আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিবরে

স্নো এর সময়ে লিখা পুরানো লিখাটা আজ এখানে শেয়ার করছি। উদ্দেশ্য এমার্জেন্সি বা বিপদে এ আমরা কিভাবে অ্যালার্ট বা প্রয়োজনীয় ইকূয়েপমেন্টে সজ্জিত হতে পারি।
================================

কালকে প্রবল তুষারপাত (ওয়েদার ফোরকাষ্ট এ বলা)

সবাই যার যার ব্যাকপ্যাকে প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে পূর্ন কর। কালকে অবশ্যই পরতে হবে হেভী বুট গ্লাভস হ্যাট স্কার্ফ। স্নোর এই দেশে যাদের এখনও গাড়ী নাই (অবশ্য তা নিয়ে আমার হা হুতাশ ও নাই) দুই পা বা হন্টন যাদের ভরসা এ সতর্কবানী আসলে তাদের জন্য।

আমার মত কিছু গরীব জনগোষ্টীর জন্য। নিউ ইমিগ্র্যান্ট দের জন্য। প্রথমে ঠান্ডার ভয়াবহতা কল্পনা করাটা তাদের জন্য কিছুটা দূরহ বটে।

এ ব্যাপরে আমার নিজের প্রথম বৎসরের কানাডায় স্নোর কবলে পড়ে যে মারাত্নক দশা হয়েছে তার কথা বলি। সেদিন টিভি নিউসে ছিল কোল্ড অ্যলার্ট।

এক সানডে স্নো ইভিনিং। কাজে গিয়েছি। তাড়াহুড়ায় গ্লাভস ছাড়া বের হয়েছি। নীচে এসে আবার দৌড়ে বাসায় যাব সেই সময় ও নাই। সানডে বাস সার্ভিস থাকে উইক এন্ড মুডে।

সানডে তে ম্যাক্সিম্যাম জায়গার বাস আধাঘন্টা পরে আসে যেখানে অন্যদিন একই বাস প্রতি পাচ মিনিট পরে আসে। সুতরাং আমার শিডিউল বাসটা যদি কোন কারনে মিস হয়ে যায় তবে ট্যাক্সি কল করা না হয় কাজে লেট হওয়া। কাজে পাচ মিনিট লেট লাঞ্চ এ বাড়তি সময় নেওয়া সব কিছু নেগেটিভ ভাবে দেখা হয়। এমপ্লয়ী রেটিং ডাউন হয়ে যায়। প্রতিমসে এমপ্লয়ী অফ দি মানথ হয় ।

কাজে কেউ লেট হতে চায়না। বা যে অড লেবার জব করে প্রতিদিনের কাজে ১০০ থেকে ১২০ ডলার পায় তার জন্য ৪০ /৫০ ডলার ট্যাক্সি রেন্ট করে কাজে যাওয়ার বোকামী করতে চায়না। তাহলে সেদিনের কাজের কোন ও অর্থ ই হয়না। অবশ্য আমি সবসময় এই বোকামী গুলি করতাম বা এখন ও করি। এইজন্য আমি সবসময় মাইনাস আমার জীবনে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে।

মনে হয়না এই জীবনে কোন সফলতার দরজায় এসে পৌছতে পারব।

যাক যেটা বলছিলাম সেই ভয়াবহ স্নোর বিকালে বাসের জন্য ওয়েট করতে হয়েছিল প্রায় পয়ত্রিশ মিনিট যেটা কানাডার রেকর্ডের মত। এখানে সাধারনত সব নির্ধারিত সময়ে পৌছানো সিস্টেম। বাস স্টপে যদি লেখা থাকে ৮:২৫ এ বাস আসবে এক্সাক্ট সেইসময়ে । একমিনিট ও এদিক সেদিক হবেনা।

সেইদিন এত হেভী স্নো হচ্ছিল । রাস্তা ক্লিন করার সাথে সাথে আবার স্নোতে ফুল হয়ে যাচ্ছিল। সানডের ইভিনিং আশেপাশর দোকান বন্ধ। ট্যাক্সি ও কল করতে পারছিলামনা । বাস স্টপে পয়ত্রিশ মিনিট দাড়িয়ে বাসায় যখন আসলাম শু খুলে যখন আমার ফুট দেখলাম আমি চিৎকার দিয়ে বসে পড়লাম

পায়ের রক্তে শূ ভিতরে ভিজে গেছিল আর হাত ছিল জ্যাকেট এর পকেটে।

হাতের আঙ্গুলের ভাজে ভাজে চামড়া ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল। ওই ঘটনা থেকে ভূগৃছিলাম দুই মাস। কিছুদিন হাতে কিছু ধরতে পারিনি পা হয় গেছিল ফ্রোজেন এর মত। সিভিয়ার টনসিল ইনফেকশান হয়ে গিয়েছিল।

আমি বলতে চাচ্ছিলাম বা ক্রিয়েট করতে চাচ্ছিলাম আ্যাওয়ারনেস কিভাবে বিপর্যয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে বা কিভাবে বিপর্যয়ের মোকাবেলা করতে হবে হতে পারে সামাজিক রাজনীতিক অথবা পারিবারিক ভাবে।

ঠিকমত বলতে পারলমনা তা। তবে আমার এই আত্নবিশ্বাস আছে আমার নিজের প্রতি যেমন সামাজিক রাজনীতিকভাবে আমি দেখেছি আমরা বাঙালী যে কোন দূর্যোগ মোকাবিলা করি অনেক সাহসের সাথে। আমরা কখন ও মনোবল হারিয়ে ফেলিনা। এই আমাদের স্পিরিট।

সবশেষে আপেল মাহমুদের সুরে গাওয়া এই বিখ্যাত গানটি গাচ্ছি দেশ মাতৃকা জাতি আমাদের জনগনের উদ্দেশ্যে।



তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিবরে

আমরা সবাই নবীন মাঝি হাল ধরেছি শক্ত করে রে।

কজন এর জায়গায় পরিবর্তন করে লিখেছি সবাই।

(গীতিকার যেন কিছু মনে না করেন। )।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।