আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৯৮৯ সালের খুলনা, খালিশপুর গ্রীষ্ম

২৮ মার্চ ২০১৪ আনুষ্ঠানিকভাবে এই বছরের গরমকাল শুরু হইসে। যেই সেই গরম না, কাঠাল পাকা গরম। এমন গরমে Air Conditioner এর কপাল দিয়েও চিকন ঘাম দেয়া শুরু হয়। এমন গরমে গ্রামের মহিলাদের শাড়ির আঁচল আর পুরুষদের স্যান্ডো গেঞ্জি আর শরীরে থাকতে চায় না। [শহরের মানুষের কথা আলাদা করে বলার কিছু নাই, তারা এমনিতেও শরীরে কাপড় রাখতে চায় না]
আজকে থেকে ৬০-৭০ বছর আগে যখন আমি ছোট ছিলাম আর আব্বা সরকারি চাকরি থেকে লিয়েন নিয়ে WHO এর কনসাল্টেন্সি করছিলেন ১৯৮৯-৯০ এর দিকে; সেবারও বেজায় গরম পড়েছিল।

মনে আছে তখন রোযার মাসে ইফতারি হতো সন্ধ্যা ৭টার দিকে। আমাদের বাসার জানালায় লোহার শিক ছিল। সেই লোহার শিক ধরে বাইরে, তপ্ত মাঠে-ময়দানের দিকে তাকিয়ে ভাবতাম ৬০-৭০ বছর পরে যখন আমি বড় হবো তখন নিশ্চই ঘড়ির কাঁটা ঘুরে আবার এমন একটা সময় আসবে।
এমন একটা সময় চলে এসেছে। কাঠাল পাকা গরম পড়েছে।

সকালে অফিসে আসার সময় বিলবোর্ডে একটা নতুন বিজ্ঞাপন দেখি। সেখানে দেখা যায় কঠোর চেহারার র‍্যাব সদস্যরা অস্ত্র তাক করে আছেন সামনের দিনে, আমি খেয়াল করে দেখলাম সামনের দিকে তো আসলে আমরাই, মানে জনতাই, সর্বনাশ! আমার আরও বেশী বেশী গরম লাগে। কোন বেকুবেরা এমন বিজ্ঞাপনের ধারণা নিয়ে আসে যে T20 চলার সময় ইংরেজীতে লেখা ক্যাপশান পড়ে এবং ছবি দেখে সাদা চামড়ারাও বুঝতে পারে আমাদের নিরাপত্তা বিধানের রকমফের!
খুলনায় সেইসব লিয়েনের দিনগুলিতে এবং তারও পরে, গরমকালের দুপুরে আমরা সারা ঘরের দেয়ালে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে রাখতাম, মেঝেতে ছিটাতাম আলতো করে। সেই পানির কারণেই কিনা জানিনা, দুপুরগুলো কোনমতে কাটিয়ে দেয়া যেত। এই পানি থেরাপি শিখেছিলাম যতদূর মনে পড়ে Muniruddin চাচার কাছ থেকে।


আজকে খুলনা যাচ্ছি অনেকদিন পরে। ঢাকায় গরমের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে মানুষজন আমাকে ধরে বসেছে ঢাকার বাইরে যাবার জন্য। এটা ইতিমধ্যে সবাই জেনে গেছে যে আমি ঢাকা ছাড়লে বৃষ্টি নামে। সিলেট, চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে এ কথা সত্য; কিন্তু খুলনার ক্ষেত্রে কতটুকু, তা আগামী ৩ দিনেই বোঝা যাবে নিশ্চই।
ভাল থাকুক ঢাকা, ভাল থাকুক এভারেস্টের চূড়া, ভাল থাকুক গোধূলীবেলায় ক্রমশ হারাতে থাকা অপরূপ মুখগুলো...মেঘ ভেঙ্গে নামুক একফোঁটা বৃষ্টি হতে যদির জাদুস্পর্শ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।