আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আকাংখা

ব্যালকনির গ্রীল দিয়ে বাহিরে তাকায় রিমি। নীল আকাশ। ঝলমলে রোদ্দুর। হালকা বাতাস বইছে। খুব ভাল লাগছে রিমির।

অনেকদিন পর এভাবে বসা হল। সময় হয়ে উঠে না। এখন ছুটি চলছে। অনার্স শেষ। রেজাল্টের অপেক্ষা।

রিমি দেখতে বেশ সুন্দর। উজ্জল গায়ের রং। ওর বান্ধবীরা অনেকেই তাকে ঈর্ষা করে এই জন্য। রিমির বিয়ের কথা চলছে। ছেলে ব্যবসায়ী।

বেশ পয়সাওয়ালা। দেখতেও অনেক হ্যান্ডসাম। এক ক্যাফেতে ছেলের সাথে কথা হয়েছে রিমির। প্রথম দেখাতেই রিমির পছন্দ হয়ে যায় আসিফকে। তার উপর ধনী ছেলে।

পরিবারের সবাই রাজি। কথা প্রায় পাকাপাকি। আগামী মাসে এনগেজমেন্ট। হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠে রিমির। শোবার ঘরে ঢুকে মোবাইল হাতে নিতেই রিমির গায়ে শীতল কি যেন একটা বয়ে যায়।

হাসান ভাই এর ফোন। একটা সময় ছিল যখন হাসান ভাইয়ের ফোনের অপেক্ষায় থাকত রিমি। কখন হাসান ভাই ফোন করবে। কিন্তু আজকে কেন এমন হল? রিমি ফোন ধরবে কি ধরবে না দ্বিধায় পড়ে গেল। ফোনটা কেটে গেল।

রিমি মোবাইল হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকে। কি করবে সে? আবার কল আসে হাসান ভাইয়ের।
রিমি নিজের অজান্তেই ফোন ধরে।
হ্যালো রিমি।
কেমন আছেন হাসান ভাই?
ভালো, তুমি?
আমিও ভালো।

অনেক দিন পর ফোন দিলেন।
অনেক দিন কই। ১০-১৫ দিন হবে।
হ্যা তাইতো। এই অল্প সময়কে কেন জানি অনেক j¤^v মনে হল রিমির কাছে।


কি ব্যাপার হাসান ভাই?
আমার আবার ব্যাপার কি? ব্যাপার তো তোমার কাছে। আজকে বিকালে আস।
কেন হাসান ভাই। গলাটা ধরে আসে রিমির।
কেন মানে? তোমার কি মাথা ঠিক আছে।


হা মাথাতো ঠিক আছে।
ঠিক থাকলে বিকালে আইসা পর। না করা যাবে না। আমি কথা দিয়া ফেলছি। অনেক ধনী মানুষ।

রেট অনেক দিব। যা চাইবা তাই দিব।
রিমি কিছু বলার আগেই ওপাশ থেকে ফোনটা কেটে গেল। কি করবে এখন রিমি। আগেতো এমন লাগত না।

সব সময়ই একটা উত্তেজনা কাজ করত রিমির ভিতর। সেই কলেজ লাইফ থেকে শুরু। শুরু ব্যপারটা ছিল নেশার মত। পরে অনেকটা পেশা হয়ে দাড়ায় ব্যাপারটা। হাত খরচ হিসেবে ভাল টাকাই সে পেত।

যখন যা মনে চাইত সে আশাই সে পূরণ করত। সাপোর্ট হিসেবে থাকত এই পেশাটা। শুধু কি সে? তার অনেক বান্ধবীই একই সাথে শুরু করে। কয়েক জনের তো বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু ব্যাপারটা ছাড়তে পারেনি কয়েকজন।

কিন্তু তার আজ কি হল। তবে কি রিমি বিয়ের জন্য এটা ছেড়ে দিতে চাইছে। বুঝতে পারছে না রিমি। কি করবে সে। ভাল একটা অফার।

আশা নিরাশার মাঝে দুলছে রিমির মন। যা চাইবে তাই দিবে।
শুরুর দিনের কথাটা আজ খুব মনে পড়ছে রিমির। কলেজের সেকেন্ড ইয়ারে থাকতে ওর এক বান্ধবী হঠাৎ করেই প্রস্তাবটা দেয়। রিমিও কেন জানি এক কথায় রাজি হয়ে যায়।

