আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাদক ছাড়তে চাই দৃঢ় মনোবল ও ইচ্ছাশক্তি

প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলনের উদ্যোগে ১৫ মার্চ বিকেল চারটায় পরামর্শ সহায়তা-৪৮-এর আসরটি অনুষ্ঠিত হয় ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে। এ আয়োজনে মাদকাসক্ত রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মনোরোগ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা মাদকাসক্তি নিরাময়ের জন্য তাঁদেরবিভিন্ন পরামর্শ দেন। পরামর্শ সহায়তা অনুষ্ঠানের আলোচিত বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো
মনোরোগ চিকিৎসক আহমেদ হেলাল সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, মাদকের চিকিৎসায় অভিভাবকের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।

সন্তানদের সঙ্গে অভিভাবকদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। তাদের সঙ্গে খোলামেলাভাবে মিশতে হবে। তারা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে—সব বিষয়ে খোঁজখবর রাখতে হবে। নিজেদের মধ্যে সব বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। তাহলে সন্তানেরা ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকবে।

যেকোনো কারণে বকাঝকা বা সন্দেহ করা যাবে না। পরিবারের কেউ মাদকাসক্ত হলে সে খারাপ হয়ে গিয়েছে, তাকে দিয়ে কিছু হবে না—এমন ভাবার কারণ নেই। এ সময় সবচেয়ে প্রয়োজন পরিবারের আপন মানুষের সহযোগিতা। কিন্তু এই সহযোগিতা না পেলে সে আরও ভীষণ খারাপ হবে। তাকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে এবং পরামর্শমতো চিকিৎসা করাতে হবে।

কয়েক বছর এ অনুষ্ঠান করছি। এ দীর্ঘ সময়ে আপনাদের অনেকের সঙ্গে জানাশোনা হয়েছে। অনেকে ভালো হয়ে আমাদের মধ্যে এসেছে। এসব আমাদের আশাবাদী করে। মনে রাখতে হবে, মাদকাসক্ত ব্যক্তি কোনো অপরাধ করেনি; সে একটা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে।


প্রশ্ন: সিগারেট কি মাদক? সিগারেটকে অনেকে মাদক মনে করে না।
উত্তর: সিগারেট অবশ্যই একটি মাদক। এটি অন্যান্য ভয়ংকর মাদক গ্রহণের কারণ হিসেবে ভূমিকা রাখে। অধিকাংশ মানুষ ধূমপান পান থেকেই অন্যান্য মাদক গ্রহণ করে। আমরা প্রতিনিয়ত বলি, মাদকাসক্তের প্রধান কারণ ধূমপান।

অনেকে ধূমপানকে মাদক মনে করেন না। এটি তাঁদের ভ্রান্ত ধারণা। অন্যান্য মাদকে যেমন বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান আছে, তেমনি ধূমপানেও আছে। ধূমপানে শরীরের পা থেকে মাথা পর্যন্ত ক্ষতি করে। তাই এটিকে প্রচণ্ড ক্ষতিকর মাদক মনে করতে হবে।


প্রশ্ন: ধূমপান করলে কী কী ক্ষতি হয়?
উত্তর: ধূমপানের কারণে মানুষ ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। কোনো পরিবারের কেউ ধূমপান করলে সেই পরিবারের শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবারে বাবা ধূমপান করলে তাঁর স্ত্রীর ফুসফুসে ক্যানসার হতে পারে। সন্তানদের শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ হতে পারে। বিকলাঙ্গ সন্তান হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে মারা যায় ৫৭ হাজার মানুষ। পঙ্গুত্ব বরণ করে তিন লাখ ৮২ হাজার মানুষ। এটি ২০০৪ সালের হিসাব। বর্তমানে এই সংখ্যা অনেক বেশি হবে। নীরব ঘাতক এই নেশাদ্রব্যটি থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

পৃথিবীতে সড়ক দুর্ঘটনার পরই ধূমপানের কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। বিশ্বের সবচেয়ে নিম্নমানের বিড়ি-সিগারেট বাংলাদেশে উৎপাদন হয়, যা স্বাস্থ্যকে দ্রুত ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। জাতিসংঘ মনে করে, যুদ্ধ মানুষকে বিপর্যস্ত করে দেয়। যুদ্ধের মতো তামাকও মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। ধূমপানের কারণে ফুসফুসে ক্যানসার, মুখের ক্যানসার, হূদেরাগ, শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ, মস্তিষ্কে আকস্মিক রোগের আক্রমণ, বিকলাঙ্গ ইত্যাদি হতে পারে।


