীর কাছে ছড়িয়ে দিয়েছিল এ দেশই। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে রাঙা আর নির্যাতিত ৪ লাখ মা-বোনকে জড়িয়ে রাখা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আমাদের অর্জন, আমাদের গর্ব, আমাদের অহঙ্কার। এ পতাকার ছায়াতলে আমরা বারবার একত্রিত হই।

মিছিল করি পতাকা হাতে। প্রজন্মান্তরে সঁপে দিই এ পতাকা- এ আশ্বাসে যে, নতুন প্রজন্মই সমুন্নত রাখবে আমাদের বিজয়, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের একাত্তর।
গতকাল ও আমরা স্বাধীনতার সম্মানে বিরল এক গৌরব অর্জন করেছি লক্ষ কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে ! মেশিন কাউন্ট ২৫৪৬৮১ জন অংশ নিয়েছে গতকালকের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনায় ! কতৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী এই সংখ্যা ৩ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে ! সবারই হাতে ছিল কাগজের তৈরী একটা করে লাল - সবুজের পতাকা ! জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার শেষে সবাই ওই পতাকা উঁচু করে নাড়ানোর দৃশ্য সবার হৃদয়ের স্পন্দন নাড়িয়ে দিয়েছে ! অভূতপূর্ব সেই দৃশ্য ! জাতীয় সঙ্গীতের পরে বিভিন্ন শিল্পীদের অংশগ্রহনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল ! কিন্তু গতকাল যাঁরা জাতীয় সঙ্গীত গাইতে একজায়গায় সমবেত হয়েছিলেন সবাই শুধু মাত্র জাতীয় সংগীতের প্রেমেই গিয়েছিলেন !
অন্যকোন শিল্পী বা সঙ্গীত তাঁদেরকে কাছে টানতে পারে নি ! বিশেষ করে একজন শিল্পী যখন অতবড় অনুষ্ঠানে মরার কুকিলে বলে গান গাইতে শুরু করলেন শ্রোতা-দর্শকদের আর ধরে রাখা সম্ভব হয় নি , তথক্ষনে আমিও টিভি বন্ধ করে দিয়েছি ! পরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পেলাম সকাল থেকে হাতে থাকা জাতীয় পতাকা হাতে নেই ! অনেকেই পদদলিত করে জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন আর অনেক চেতনাজীবি সেই ছবি যোগাযোগ মাধ্যমে অত্যন্ত গৌরবের সাথে প্রচার করছে ! যারা পতাকা পদদলিত তারা নিশ্চই শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন!
আমার মনেহয় যারা জাতীয় পতাকা পদদলিত করেছেন তারা জাতীয় সঙ্গীতের টানে সেখানে যাননি ! এতবড় আয়োজন তাদের কাছে তামাশা দেখার মত, তারা তামাশা দেখতেই গিয়েছিল ! অথবা গিয়েছিল ৯০ কোটি টাকা খরচ করছে সরকার সেই খবর শুনে , যদি নিজের ভাগে কিছু জোটে !!নাহয় সার্টিফিকেট কাউকে পায়ের নিচে দিতে দেখা গেলনা , কিন্তু জাতীয় পতাকা সবাই পদদলিত করে অনুষ্ঠান ত্যাগ করলো ! তবে জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা কি রইলো ??
আর যাঁরা ফেইস বুক সেলিব্রেটিরা এই জাতীয় পতাকা পদদলিত করার ছবি প্রকাশ , প্রচার করছেন তাঁরা কি করছেন একবার কি ভেবে দেখেছেন ! যারা পতাকা পদদলিত করেছে তারা হয়ত জেনে , বা না জেনে , বা ভুলবসত পতাকা পদদলিত করেছেন ! কিন্তু আপনারা জেনে শুনে সবল মস্তিস্কে লাল সবুজের পতাকা পদদলিত করার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাঘ্যমে প্রচার করে সারা বিশ্বকে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছেন ! এটাও একটা অপরাধ এবং এই অপরাধ জাতীয় পতাকা পদদলিত করার চেয়ে কোনো অংশে কম নয় ! এভাবে নিজের গায়ে কাঁদা মেখে নিজের সৌন্দর্য কেউই বৃদ্ধি করতে পারবে না !
আমাদের মনে রাখতে হবে জাতীয় পতাকা শুধু একটি কাপড় নয়, এটি দেশের স্বাধীনতার প্রতীক। তাই পতাকার অবস্থা ব্যবহারযোগ্য না হলে তা মর্যাদাপূর্ণভাবে সমাধিস্থ করতে হবে। জাতীয় পতাকা ব্যবহারের বিধি মেনেই জাতীয় পতাকা ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে ! জাতীয় পতাকা ব্যাবহা বিধি অমান্য করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং কেউ ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।


কিন্তু আমাদের দেশে এত এত আইন , আইন নির্মাতারাও ভুলে যান কখন কোন আইন প্রয়োগ করতে হয় ! তাই এত আইনের দেশে অনিয়মই নিয়ম, আইন অমান্য করাই এখন আইন ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।