তারপর ওকে নিয়ে হাসান ভাইয়ের কাছে যায় ওর বান্ধবী। ব্যাস ঐ থেকেই শুরু। হাসান ভাইয়ের সাথে তখন থেকে পরিচয়। লোকটাকে বেশ ভালো লাগে রিমির। যদিও সে কখনও তাকে প্রস্তাব দেয়নি।

শুরুতে ও বাছ বিচার করত না। অফার আসলেই রাজী হয়ে যেত। অন্যরকম উত্তেজনা, সাথে অর্থের একটা ব্যাপারতো আছেই। কয়েক মাস পরেই একদিন হাসান ভাই ওকে বলে, দেখ রিমি তুমি দেখতে বেশ সুন্দর। অনেক স্মার্ট।

আমি মনে করি তুমি এভাবে কাষ্টমার না নিয়া বাইছা কাম কর। এতে রেটও ভাল পাইবা আর সবদিক দিয়া তোমার ভালই হইব। রিমির কাছে প্রস্তাবটা ভাল লাগে। যদি সত্যিই তার এমন চাহিদা থাকে তাহলে তো ভালই হয়। তখন থেকেই রিমি বেছে বেছে কাজ করে।

রেটও ভাল পায়।
কিন্তু আজকের ব্যাপারটা কেমন যেন লাগছে রিমির কাছে। রিমি গোসলের জন্য প্রস্তুত হয়। গোসল সেরে এক j¤^v ঘুম দিল। ঘুম থেকে উঠতে উঠতে প্রায় বিকেল।

তাড়াতাড়ি সে প্রস্তুত হয় বাহিরে যাওয়ার জন্য। বাহিরের বের হতে হতে হাসান ভাইকে ফোন দেয় সে।
হ্যালো হাসান ভাই।
হ্যা রিমি বল।
কোথায় আসতে হবে।


আগের জায়গায় আস। আমি তোমার নিয়া যাব।
রিমি একটা রিকশা নেয়। চমৎকার বিকেল। রাস্তায় তেমন যানজন নেই।

খুব দ্রুতই রিমি পৌছে যায়। হাসান ভাই দাড়িয়ে আছে।
কেমন আছেন হাসান ভাই।
ভালো। তোমারে আজতো দারুন লাগতাছে।


রিমি একটা হাসি দেয়।
চল রিকশায় উঠি।
দুজনে একটা রিকশায় উঠে।
শুনলাম তোমার নাকি বিয়ে ঠিক হইছে।
হ্যা।


ছেলে কি করে?
ব্যবসা।
বিয়ার পরে কি চিন্তা করছ? কাজ চালাবা না বন্ধ কইরা দিবা।
রিমি নিশ্চুপ থাকে। কি বলবে সে ভেবে পাচ্ছে না।
জিজ্ঞাসা করা দরকার তাই বললাম।

কারণ যদি বন্ধ কর তবে তোমার লগে সব বন্ধ। তা না হলে সংসার ভেজাল লাগব। আবার যদি কাজ চালাও তাও বলা লাগবে। সেটা তোমার উপর নির্ভর করে। সুজাতা তো বিয়ার পরেও বন্ধ করে নাই, তাই তোমারে জিজ্ঞাসা করলাম।


রিমি এবারও চুপ থাকে।
তুমি চিন্তা করে আমারে জানাইবা। রিমি আমরা এসে গেছি।
রিকশা ভাড়া দিয়ে ওরা দুজনে ফুটপাতে দাড়ায়।
রিমি, লোকটা বড়লোক মানুষ।

তুমি যা ডিমান্ড করবা তাই দিব আশা করি। লোকটা তোমারে এখানে থেকে নিয়া যাবে।
ওরা দুজনে দাড়িয়ে থাকে। কিছুক্ষনের মধ্যেই একটা প্রাইভেট কার এসে ওদের সামনে দাড়ায়। হাসান রিমিকে ইশারা করল গাড়িতে ওঠার জন্য।

রিমি গাড়িতে উঠে আতঁকে উঠে। সে নিজের অজান্তেই চিৎকার করে বলল, আপনি। আসিফ চোখ বন্ধ করে বসে থাকে। গাড়ি তাদের দুজনকে নিয়ে হু হু করে ছুটে চলল।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।