প্রশ্ন: কীভাবে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করতে পারি?
উত্তর: ধূমপান ছাড়ার জন্য আপনার ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট। ধুমপানের জন্য আপনার নিজের ক্ষতি হচ্ছে। পরিবারের অন্য সদস্যদের ক্ষতি করছেন। পরিবেশের ক্ষতি করছেন। প্রচুর অর্থও ব্যয় হচ্ছে।

মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। সে সবকিছু করতে পারে। এ ক্ষেত্রে দরকার শুধু ইচ্ছাশক্তি। আপনার চারপাশে যত মানুষ ধূমপান করে, তার কয়েক গুণ বেশি মানুষ ধূমপান করে না। তাই ধূমপান অনিবার্য হলে সবাই করত।

প্রথম দিকে ধূমপান ছেড়ে দিলে কিছুটা খারাপ লাগে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি কিছু ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। সিগারেটকে বলা হয় মাদকের মা। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, মাদকের ভয়াল ছোবলে যারা আক্রান্ত, তারা সবাই কোনো না কোনোভাবে ধূমপানের মাধ্যমে এ পথে এসেছে। ধূমপানকে কোনোক্রমেই হালকাভাবে দেখা যাবে না।

এখন কীভাবে ছাড়বেন, সেটি আপনার প্রশ্ন। আপনি নিজেই ধূমপান শুরু করেছেন, ছাড়ার প্রধান দায়িত্ব নিতে হবে আপনাকেই। সব সময় সচেতন থাকতে হবে। ধূমপান না করার জন্য তীব্র ইচ্ছা পোষণ করতে হবে। প্রয়োজনে পরিবারসহ আত্মীয়স্বজন সবার সমনে ধূমপান না করার ঘোষণা দিতে হবে।

তাতে ধূমপান ছড়ার জন্য নিজের মধ্যে অতিরিক্ত দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। যে পরিবেশে গেলে ধূমপানের আশঙ্কা থাকে, সেসব পরিবেশ বর্জন করতে হবে। হঠাৎ ছয় মাস, দু-এক বছর ভালো থাকার চেষ্টা করলাম, বিষয়টি তা নয়। এটি একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। অর্থাৎ, সারা জীবন ভালো থাকার চেষ্টা করতে হবে।

সর্বোপরি ভালো মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করতে হবে। একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যত ভয়ংকর মাদক হোক বা ধূমপান হোক, কোনো মানুষ যদি নিজ থেকে ছাড়ার ইচ্ছা পোষণ করে, তাহলে এটি নিশ্চিত যে সে ছাড়তে পারবেই।
প্রশ্ন: আমার মায়ের জন্য দুঃখ হচ্ছে। সে একজন মাদকাসক্তের মা হিসেবে এখানে এসেছে। তাঁর জন্য কিছু বলেন।


উত্তর: মাদকাসক্তকে নয়, আমরা মাদককে ঘৃণা করি। মাদকাসক্ত অন্য রোগের মতো একটি রোগ। এর চিকিৎসা আছে। নিয়ম মেনে চিকিৎসা করলে মাদকাসক্ত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আপনার একটি রোগ হয়েছে।

সে জন্য আপনার মা এখানে এনেছেন। কোনো হাসপাতালে কোনো মা তাঁর সন্তানকে চিকিৎসার জন্য নিলে সন্তান কি বলে, ‘আমার অসুখের জন্য মা এসেছে। তার জন্য দুঃখ হচ্ছে। কিছু বলেন?’ বলেন না। কারণ, তাঁরা জানেন, এটি একটি অসুখ।

চিকিৎসা করলে ভালো হবে। মাদকও চিকিৎসা করলে ভালো হয়। এর জন্য লজ্জিত, দুঃখিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে আপনাকে ধন্যবাদ, আপনি অনুশোচনা করছেন। মায়ের জন্য দুঃখ পাচ্ছেন।

মাকে সবচেয়ে খুশি করতে পারবেন আপনি। আপনি যদি আর মাদক গ্রহণ না করেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। মায়ের হাত ধরে বলেন, ‘আমি তোমার সন্তান। ভুল করেছি।

আর কখনো মাদক গ্রহণ করব না। ’
প্রশ্ন: আমাকে সব সময় সন্দেহ করে। আমি মাদক নিই না। তার পরও সন্দেহ করে। এটা আমাকে কষ্ট দেয়।


উত্তর: এভাবে সন্দেহ করাকে আমরাও সমর্থন করি না। তবে এমন আচরণ থাকা উচিত নয়, যাতে সন্দেহ করার কারণ তৈরি হয়। মা-বাবা সন্দেহে করলে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সন্দেহের যৌক্তিক কারণ থাকে। তবে মা-বাবার অহেতুক সন্দেহ করা করা উচিত নয়। তাতে সন্তানদের মনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।

তারা মনে করে, ‘আমি কাজটি করিনি। কেন আমাকে সন্দেহ করছে?’ আর প্রতিনিয়ত এভাবে সন্দেহ করলে তার মনের ওপর একধরনের চাপ তৈরি হবে। সে একসময় এ চাপ সহ্য করতে পারবে না। চাপমুক্ত হওয়ার জন্য মাদকসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িয়ে পড়বে। তাই মা-বাবার উচিত কখনো কোনো খারাপ আচরণ লক্ষ করলে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা।

খোলামেলা আলোচনা করা। বন্ধুর মতো মেশা। বুঝতে চেষ্টা করা, তার সমস্যাটি কোথায়। মা-বাবার সহযোগিতা না পেলে সন্তানেরা আরও খারাপের দিকে যাবে। সন্তানদের ভালো থাকা, মন্দ থাকা অনেকখানি পারিবারিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে।


প্রশ্ন: দীর্ঘদিন যাবৎ গাঁজা খাই। গাঁজা খেলে কী কী সমস্যা হয়। অনেকে গাঁজাকে ক্ষতিকর মনে করে না।
উত্তর: যেকোনো মাদকই ক্ষতিকর। কেবল একবার মাদক নিলেই অনেক দিন যাবৎ তার প্রভাব থাকে।

কে কী মানে করল, সেটা বড় ব্যাপার না। গাঁজা ভয়ংকর একটি মাদক। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য গাঁজার মধ্যে আছে। গাঁজাকে কোনোভাবে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। গাঁজা খেলে সন্দেহপ্রবণতা বাড়তে থাকে।

যৌন সমস্যা দেখা দেয়। আচরণে সমস্যা দেখা দেয়। স্ত্রী ও অন্যদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার প্রবণতা আসে। ঘুম হয় না। মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়।

কোনো বিষয়ে একাগ্রতা থাকে না। কোনো কিছু মনে থাকে না। যেকোনো বিষয় একটু পরে ভুলে যায়। এ জন্য গাঁজা থেকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। ধোঁয়ার মাধ্যমে গাঁজা শরীরে প্রবেশ করে।

গাঁজার মধ্যে ৬০ ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য আছে। এর মধ্যে একটা রাসায়নিক দ্রব্য আছে খুবই ভয়ংকর ও বিপজ্জনক। এটা একবার স্নায়ুকোষের মধ্যে ঢুকলে এক বছর মস্তিষ্কে থাকে। গাঁজার ধোঁয়া প্রথমে ফুসফুস যায়। এরপর রক্ত ও মাথার মধ্য দিয়ে কোষে ঢোকে এবং বিভিন্নভাবে শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

বরং এটা অন্য যেকোনো মাদকের থেকে অনেক বেশি বিপজ্জনক।
প্রশ্ন: কীভাবে গাঁজা সেবন থেকে মুক্তি পেতে পারি?
উত্তর: গাঁজা কেন? যেকোনো মাদক থেকে মুক্ত থাকা যায়। এ জন্য চাই দৃঢ় মনোবল। প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি। আমরা বলে থাকি, মাদকমুক্ত থাকার জন্য নিজের ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট।

কারও যদি মাদক ছাড়ার ইচ্ছা থাকে, নিজের মন ও শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে, তাহলে সহজেই সে মাদক ছাড়তে পারে। নিজে নিজে ছাড়তে গেলে কিছু সমস্যা তৈরি হয়। কিছু শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ জন্য অনেকে ছাড়তে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে ছাড়তে গিয়ে আবার মাদকাসক্ত হয়।

এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পারমর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। শরীরকে গাঁজার প্রতিক্রিয়ামুক্ত করতে হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন জায়গায় গাঁজা সেবন থেকে মুক্ত থাকার চিকিৎসা আছে। দ্রুত কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


প্রশ্ন: মাদক চিকিৎসার কি কোনো নিয়ম-পদ্ধতি আছে? কীভাবে মাদকের চিকিৎসা করা হয়?
উত্তর: মাদকের ক্ষেত্রে নিয়ম মানাটাই একটি চিকিৎসা। তিনটি ধাপে মাদকের চিকিৎসা করা হয়। যেমন, ডিটক্স, উইথড্রয়াল ও রিহ্যাব।
ডিটক্স (প্রথমে মাদকের বিষক্রিয়া থেকে মুক্তকরণ): একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি বিভিন্নভাবে মাদক গ্রহণ করে। যেমন মুখ, শিরা, ধোঁয়ার ইত্যাদির মাধ্যমে মাদক গ্রহণ করে।

প্রতিটি মাদকের সাঙ্গে প্রচণ্ড ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এটি সরাসরি মাদকাসক্ত ব্যক্তির মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করে। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি যখন কোথাও চিকিৎসার জন্য যায়, তখন প্রথমে তার মস্তিষ্ক থেকে মাদকের বিষক্রিয়া দূর করতে হয়। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় ডিটক্স। এটি মাদকের চিকিৎসার প্রথম ধাপ।


উইথড্রয়াল (উত্তরণ): ডিকক্সের ফলে মস্তিষ্ক মাদকের বিষক্রিয়া থেকে মুক্ত হয়। কিন্তু মাদকমুক্ত হওয়ার পর মাদকাসক্ত ব্যক্তির মধ্যে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়। তার খারাপ লাগতে থাকে। নিজের ভেতর অস্বস্তি কাজ করে। কোনো কিছুই ভালো লাগতে চায় না।

ওষুধ ও অন্যান্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খারাপ লাগা ও অস্বস্তি থেকে তাকে ভালো করা হয়। ভালো করার এই প্রক্রিয়াকে উইথড্রয়াল বা উত্তরণ সময় বলা হয়।
রিহ্যাব (পুনর্বাসন): একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি মাদক গ্রহণের আগে যে অবস্থায় ছিল, সে অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়াকে রিহ্যাব বা পুনর্বাসন বলে। পুনর্বাসনের জন্য ওষুধ খেতে হয়। কিছু প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়।

এভাবে চিকিৎসার মাধ্যমে একজন মাদকসেবীকে আগের অবস্থায় ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া হলো রিহ্যাব বা পুনর্বাসন। নিরাময়কেন্দ্র বা হাসপাতালে পুনর্বাসনের জন্য প্রস্তুত করে দেয়। বাসা বা বাড়িতে ফিরে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই বছর চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নিয়ম মেনে চলতে পারলে পরিপূর্ণ পুনর্বাসন হয়েছে বলা যাবে।
এই তিন পদ্ধতি মাধ্যমে মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসা করা হয়। ভালো হতে কারও সময় কম লাগে, কারও বেশি।

প্রত্যেক রোগীর আলাদা আলাদা চিকিৎসা-পদ্ধতি। একজন রোগী যেভাবে ভালো হয়, সেই নিয়ম হুবহু আরেক জনের ক্ষেত্রে কাজে লাগে না। প্রত্যেকের চিকিৎসা-পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন। মূলত মাদকাসক্ত রোগীর চিকিৎসা করা হয় বায়ো সাইকো সোশ্যাল পদ্ধতিতে। বায়ো হচ্ছে ওষুধ প্রয়োগ।

সাইকো মানসিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার বিভিন্ন কাউন্সেলিং। এর মধ্যে অভিভাবকদেরও কাউন্সেলিং করা হয়। সোশ্যাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এখানে চিকিৎসক ও অভিভাবকদের করণীয় খুব বেশি থাকে না। এটি হচ্ছে সমাজের যাবতীয় অনাচার, অবক্ষয় ও অনৈতিকতা থেকে মুক্ত থাকার প্রক্রিয়া।

যদিও কাজটি খুব কঠিন। এই পদ্ধতিগুলো একসঙ্গে কাজ করলে একজন রোগী সুস্থ থাকতে পারে।
পরামর্শ দিয়েছেন যাঁরা:
তাজুল ইসলাম, অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা
আহমেদ হেলাল, সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
অভ্র দাশ ভৌমিক, সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
মেখলা সরকার, সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
ফারজানা রহমান, সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
ব্রাদার রোনাল্ড ড্রাহোজাল, নির্বাহী পরিচালক, আপন
সঞ্চালনায়: ফেরদৌস ফয়সাল, গ্রন্থণা: আশফাকুজ্জামান

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.